Ajker Patrika

মারধরের বিচার না পেয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যার অভিযোগ

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
মারধরের বিচার না পেয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যার অভিযোগ

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় মিথ্যা অপবাদে মারধরের ঘটনায় বিচার না পেয়ে বিলকিস বেগম নামে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর বাবা আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছেন। 

গতকাল শনিবার রাতে ওই গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার তিল্লী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পাড় তিল্লী গ্রামে। বিলকিস বেগম তিল্লী ইউনিয়নের পাড় তিল্লী গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে আজম মিয়ার স্ত্রী। প্রায় দেড় মাস আগে থেকে বিদেশে রয়েছেন মৃতের স্বামী আজম মিয়া। 

মৃত বিলকিসের বাবা আফাজ উদ্দিন বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামি করে হত্যার প্ররোচনায় মামলা করেছেন। গতকাল রাতেই পুলিশ জিন্নাত আলী নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অপর আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছে, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ ইউনিয়নের বালুর চর গ্রামের দিনমজুর আফাজ উদ্দিনের মেয়ে বিলকিস বেগম। প্রায় পনেরো বছর আগে তিল্লী ইউনিয়নের পাড় তিল্লী গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে আজম মিয়ার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। ওই দম্পতির ১০ ও ৮ বছর বয়সী দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। দেড় মাস আগে সামান্য জমি বিক্রি করে আজম মিয়া চাকরি নিয়ে বিদেশে চলে যায়। বিলকিস বেগম দুই মেয়েকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে থাকতেন। 

বিলকিস বেগমের বাবা আফাজ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিল্লী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বারেক মোল্লার ছেলে সুমনের সঙ্গে বিলকিসের পরকীয়া সম্পর্ক আছে এমন অভিযোগ তোলা হয়। গত সোমবার এই অভিযোগে বারেক মোল্লা ও তার পরিবারের সদস্যরা বিলকিসকে বেদম মারপিট করে। গুরুতর অসুস্থ বিলকিসকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে তিল্লী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চাওয়া হয়। গত শুক্রবার ছিল বিচারের দিন। কিন্তু চেয়ারম্যান বিচারের দিন পরিবর্তন করে। এতে ক্ষোভে–দুঃখে রাতে বিলকিস গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে।’ 

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য বারেক মোল্লার মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনার পর থেকে বারেক মোল্লার পরিবারের সবাই বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপন করছেন। 

এ ব্যাপারে তিল্লী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম ধলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুক্রবার সকালে ওই গৃহবধূকে মারপিটের ঘটনায় সালিসে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। কিন্তু ভুক্তভোগী গৃহবধূর শ্বশুর আব্দুল বারেক সালিসি বৈঠকে বসতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে আমি ওই গৃহবধূকে আদালতের আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলি। পরে জানতে পারি শুক্রবার রাতে ওই গৃহবধূ মারা গেছে।’ 

সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য বিলকিস বেগমের মরদেহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত