Ajker Patrika

এমপিকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় যুবদল নেতাকে কোপানোর অভিযোগ

মাগুরা প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ২২: ১৪
Thumbnail image

মাগুরায় স্থানীয় এমপিকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় এক যুবদল নেতাকে কোপানোর অভিযোগ উঠেছে। আহত ওই যুবদল নেতার অভিযোগ, ফেসবুকে ‘বিনা ভোটে এমপির নির্বাচন’ নিয়ে একটি সমালোচনামূলক পোস্ট দেওয়ায় তাঁকে সরকারদলীয় সংগঠনের হামলার শিকার হয়েছেন। এ জন্য তিনি যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে দায়ী করছেন।

গতকাল রোববার রাতে মাগুরা শহরের জজকোর্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

ওই যুবদল নেতার নাম মো. মারুফ হোসেন (৪২)। বর্তমান জেলা শাখার সদস্য পদে রয়েছেন তিনি। মাগুরা জজকোর্ট এলাকায় তাঁর কম্পিউটার প্রিন্টের দোকান রয়েছে। 

ভুক্তভোগী মারুফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আশপাশেই আমার দোকান। আমি নিয়মিত দোকানেই বসি। ঘটনার সময় সেখানে এক আইনজীবীর সঙ্গে কাজ শেষে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে দোকান বন্ধ করে বের হই। নিজ দোকান থেকে বের হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে পাশের গলি থেকে অস্ত্রধারীরা আমার ওপর হামলা করে। এতে সঙ্গে থাকা সফিক নামের ওই আইনজীবী পশ্চিম দিকে কেশব মোড়ের দিকে পালিয়ে গেলেও আমাকে ওরা চাপাতি, রামদা ও ছেনি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান স্থানীয়রা। অবস্থা কিছুটা অবনতি হলে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’ 

আজ সোমবার সারা দিন চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ আছেন বলে জানান যুবদল নেতা। তাঁর মাথায় ৭-৮টি দায়ের কোপ রয়েছে। হাসপাতাল থেকে ছাড় পেতে একটু সময় লাগবে বলে জানান তিনি। 

মারধরের কারণ জানতে চাইলে মারুফ বলেন, ‘আমি সম্প্রতি আমি আমার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করি। সেখানে আমি লিখি, নির্লজ্জতার কোনো সীমা নেই। ভোট ডাকাতি করে এমপি হয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করে, সেই দুর্নীতির টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে বিজয় মিছিল। এটাই কথিত স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি।’ 

গত শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সরকারের চার বছর পূর্তিতে আয়োজন করা হয় বিজয় মিছিল। এ যুবদল নেতা সেদিনই এই পোস্টটি তাঁর ফেসবুকে দেন বলে জানা গেছে। 

যুবদল নেতা মারুফ হোসেন আরও বলেন, ‘মাগুরায় এক অনুষ্ঠানে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশে মাগুরা জেলার বিএনপির যারা গিয়েছিল, তাদের দেখে নেওয়ার কথা বলেছিলেন স্থানীয় এমপি সাইফুজ্জামান শিখর। সম্প্রতি শহরের নোমানী ময়দানে জেলা প্রশাসন আয়োজিত এ সমাবেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে একটি বক্তব্য নিয়ে একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়।’ 

তিনি বলেন, ‘ওই পত্রিকার প্রতিবেদন আমাদের জেলার বিএনপির এক নেতা শেয়ার করেছিলেন, সেখানে আমি মন্তব্য করেছিলাম। পাশাপাশি ফেসবুকে সম্প্রতি এই পোস্টের জেরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। তবে আমি যা ফেসবুকে পোস্ট করেছি, সেখানে নির্দিষ্ট কোনো এমপির নাম নেই, জায়গার নামও নেই।’ 

মারুফ হোসেন বলেন, ‘যাঁরা হামলা করেছেন, তাঁদের সুনির্দিষ্ট পরিচয় এখনো পাইনি। মাগুরায় ফিরে আইনি ব্যবস্থা নেব কি না, তা এখনই বলতে পারছি না। তবে যারা হামলা করেছে, তারা সবাই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের রাজনীতি করেন, এটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি।’ 

অভিযোগের বিষয়ে মাগুরা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. ফজলুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি তাকে স্পষ্ট চিনিও না। যদি সে হামলার শিকার হয় এবং যুবলীগ বা আমাদের ছাত্রসংগঠনকে দায়ী করে, এটা সঠিক নয়। রোববার মাগুরা জেলা শ্রমিক লীগের সম্মেলন নিয়ে আমরা ব্যস্ত ছিলাম। সুতরাং এটার সঙ্গে আমাদের কোনো যোগসূত্র হয় কীভাবে! আর আমার তো মনে হয়, নিজেদের গ্রুপিংয়ের জন্য এ হামলা হতে পারে। নিজেদের ভেতরে দলাদলিও হতে পারে। সে দায় আমাদের উপরে চাপানো ঠিক নয়।’ 

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার পরই আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। যিনি আহত হয়েছেন, তাঁর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত