Ajker Patrika

বাসে ঈদযাত্রা: মহাখালী ও সায়েদাবাদে যাত্রীর চাপ বাড়ছে, ভোগান্তি কম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৮: ০৯
Thumbnail image

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঈদের ছুটি এখনো শুরু হয়নি। তবে কয়েক দিন ধরেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে গ্রামের বাড়ি উদ্দেশে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। কয়েক দিনে বাসযাত্রীর ভিড় কম থাকলেও আজ রোববার টার্মিনালগুলোতে বেশ চাপ দেখা গেছে। পরিবহন-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই চাপ আগামী দুই দিনে আরও বেশি বাড়তে পারে। 

অন্যদিকে বাস টার্মিনালের কাউন্টারগুলোতে ভিড় থাকলেও এবারের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি নেই বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। 

আজ রোববার সকাল থেকে রাজধানীর মহাখালী টার্মিনাল বেশ ফাঁকা ছিল। তবে বেলা ১১টার পর থেকে যাত্রীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। সরেজমিন দেখা যায়, ময়মনসিংহগামী এনা ট্রান্সপোর্টের কাউন্টারে যাত্রীর ভিড় বেশি। সেই সঙ্গে একতা, আলম এশিয়াসহ কয়েকটি বাস কাউন্টারে বেশিসংখ্যক যাত্রী দেখা গেছে। 

কাউন্টারে দায়িত্বরত কর্মীরা জানান, মহাসড়কে ধীর গতির বাসের সংকট আছে। তবে সেটা খুব বেশি নয়। কিছুক্ষণ পরপরই কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের জন্য দাঁড় করানো হচ্ছে এবং তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। 
 
এনা ট্রান্সপোর্টের কাউন্টার মাস্টার অন্তর বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত তিন দিনের তুলনায় আজ যাত্রী বেশি। রাস্তায় যানজটের কারণে টার্মিনালে আমাদের বাস নেই। তাই একটু বেশি যাত্রী মনে হচ্ছে। গার্মেন্টস ছুটি হলে, তখন যাত্রীর চাপ বাড়বে।’ 

তিনি জানান, আজ ভোর সাড়ে ৪টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এনা ট্রান্সপোর্টের ৫২টি বাস ময়মনসিংহ রুটে ছেড়ে গেছে। রাস্তায় যানজট না থাকলে আরও বেশি যেতো। কোনো বাসই খালি যাচ্ছে না। 

পরিবার নিয়ে ময়মনসিংহে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে যাচ্ছেন শামীম হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটা ছুটি আগাম নিয়ে ঈদে বাড়িতে যাচ্ছি। ঢাকা থেকে কোনো ঝামেলা পাচ্ছি না, ভোগান্তি নেই বললেই চলে। এখন হাইওয়েতে বড় কোনো যানজট না হলেই হয়।’ 

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী তানহা আলম বলেন, ‘টাঙ্গাইল যাচ্ছি। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদের ছুটিটা কাটাব। এবার খুব ভালোভাবে বাড়ি যেতে পারছি। মহাখালীতে কোনো অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে না।’ 

পরিবার নিয়ে বগুড়া যাচ্ছেন আশরাফুল আলম রাসেল। তিনি ও তাঁর স্ত্রী নরসিংদীতে শিক্ষকতা করেন। তিনি বলেন, ‘সময়মতোই বাস ছাড়ছে। এবার এখনো কোনো ভোগান্তি হচ্ছে না। অনেকটা নির্বিঘ্নেই বাড়ি যেতে পারব বলে আশা করি।’ 

 ঢাকা-বগুড়া-নওগাঁ রুটে যাত্রীসেবা দেওয়া শাহ ফতেহ আলী বাসের কাউন্টার মাস্টার হান্নান বলেন, ‘যাত্রী কিছুটা বাড়লেও চাপ নেই। এখনো সবার অফিস বন্ধ হয়নি। সরকারি ছুটি শুরু হলে তখন যাত্রী বাড়বে।’ 

একই রুটে যাত্রীসেবা দেওয়া একতা পরিবহনের বুকিং মাস্টার বিপ্লব বলেন, ‘ঈদে যেমন যাত্রী চাপ থাকার কথা, তা এবার মহাখালীতে নেই। লম্বা ছুটির কারণে মানুষ আস্তে ধীরে যাতায়াত করছে।’ 

মহাখালী বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহসভাপতি মো. শওকত আলী বাবুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এবার ঈদের ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় একসঙ্গে চাপ পড়ছে না। মানুষ ধীরে ধীরে যাচ্ছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘কেউ যাতে বাড়তি ভাড়া না নেয়, সে জন্য আমরা একেবারে শুরু থেকেই কাজ করছি। আমরা প্রতিটি কাউন্টারের সামনে ভাড়ার তালিকা টানিয়ে দিয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকেও একটি তালিকা টানানো আছে।’ 
 
এ দিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে যাত্রীর ভিড় লক্ষ্য করা যায় রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালেও। গত শুক্র ও শনিবারের চেয়ে যাত্রীর চাপও বেড়েছে। 

তবে যাত্রীদের অভিযোগ—দীর্ঘ সময় নিয়ে গাড়ি ছাড়ছে। তবে সেটি অস্বীকার করেছেন, পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। 

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জগামী হিমালয় পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার সোহেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এমনিতে আধঘণ্টা পরপর আমাদের পরিবহন ছেড়ে যায়। কিন্তু ঈদযাত্রায় যাত্রী অনেক বেশি। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরপর গাড়ি ছাড়ছে।’ 

সায়েদাবাদ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা মো. শাহীনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের গাড়ি ছাড়বে পৌনে ১টায়। সাড়ে ১২টায় টিকিট নিয়েছি। এবার কোনো ঝামেলা নেই। ভালোভাবেই পরিবার নিয়ে ঈদ করতে যেতে পারছি।’ 
 
সায়েদাবাদের জনপথ মোড়ে খুলনাগামী ইমাদ পরিবহনের কাউন্টারে দেখা গেছে যাত্রীদের ভিড়। কাউন্টার ম্যানেজার আব্দুল্লাহ বলেন, ‘গত ২০ দিন আগে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছি। এখন যারা যাচ্ছেন তাদের প্রায় সবাই আগেই টিকিট নিয়েছিলেন। গাড়ির সব আসনেই যাত্রী যাচ্ছে।’ 

সায়েদাবাদ জনপথ মোড়ে শ্যামলী ও এনআর ট্রাভেলসের কাউন্টার ম্যানেজার আমান বলেন, ‘ভোর থেকে সিলেটের উদ্দেশে গাড়ি যাচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে মানুষ যেভাবে যায়, তার চেয়ে যাত্রী একটু বেশি ছিল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত