Ajker Patrika

ভালো ফলনেও চিন্তায় কোটচাঁদপুরের ড্রাগনচাষিরা

কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি 
কোটচাঁদপুর পৌর শহরের কালিগঞ্জ-জীবননগর সড়কে অবস্থিত ড্রাগন বাজারটি দেশের অন্যতম বৃহৎ ফলের বাজার। এখান থেকেই সারা দেশে ফল সরবরাহ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোটচাঁদপুর পৌর শহরের কালিগঞ্জ-জীবননগর সড়কে অবস্থিত ড্রাগন বাজারটি দেশের অন্যতম বৃহৎ ফলের বাজার। এখান থেকেই সারা দেশে ফল সরবরাহ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

এবার ড্রাগনের উৎপাদন ভালো হয়েছে। তবে ফলন ভালো হলেও দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার ড্রাগনচাষিরা। বর্তমান বাজারদরে ড্রাগন বিক্রি করলে উৎপাদন খরচও টিকছে না বলে উদ্বেগে রয়েছেন তাঁরা। তবে বাজারে আমসহ অন্যান্য মৌসুমি ফলের সরবরাহ বেশি থাকায় ড্রাগনের দাম কমে গেছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম।

জানা গেছে, কোটচাঁদপুর পৌর শহরের কালিগঞ্জ-জীবননগর সড়কে অবস্থিত ড্রাগন বাজারটি দেশের অন্যতম বৃহৎ ফলের বাজার। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমের বাজার হিসেবেও পরিচিত। এখানে প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি টাকার ড্রাগন, আম, পেয়ারা, কমলালেবু, মাল্টাসহ নানা ধরনের ফল বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা এই বাজারে আসেন।

চাষিরা জানিয়েছেন, এ বছর ড্রাগনের উৎপাদন ভালো হলেও বাজারে দাম নেই। ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। কেউ কেউ ভ্রাম্যমাণভাবে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফল বিক্রি করছেন। এসব দোকানে ক্রেতার উপস্থিতিও দেখা গেছে।

বলাবাড়িয়া গ্রামের ড্রাগনচাষি জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ১২ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করি। এর মধ্যে কিছু লাইটে চাষ করা গাছ ছিল, যেগুলো থেকে মৌসুমের শুরুতে কিছু আয় হয়েছিল। কিন্তু এখন যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তাতে খরচই উঠছে না।’

তিনি বলেন, ড্রাগন যদিও বছরে তিন-চারবার কাটা যায়। তবে এ মৌসুমে ড্রাগনের উৎপাদনটা বেশি হয়। সামনের দিনে যদি বাজারে ড্রাগনের দাম বাড়ে, তাহলে চাষিরা কিছুটা হলেও এই লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবেন।

মহনপুর গ্রামের আরেক চাষি রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজারে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, দাম খুবই কম। যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তাতে লাভ দূরের কথা, খরচও উঠবে না। তাই জমিতে ড্রাগন পাকা থাকলেও কাটছি না।’

মোমিন ফল ভান্ডারের মালিক মোমিনুর রহমান বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে যাঁরা ড্রাগন বাজারে তুলেছেন, তাঁরা ভালো দাম পেয়েছেন। কিন্তু গেল এক সপ্তাহ ধরে পরিস্থিতি খারাপ। এ গ্রেডের ড্রাগন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮০-৮৫ টাকা কেজি দরে, আর বি ও সি গ্রেড বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকায়। এতে করে চাষিরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন।’

কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর উপজেলায় ৪৩৯ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৩ হেক্টর কম। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, টনিক ব্যবহারের কারণে মানুষ ড্রাগন খেতে ভয় পায়—এ ধারণা ছড়িয়ে পড়ায় কিছুটা প্রভাব পড়েছে। যদিও এ বছর টনিক ব্যবহারের হার অনেক কমেছে, তবু চাহিদা কমে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাজারে মৌসুমি ফলের আধিক্য ও ড্রাগনের আমদানি বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। তবে আশা করছি, সামনে দাম বাড়লে কৃষকেরা কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত