Ajker Patrika

দাবি পূরণের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন জবি শিক্ষার্থীরা, আন্দোলন সমাপ্তি ঘোষণা

জবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ মে ২০২৫, ২৩: ৪৫
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ আজ শুক্রবার সন্ধ্যার পর কাকরাইল মোড়ে এসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ আজ শুক্রবার সন্ধ্যার পর কাকরাইল মোড়ে এসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা তিন দিন আন্দোলনের পর পূরণ হয়েছে রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি। তাঁদের তিন দফা মেনে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ।

রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অনশনস্থলে সন্ধ্যায় হাজির হন ইউজিসির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের রাস্তায় রেখে আমরা থাকতে পারি না। ইউজিসি আপনাদের প্রতিষ্ঠান, যখন দরকার মনে হয় আসবেন। আমরা বসব, কথা বলব। আপনারা আর এখানে থাকবেন না প্লিজ, সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করব।’ বক্তব্য শেষ করে অনশনরত শিক্ষার্থীদের পানি খাইয়ে অনশন ভঙ্গ করান তিনি।

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন বাজেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আবাসনসংকট নিরসনে অস্থায়ী হল দ্রুত তৈরি করার এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুরু করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, প্রতিটি দাবি পূরণ হয়েছে। জুলাইয়ের ১ তারিখ যে বাজেট আসছে, সেটার প্রতিফলন দেখব। আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকারের যে দাবি ছিল, তা-ও পূরণ হয়েছে। এ মঞ্চ থেকে আরেকটা ঘোষণা দিতে চাই, দাবি পূরণের সুস্পষ্ট আশ্বাস পেয়েছি। তবে যদি এর ব্যত্যয় ঘটে, আমরা ইনশা আল্লাহ ঘরে বসে থাকব না। এরই সঙ্গে চলমান আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করা হলো।’

মো. রইছ উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমাদের চতুর্থ দাবি ছিল, আমাদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা—এই তিন দাবিতে কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে লংমার্চ করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুরে তাঁদের লংমার্চ কাকরাইলে পৌঁছালে বাধা দেয় পুলিশ। তখন বাধা পার হয়ে শিক্ষার্থীরা যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হন।

এরপর ওই দিন বেলা ২টা থেকে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁদের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও শিক্ষক ও শিক্ষার্থী যোগ দেন। এরপর থেকে টানা তিন দিন তাঁরা এ কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন। এর মধ্যে আজ জুমার নামাজের পর সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে সমাবেশ এবং বিকেল ৪টা থেকে গণ-অনশন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত