Ajker Patrika

বেনাপোল বন্দরে রাসায়নিক বর্জ্যের কারণে জায়গার সংকট, স্বাস্থ্যঝুঁকি

আজিজুল হক, বেনাপোল (যশোর)
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ১৩: ১৩
বেনাপোল বন্দরে রাসায়নিক বর্জ্যের কারণে জায়গার সংকট, স্বাস্থ্যঝুঁকি

বেনাপোল বন্দরে গত কয়েক বছরের ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডে সৃষ্টি হওয়া রাসায়নিক বর্জ্য দীর্ঘদিন ধরে যেখানে-সেখানে পড়ে আছে। এতে পণ্য খালাসের সময় জায়গার সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। এর পাশাপাশি বন্দর ব্যবহারকারী ও আশপাশের মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুত বর্জ্য অপসারণের চেষ্টা চলছে।

বর্তমানে বন্দরের টিটিআই ও টিটিপি মাঠ এবং ৩ নম্বর গেটসহ কয়েকটি স্থানে অগ্নিকাণ্ডে সৃষ্টি হওয়া এমন বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক বর্জ্য পড়ে আছে।

বন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশে শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত যেসব কেমিক্যাল-জাতীয় কাঁচামাল ভারত থেকে আমদানি হয়ে থাকে, তার ৭০ শতাংশ বেনাপোল বন্দর দিয়ে আসে। কিছু কিছু রাসায়নিক পণ্য এত বিপজ্জনক যে ট্রাকে বা গোডাউনে থাকা অবস্থায় আগুন ধরে যায়। গত ১০ বছরে বেনাপোল বন্দরে এ ধরনের ছোট-বড় সাতটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসব অগ্নিকাণ্ডে সৃষ্টি হয়েছে বিপুল রাসায়ণিক বর্জ্য। এগুলো নিরাপদ জায়গায় না সরিয়ে বছরের পর বছর বন্দরের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয়েছে।

বন্দর ব্যবহারকারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টি হলেই এসব বর্জ্যগলিত পানি জনবসতি এলাকায় প্রবেশ করে পুকুরের পানি দূষিত করছে। রাসায়নিকের ধুলা বাতাসে মিশে যাচ্ছে। এসব বর্জ্য অপসারণে বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ী নেতারা কর্তৃপক্ষকে জানলেও নানা অজুহাতে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

রাসায়নিক বর্জ্যের কারণে পণ্য খালাসের সময় জায়গার সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।বন্দর ব্যবহারকারী সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান বলেন, বন্দরে আমদানি পণ্যের মধ্যে বর্জ্য স্তূপ পড়ে থাকায় পণ্য খালাসে দুর্ভোগ ও জায়গার সংকট তৈরি হচ্ছে। বারবার বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

বন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকা বড় আঁচরা টার্মিনাল পাড়ার বাসিন্দা আশাদুজ্জামান আশা বলেন, রাসায়নিক বর্জ্য বৃষ্টির সময় এলাকায় প্রবেশ করে পানি দূষিত হচ্ছে। এতে গ্রামবাসী নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

বেনাপোল ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক (রসায়ন) প্রদীপ কুমার সরকার বলেন, রাসায়নিক বর্জ্য বাতাসে মিশে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এতে চুলকানিসহ স্কিন ক্যানসার হতে পারে।

পরিবেশবাদী সংস্থা গ্রিন ওয়ার্ল্ড এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আশিক মাহামুদ সবুজ বলেন, যত্রতত্র পড়ে থাকা কেমিক্যাল বর্জ্যে নানাভাবে মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। পরিবেশেরও ক্ষতি হতে পারে। তাই এসব বর্জ্য অপসারণ বা নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া উচিত।

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক, ট্রাফিক (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মো. রেজাউল করিম কেমিক্যাল বর্জ্য বন্দরের জায়গাসংকটের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আইনগত জটিলতার কারণে অগ্নিকাণ্ডে সৃষ্ট সব বর্জ্য সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে চিঠি দিয়ে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

কুষ্টিয়ায় গভীর রাতে বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলি, দেখে নেওয়ার হুমকি

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত