Ajker Patrika

ভূমিকম্পে ঢাবির হলগুলোতে আতঙ্ক: দুই শিক্ষার্থী অজ্ঞান, আহত অনেকে

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২: ১৮
ভূমিকম্পে ঢাবির হলগুলোতে আতঙ্ক: দুই শিক্ষার্থী অজ্ঞান, আহত অনেকে

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পড়েছে, ভেঙে পড়েছে পাঠকক্ষের দরজার গ্লাস। 

বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের ঝুঁকিপূর্ণ সিকদার মনোয়ারা ভবনেও শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ভূমিকম্পের সময় এই হলের দুজন শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়েন, আহত হন বেশ কয়েকজন। 

এ ছাড়া মাস্টারদা সূর্য সেন হলের ২৩৩ নম্বর কক্ষ থেকে লাফ দিয়েছেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মিনহাজ। মিনহাজকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে গিয়ে দেখা যায়, পাঠকক্ষের দরজার ফ্রেম ভেঙে পড়েছে। এ ছাড়া ২৪৪, ২৪৮, ৩৪৪, ৩৫১ নম্বর কক্ষসহ আরও কিছু কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে আগেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। ২৪৯ ও ৪৩৮ নম্বর কক্ষসহ আরও কিছু কক্ষে ঝুঁকি থাকায় সিলিং ফ্যান লাগানো যাচ্ছে না।

এমন অবস্থায় আজ শনিবার সকালে ভূমিকম্পে বিভিন্ন কক্ষের ভঙ্গুর স্থান থেকে পলেস্তারা খসে পড়তে শুরু করে। এতে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আতঙ্কিত একাধিক শিক্ষার্থী দোতলা থেকে লাফ দিয়েছেন। তবে কেউ গুরুতর আহত হননি।

ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষ ও সার্বিক বিষয়ে নজর রাখছেন বলে জানিয়েছেন মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান। 

মাস্টারদা সূর্য সেন হলের ২৩৩ নম্বর কক্ষ থেকে আতঙ্কে লাফ দেওয়া ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মিনহাজকে ঢামেকে ভর্তি করা হয়েছে। মাস্টারদা সূর্য সেন হলের প্রিন্সিপাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মো. আব্দুল মোতালেব জানান, ওই শিক্ষার্থী আতঙ্কে লাফ দিয়েছেন। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তাঁর পায়ে প্লাস্টার করা হয়েছে। কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে, এতে হাড় জোড়া না লাগলে সার্জারি করা লাগতে পারে। 

অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা তাড়াহুড়া করে বেরোতে গিয়ে পাঠকক্ষের দরজা ভেঙে গেছে। ভাঙা কাচে কয়েকজন ছাত্র হালকা জখম ও বিভিন্ন কক্ষ থেকে নামতে গিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। 

হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘আহত শিক্ষার্থীকে ঢামেকের অর্থোপেডিক বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। বেশ কিছু শিক্ষার্থী ছোটখাটো আঘাত পেয়েছে। তারাও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।’

বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের ঝুঁকিপূর্ণ সিকদার মনোয়ারা ভবনে শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন। সিট-সংকটের সমাধান ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিতে বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হন। দুজন শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। 

হলের একাধিক শিক্ষার্থী আজকের পত্রিকাকে জানান, ভূমিকম্প শুরু হলে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হন। দুজন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। ঘণ্টাখানেক পরে হল প্রশাসন আসে। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল আজকের পত্রিকাকে জানান, মৈত্রী হলের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে শিক্ষার্থীদের সরানোর বিষয়ে কমিটি করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে সিকদার মনোয়ারা ভবন বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেখানে কাউকে রাখা হবে না। বাকি বিষয়ে নিজ নিজ হল প্রশাসনকে কাজ করার ব্যাপারে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত