Ajker Patrika

জাবি ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে জুতার দোকানিকে মারধরের অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ মে ২০২৩, ১৯: ৪৪
জাবি ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে জুতার দোকানিকে মারধরের অভিযোগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে দোকানিকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ শনিবার আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দেন দোকান মালিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী রোমেন রায়হান। 

এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ইসলামনগর বাজারে এক জুতার দোকানে কেনাকাটার পর পালিশ করতে দেরি হওয়ায় দোকানের মালিক ও তাঁর কর্মচারীকে মারধর করা হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা যায়। 

অভিযুক্তরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৪ ব্যাচের ছাত্র ও শহীদ রফিক জাব্বার হলের আবাসিক ছাত্র সাব্বির হোসেন নাহিদ এবং পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও মওলানা ভাসানী হলের আবাসিক ছাত্র মেহেদী হাসান জয়। সাব্বির হোসেন নাহিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং মেহেদী হাসান জয় সাংগঠনিক সম্পাদক। 

অভিযোগপত্রে রোমেন রায়হান উল্লেখ করেন, ওই এলাকার তিনি ভাড়া থেকে একই বাড়ির নিচ তলায় ‘মেসমেরাইজ’ নামক একটি জুতা ও গার্মেন্টস পোশাকের ব্যবসা করেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অভিযুক্তরা তাঁর দোকানে থেকে এক জোড়া জুতা কেনেন। এ সময় দোকানের কর্মচারী মিরাজুল ইসলাম বিক্রয়কৃত জুতার জোড়াটি পালিশ করতে থাকেন। পালিশ করা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অভিযুক্তরা তাঁর দোকানের কর্মচারীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে তাঁরা তাঁকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, লাথি দিয়ে মারধর করেন। 

অভিযোগে বলা হয়, সাব্বির মিরাজুল ইসলামের অণ্ডকোষে লাথি মারেন। ওই সময় দোকানের ক্যাশে বসে থাকা তাঁর (রোমেন) বড় ভাই নিয়াজ রাসেল শেখ আটকাতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। পরে তাঁর কর্মচারীকে দোকান থেকে বের করেও মারধর করেন অভিযুক্তরা। 

একপর্যায়ে সাব্বির ও মেহেদী তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলেন এবং তাঁদের অনুমতি ছাড়া খুললে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করার ও তাঁকে (রোমেন) দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান। 

দোকান ভবনের মালিক ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মাসুদ খান বলেন, ‘জুতা পালিশ করতে দেরি হওয়ায় আমাদের সামনে কর্মচারীকে মারধর শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজে সব আছে। আমরা অশিক্ষিত মানুষেরা ভুল করতে পারি। তাই বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়ে এভাবে মারবে এটা মেনে নিতে পারছি না।’ 

ভুক্তভোগী কর্মচারী মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘উনারা জুতা কেনার পর, আমাদের দোকানের নিয়ম অনুযায়ী আমি পালিশ করতে থাকি। তাঁরা তাড়াহুড়ো শুরু করলে আমি একটু সময় লাগবে বলে তাঁদেরকে জানাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁরা আমাকে কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। আমি কান ধরে ওঠবস এবং পা ধরে মাফ চাওয়ার পরও আমাকে মারতে থাকে এবং আমার গোপনাঙ্গে জোরে লাথি মারে সাব্বির ভাই। এখন আমার সারা শরীরের ব্যথা।’ 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মেহেদী হাসান জয় বলেন, ‘জুতা কেনার পর ওই জুতার কোনো ইনটেক কপি না থাকার কারণে ওটা ওরা পালিশ করতে থাকে। তাড়াতাড়ি করতে বললে ওই কর্মচারী খারাপ ব্যবহার করে। তাছাড়া জুতা কেনার পর রসিদ না দিয়ে আমদের ভোক্তা অধিকার ক্ষুণ্ন করেছে। আমরা ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ দেব।’ 

আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল খন্দকার বলেন, ‘একটি অভিযোগ করা হয়েছে বলে শুনেছি। সেটা তদন্তের জন্য আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। থানায় গেলে পুরো ঘটনা জানতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত