Ajker Patrika

রাজধানীতে ২৫০৬ গ্রেপ্তার, কারাগারে ২ হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় রাজধানীতে গত এক সপ্তাহে আড়াই হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫২ জনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

এ ছাড়া রাজধানীতে বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ও নাশকতার অভিযোগে গতকাল গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৪১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিসহ ১৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত।
গতকাল ডিএমপির সদর দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গত সাত দিনে ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ হাজার ৫০৬ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার হয়েছে ২৫২ জন। এ ছাড়া সহিংসতার ঘটনায় র‍্যাব সারা দেশে ২৯০ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ৭১ জন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বেশির ভাগ বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে গতকাল ঢাকার বিভিন্ন আদালত ১৪১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। তবে রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে আগুন দেওয়া ও হামলার অভিযোগের মামলায় শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিসহ তিনজনকে সাত দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্তা আক্তারের আদালত। অন্য বিভিন্ন মামলায় আরও ১৬ জনকে রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার আদালতের সাধারণ নিবন্ধকের দপ্তরে কর্মরত পুলিশ সদস্য আব্দুর রাজ্জাক ১৯ জনকে রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

নুরের সঙ্গে আন্দোলনের সমন্বয়কদের যোগাযোগ ছিল: পুলিশ এদিকে গতকাল দুপুরে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের গ্রেপ্তারের বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম তিন সমন্বয়কের সঙ্গে নুর, জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ অন্য নেতাদের কী আলোচনা হয়েছে, সেটা জানার চেষ্টা চলছে। 

হারুন বলেন, ‘নুরসহ আরও কিছু নেতাকে আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাঁদের দেওয়া তথ্যে আমরা জেনেছি, নুরসহ অন্য নেতাদের সঙ্গে নাহিদসহ অন্য সমন্বয়কদের আলোচনা হয়েছে। যেহেতু তাঁদের সাথে কথা হয়েছে, কী কথা হয়েছে, সেটা আমাদের জানা দরকার। সে জন্য আমরা মনে করেছি, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের সাথে অন্য নেতৃবৃন্দের, বিশেষ করে মিয়া গোলাম পরওয়ার, নুরসহ অন্য নেতৃবৃন্দের কী কথা হয়েছে, সেটা জানতে চেয়েছি।’

পুলিশ হত্যা এবং সরকারি স্থাপনায় হামলাকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘তাঁরা কোটাবিরোধী আন্দোলন করছেন। এটাকে ঘিরে জামায়াত-বিএনপি—যারা এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত নয়; তারাও যাত্রাবাড়ী শনির আখড়ায় যাকে পেয়েছে, তাকে হত্যা করেছে। সেখানে একজন পুলিশ সদস্যকে বেদম পিটিয়ে হত্যা করেছে। তারা কোটা ঘিরে যে অমানবিক কাজগুলো করেছে, পুলিশকে ঝুলিয়ে রেখে হত্যা করেছে, তাদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেতু ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় যারা আগুন দিয়েছে, হামলা করেছে, তাদের অনেককে আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করেছি, গ্রেপ্তার করেছি। যাঁরা পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করেছেন, আপনারা কোথাও পালাতে পারবেন না।’

তিন জেলায় নতুন গ্রেপ্তার ৮০ গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বাইরের তিন জেলায় নতুন করে আরও ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাঁদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরসহ জেলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৪ জনকে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপির ২০ জন নেতা-কর্মী রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা মো. ইদ্রিস আলী। এ ছাড়া পাবনায় বিএনপি-জামায়াতের ৩৩ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে পাবনার সদরে ৯ জন; সুজানগর, আমিনপুর ও ঈশ্বরদীতে ৪ জন করে; আটঘরিয়া, বেড়া ও সাঁথিয়ায় ২ জন করে; চাটমোহরে ৩ জন এবং ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া ও আতাইকুলায় ১ জন করে গ্রেপ্তার হয়েছেন। আর নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩ জনকে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত