Ajker Patrika

গুলশানে বসছে ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও শিল্পীর মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
গুলশানে বসছে ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও শিল্পীর মেলা

জামদানি, বেনারসি থেকে শুরু করে মণিপুরী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কাপড় ও হস্তশিল্প, বাঁশ, বেত ও পাটজাত পণ্য—সব মিলিয়ে ৫০টি স্টল নিয়ে গুলশান শুটিং ক্লাবে আগামীকাল বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে চতুর্থ হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০২২। মঙ্গলবার বেলা ১২টায় আগারগাঁও পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় এসএমই ফাউন্ডেশন। 

সংবাদ সম্মেলনে এবারের মেলায় প্রদর্শিত পণ্য, অংশগ্রহণকারী, দর্শনার্থী ও বিভিন্ন আয়োজন নিয়ে বিস্তারিত জানায় এসএমই ফাউন্ডেশন। এতে জানানো হয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এ মেলার আয়োজন করছে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশ (এএফডিবি)। 

গুলশানের মতো এলাকাকে মেলার জন্য বেছে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে এসএমই ফাউন্ডেশনের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, ‘দেশে-বিদেশে আমরা যারা এই ঐতিহ্যবাহী পণ্যগুলো ব্যবহার করি, তাদের কাছে পৌঁছাতে গেলে এই ধরনের জায়গাগুলোতেই মূল কারিগরদের আনতে হবে। যারা আসতে পারবেন না, তাঁদের কাজ ও কাজের প্রক্রিয়া আমরা সবার সামনে তুলে ধরব।’ তিনি বলেন, ‘জাপান, আসাম ও মালদ্বীপ থেকে ডিজাইনার আসছেন তাঁদের পণ্য প্রদর্শনের জন্য। তাঁরা আমাদের পণ্য দেখবেন, আমরা তাঁদের পণ্য দেখব। ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করবেন বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন, ডিজাইনার, শিল্পী, তাঁতিসহ ঐতিহ্যবাহী পণ্যের উদ্যোক্তাগণ।’ 

এএফডিবির সভাপতি মানতাশা আহমেদ বলেন, গুলশানের মতো এলাকায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নিয়ে এমন আয়োজনের কারণ হচ্ছে, তারা সাধারণত অন্য মেলাগুলোতে খুব একটা যান না। তাঁরা দেশের বাইরের পণ্য কিংবা অনলাইনের ওপর বেশি নির্ভরশীল। নিজেদের ঐতিহ্যকে সবার সামনে তুলে ধরতে এবং উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও আগ্রহী করে তুলতেই এমন আয়োজন। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চার দিনব্যাপী বিভিন্ন সেমিনার ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে এই মেলায়। মেলায় বয়নশিল্প প্রদর্শন, লাইভ ফ্যাশন শোর পাশাপাশি খাতভিত্তিক পণ্যের ইতিহাস নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। তথ্যচিত্রগুলোতে তুলে ধরা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী পণ্য তৈরির পেছনের কারিগরদের শ্রম ও জীবনের গল্প। এ ছাড়া চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁদের নকশা করা পণ্য ও আগত ডিজাইনারদের পণ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রেও তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। 

মেলার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের গৌরবময় ঐতিহ্য ও কৃষ্টির অংশ ঐতিহ্যবাহী তাঁতপণ্যের প্রস্তুতকারক ও শীর্ষস্থানীয় ডিজাইনারদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন, বিলুপ্তি রোধকরণ এবং সর্বোপরি দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে স্থানীয় তাঁতপণ্য প্রস্তুতকারকদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শন করা হবে শাড়ি-লুঙ্গি-গামছা, খাদি, নকশিকাঁথা, বেনারসি ও সিল্ক শাড়ি, টাঙ্গাইল শাড়ি, জামদানি শাড়ি, শতরঞ্জি, পটচিত্র, রিকশা পেইন্ট, জুয়েলারি, টেরাকোটা, পিতল, কাঁসা, শঙ্খ, মণিপুরী কাপড়, রাঙামাটির চাকমাসহ অন্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকেদের তৈরি কাপড় ও হস্তশিল্প পণ্য, পাটজাত, বাঁশ ও বেতজাত পণ্য। 

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে এ মেলা চলবে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত