Ajker Patrika

লোডশেডিং ও খরায় বিপাকে আমনচাষিরা

আনোয়ার হোসেন, মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২২, ২০: ১২
লোডশেডিং ও খরায় বিপাকে আমনচাষিরা

বর্ষাকালে পানিতে থই থই করে খাল-বিল, নদী-নালা। কিন্তু এবার অনাবৃষ্টিতে প্রকৃতির চিরাচরিত সেই নিয়ম যেন পাল্টে গেছে। আষাঢ় শেষে শ্রাবণ পার হতে চললেও কোথাও পানির দেখা নেই। খরায় মাঠঘাট খাঁ খাঁ করছে। এতে বিপাকে পড়েছেন আমনচাষিরা। কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষক খেতে আমনের চারা রোপণ করতে পারছেন না। পুকুর ও ডোবা-নালা শুকিয়ে থাকায় পাট কেটে জাগ দেওয়া নিয়েও বিপাকে আছেন তাঁরা। 

এদিকে বৃষ্টি না থাকলেও সেচের পানিতে কৃষক আমন চাষ শুরু করবেন তারও উপায় নেই। লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিকমতো সেচযন্ত্র চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সংকট তীব্র হচ্ছে যশোরের মনিরামপুরের কৃষকদের।

মনিরামপুর উপজেলা কৃষি দপ্তর বলছে, জুনের মাঝামাঝি আমনের বীজতলা তৈরি করা হয়। জুলাইয়ের মাঝামাঝি কৃষক খেতে আমন রোপণ শুরু করেন। এ বছর ২২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় পুরোপুরি আমন চাষ শুরু হয়নি। সময়মতো চাষ শুরু করতে না পারলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কৃষক।

 বৃষ্টি না হওয়ায় শুকিয়ে আছে মাঠসরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ঢাকুরিয়া, কাশিমনগর, খেদাপাড়া, রোহিতা, ঝাঁপা, চালুয়াহাটি, শ্যামকুড়ের মাঠগুলোতে কিছু কৃষক সেচের পানিতে আমন রোপণ করেছেন। অনেকে জমি চাষ করে বৃষ্টির অপেক্ষায় ফেলে রেখেছেন। পানি কিনে আমন রোপণের ইচ্ছা থাকলেও দিনে সাত-আট ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে সেচযন্ত্রের মালিকেরা কৃষকদের জমিতে পানি দিতে পারছেন না। ফলে মৌসুম পার হতে চললেও পুরোপুরি এ উপজেলায় আমন চাষ এখনো শুরু হয়নি।

উপজেলার মামুদকাটি গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘খেতে পানি জমার মতো বৃষ্টি হচ্ছে না। পানি কিনে ১৫ কাঠায় ধান রোপণ করিছি। অন্য মাঠে একখণ্ড জমি আছে। সেখানে এখনো সেচের পানি ঢোকেনি। বৃষ্টি না হলি এবারও বোরো চাষের মতো আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পানির দাম দেওয়া লাগবে।’

রঘুনাথপুর মাঠের সেচযন্ত্রের মালিক নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘আমার স্কিমের আওতায় ২০ বিঘা জমি। তার মধ্যে নিজের সাড়ে ৩ বিঘা। প্রতিবার বৃষ্টির পানিতে আমন হয়েছে। প্রথম দিকে দুই-একটা সেচ দিতে হতো। এবার শুরু থেকে সেচের পানিতে আমন চাষ হচ্ছে। বোরো চাষের মতো ২৪ ঘণ্টা মোটর চালু রাখতে হচ্ছে। কিন্তু ঠিকমতো বিদ্যুৎ না থাকায় মোটর চালাতে পারছি না। মোটর চালু করে রাস্তায় ওঠার পর আবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।’

সেচের পানিতে আমন রোপণে ব্যস্ত কৃষকমামুদকাটি এলাকার গভীর নলকূপের মালিক আবু হানিফ বলেন, ‘৭০-৮০ বিঘা জমি আমার স্কিমে। চার দিন আগে পানি ছাড়িছি। মোটর চালু করে জমি ভেজানো শেষ না হতেই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। আবার বিদ্যুৎ আসার আগে সেই জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। এখনো কোনো মাঠে ঠিকমতো পানি ঢুকাতে পারিনি।’

আবু হানিফ বলেন, ‘৪০০ আঁটি পাট হয়েছে। হরিহর নদের গর্তের পানিতে কোনো রকম জাগ দিছি। বৃষ্টি না হলে গর্তের পানি শুকিয়ে যাবে। পাট পচবে না। পানি না পাওয়ায় আমাদের এদিকে কেউ পাট কাটতে পারছে না।’ 

মনিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ায় আমরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষক ও সেচপাম্প মালিকদের নিয়ে উঠান বৈঠক করছি। সেচপাম্প চালু করে আমন চাষ শুরুর পরামর্শ দিচ্ছি। অনেকে পাম্প চালু করেছেন। অনেকে চালুর উদ্যোগ নিচ্ছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত