Ajker Patrika

টুংটাং শব্দে মুখরিত কামারপট্টি, ভালো বেচাকেনার আশা

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
টুংটাং শব্দে মুখরিত কামারপট্টি, ভালো বেচাকেনার আশা

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী বাজারের কামারপট্টিতে রয়েছেন শতাধিক কামার। লোহা পেটানোর টুংটাং শব্দে মুখরিত এই কামারপট্টি। মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উপলক্ষে বেড়েছে তাঁদের কর্মব্যস্ততা। রাতদিন লোহার টুকরো থেকে ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র তৈরি করছেন তাঁরা। গত বছরের চেয়ে এবার কয়েকগুণ বেশি বেচাকেনার আশা করছেন কামাররা। 

বরমী বাজারের কামার পট্টিতে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সী কামাররা লোহা থেকে তৈরি করছেন বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র। কেউ কেউ ছুরি, চাপাতি, দা ও বটিতে শান দিতে ব্যস্ত। আবার কেউ কেউ লোহার টুকরো গরম করে হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি করছেন ছুরি, চাপাতি, দা-বটি। কামারদের ঘামে ভেজা শরীরে যেন ক্লান্তি নেই। 

কামার পট্টিতে কথা হয় সুরেশ কর্মকারের সঙ্গে। তিনি জানান, লোহা পুড়িয়ে গরম করে তৈরি করা হচ্ছে গরু কাটার জন্য বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র। এক সপ্তাহ ধরে নতুন ছুরি, চাপাতি, দা, বটি ও চাকু তৈরি শুরু হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে এসব সামগ্রী তৈরি করে রাখা হচ্ছে। গত বছর ঈদুল আজহায় যা বেচাকেনা হয়েছে, এ বছর এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বেচাকেনার সম্ভাবনা দেখছেন তিনি। 

বরমীর কামার পট্টির গণেশ কর্মকার হাতুড়ি দিয়ে গরম লোহার টুকরো ওপর একের পর এক আঘাত করে যাচ্ছেন। এ কারণে লোহার টুকরোটি চওড়া হচ্ছে। দেখতে দেখতে এটি চাপাতির আকার নিতে থাকে। কিছুক্ষণ হাতুড়ি পেটানোর পর আবারও আগুনে পোড়ানো হচ্ছে। এভাবেই রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান গণেশ কর্মকার। 

গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি কামারপট্টিতে বিক্রির জন্য রাখা বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকাবাপ-দাদাদের পেশায় দুই যুগ ধরে কাজ করছেন রাজেশ কর্মকার। তিনি বলেন, ‘সারাবছর তেমন কর্মব্যস্ত থাকে না। আমরাও ঈদের জন্য অপেক্ষায় থাকি। ঈদের আয়-রোজগারের টাকায় আমাদের সারাবছরের সংসার চলে। তাই পরিশ্রমকে পরিশ্রম মনে হয় না। শরীর ভিজে গেলও মনে হয় না কষ্ট হচ্ছে। গরমের চিন্তা করে কোনো লাভ নেই।’ 

উপজেলার মাওনা, জৈনা, শ্রীপুর ও রাজাবাড়ি বাজারের কামার পট্টিতেও একই চিত্র দেখা গেছে। প্রতিটি দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ছুরি, চাপাতি, দা, বটি ও চাকু। ক্রেতারা এখনো দোকানগুলোতে তেমন ভিড় না করলেও কয়েক দিনের মধ্যে বেচাকেনা শুরু হবে বলে জানান কামাররা। 

বরমী বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গাজীপুরের অন্যতম একটি বাণিজ্য কেন্দ্র বরমী বাজার। সড়ক নদী পথের ভালো যোগাযোগ থাকায় এই হাটের সুনাম দেশব্যাপী। আর এই বাজারে রয়েছে বড় কামার পট্টি। যেখানে আছে শতাধিক কামারের দোকান। কামার পট্টিতে রাতদিন চলছে টুংটাং শব্দ। ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা। সমিতির পক্ষে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে কামারদের।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত