নুরুল আমীন রবীন, শরীয়তপুর
সপ্তাহ দুয়েক আগেও দেড় শ মিটার দূরে থাকা পদ্মা এখন কড়া নাড়ছে জাজিরার পালেরচর ইউনিয়নের কাঠুরিয়া গ্ৰামের হামিদার দরজায়। এরই মধ্যে পদ্মায় বিলীন হয়েছে তাঁর আবাদ করা ১২ বিঘা ধানসহ কৃষি জমি। গত সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভাঙনের আতঙ্কে নৌপথে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় বসতবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছিলেন হামিদা বেগম। কিন্তু সেখানেও বাদ সাধে পদ্মার তীব্র স্রোত। আসবাবপত্রের সঙ্গে নদীতে পড়ে যায় হামিদাসহ পরিবারের সদস্যরা। পরে অন্য একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় তাদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা। তবে রক্ষা করা যায়নি নৌকায় থাকা কিছুই। চোখের সামনেই স্রোতের তোড়ে ভেসে যায় সবকিছু। খোলা আকাশের নিচে গত এক সপ্তাহ ধরে একটি ছাপরা করে কোনো রকমে মানবেতর জীবন যাপন করছে পরিবারটি।
গতকাল সোমবার দুর্গত এলাকায় গিয়ে দেখা যায় খোলা আকাশে একটি চালার নিচে রান্না করছেন হামিদা। কান্না আর আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, ‘আমাগো সবকিছু গিললা খাইয়া হালাইছে পদ্মায়। জীবনটা লইয়া বাঁচতে নৌকা লইয়া দূরে যাইতে চাইছিলাম। এইডাও আমার কপালে জুটল না। নৌকা ডুইব্বা সব গাঙ্গে তলাইয়া গেল। আমাগো অহন যাওয়ার মতন কোনো জায়গা নাই। দুই দিন আগে এখানে মন্ত্রী আইছিল। হেরা ৩০ কেজি চাউল আর ২ হাজার টাকা দিয়া গেছে।’
হামিদার মতো এমন অসংখ্য গল্প এখন চোখে পড়বে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর, পালেরচর, বড়কান্দি, বিলাসপুর ইউনিয়নের পদ্মাপাড়ের জনপদে। গেল এক সপ্তাহে নদীভাঙনের কবলে গৃহহীন হয়েছে এসব এলাকার অন্তত ১৪৫টি পরিবার। তলিয়ে গেছে ৩০০ একর কৃষিজমিসহ পুকুরের মাছ। ভাঙনের ঝুঁকিতে বসতি সরিয়ে নিচ্ছে আরও অর্ধশত পরিবার। ঝুঁকির মুখে পড়েছে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাকা সড়ক, পালেরচর বাজারসহ বহু স্থাপনা।
বর্ষার শেষ সময়ের পানি বৃদ্ধিতে আগ্রাসী হয়ে উঠেছে পদ্মা। প্রতিদিনই ভাঙছে নতুন নতুন এলাকা। গিলে খাচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি, রাস্তাঘাটসহ শত শত স্থাপনা। ভাঙনের কবলে দিশেহারা শরীয়তপুরের জাজিরার পদ্মাপারের মানুষ। জীবন বাঁচাতে এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে নদীভাঙন কবলিতরা।
পালেরচর এলাকার নদীভাঙনের শিকার হিরা মনি বলেন, ‘আমাগো বাড়ি ছিল নদীর থাইক্কা অনেক দূরে। এই পর্যন্ত তিনবার ভাঙন দিছে। নদীভাঙনে সব হারাইয়া পরের জায়গায় আশ্রয় নিছিলাম। অহন এইহানেও ভাঙন শুরু হইছে। ঘর-দুয়ার ভাইঙ্গা রাস্তার পাশে থুইয়া দিছি। অহন পর্যন্ত থাকনের মতো কোনো জায়গা পাই নাই।’
বড়কান্দি ইউনিয়নের রঞ্জন ছৈয়াল কান্দি গ্রামের আমিনুল ইসলাম সেন্টু বলেন, ‘এইবার আমাগো ইউনিয়নের সরদারকান্দি, খলিফাকান্দি, রঞ্জন ছৈয়ালের কান্দি, মিরআলি মাদবরে কান্দি, পাথালিয়াকান্দি গ্ৰামে ব্যাপক নদীভাঙন শুরু হইছে। যেকোনো সময় এই এলাকার গ্রামগুলো নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। এই গ্রামগুলোতে প্রায় ১ হাজার ২০০ পরিবার বসবাস করে। আমরা খুবই আতঙ্ক নিয়া রাইত কাটাই।’
জাজিরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোবারক আলী শিকদার জানান, ‘নদীতে অবৈধ ড্রেজারে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে নদীভাঙন বেড়েছে। নদীতীরবর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করায় নদীর গভীরতা বেড়ে গিয়ে স্রোত বইছে নদীর তীর ঘেঁষে। এ বছরের নদীভাঙনে জাজিরা উপজেলার প্রায় দেড় শ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হচ্ছে।’
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, ‘নদীভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে ৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ২৩টি প্যাকেজে জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ ছাড়া এই এলাকাকে নদীভাঙনের হাত থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা করতে একটি ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। আশা করি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ডিপিপি অনুমোদন করে ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কাজ শুরু করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সরকারের পক্ষ থেকে ভাঙনকবলিত প্রতিটি পরিবারকে ৩০ কেজি চাল ও নগদ ২ হাজার করে টাকা সহায়তা করা হয়েছে। এ ছাড়া নদীভাঙনে গৃহহীন ২৫টি পরিবারকে দুই বান্ডিল করে ঢেউটিন ও নগদ ৬ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।’
সপ্তাহ দুয়েক আগেও দেড় শ মিটার দূরে থাকা পদ্মা এখন কড়া নাড়ছে জাজিরার পালেরচর ইউনিয়নের কাঠুরিয়া গ্ৰামের হামিদার দরজায়। এরই মধ্যে পদ্মায় বিলীন হয়েছে তাঁর আবাদ করা ১২ বিঘা ধানসহ কৃষি জমি। গত সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভাঙনের আতঙ্কে নৌপথে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় বসতবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছিলেন হামিদা বেগম। কিন্তু সেখানেও বাদ সাধে পদ্মার তীব্র স্রোত। আসবাবপত্রের সঙ্গে নদীতে পড়ে যায় হামিদাসহ পরিবারের সদস্যরা। পরে অন্য একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় তাদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা। তবে রক্ষা করা যায়নি নৌকায় থাকা কিছুই। চোখের সামনেই স্রোতের তোড়ে ভেসে যায় সবকিছু। খোলা আকাশের নিচে গত এক সপ্তাহ ধরে একটি ছাপরা করে কোনো রকমে মানবেতর জীবন যাপন করছে পরিবারটি।
গতকাল সোমবার দুর্গত এলাকায় গিয়ে দেখা যায় খোলা আকাশে একটি চালার নিচে রান্না করছেন হামিদা। কান্না আর আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, ‘আমাগো সবকিছু গিললা খাইয়া হালাইছে পদ্মায়। জীবনটা লইয়া বাঁচতে নৌকা লইয়া দূরে যাইতে চাইছিলাম। এইডাও আমার কপালে জুটল না। নৌকা ডুইব্বা সব গাঙ্গে তলাইয়া গেল। আমাগো অহন যাওয়ার মতন কোনো জায়গা নাই। দুই দিন আগে এখানে মন্ত্রী আইছিল। হেরা ৩০ কেজি চাউল আর ২ হাজার টাকা দিয়া গেছে।’
হামিদার মতো এমন অসংখ্য গল্প এখন চোখে পড়বে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর, পালেরচর, বড়কান্দি, বিলাসপুর ইউনিয়নের পদ্মাপাড়ের জনপদে। গেল এক সপ্তাহে নদীভাঙনের কবলে গৃহহীন হয়েছে এসব এলাকার অন্তত ১৪৫টি পরিবার। তলিয়ে গেছে ৩০০ একর কৃষিজমিসহ পুকুরের মাছ। ভাঙনের ঝুঁকিতে বসতি সরিয়ে নিচ্ছে আরও অর্ধশত পরিবার। ঝুঁকির মুখে পড়েছে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাকা সড়ক, পালেরচর বাজারসহ বহু স্থাপনা।
বর্ষার শেষ সময়ের পানি বৃদ্ধিতে আগ্রাসী হয়ে উঠেছে পদ্মা। প্রতিদিনই ভাঙছে নতুন নতুন এলাকা। গিলে খাচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি, রাস্তাঘাটসহ শত শত স্থাপনা। ভাঙনের কবলে দিশেহারা শরীয়তপুরের জাজিরার পদ্মাপারের মানুষ। জীবন বাঁচাতে এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে নদীভাঙন কবলিতরা।
পালেরচর এলাকার নদীভাঙনের শিকার হিরা মনি বলেন, ‘আমাগো বাড়ি ছিল নদীর থাইক্কা অনেক দূরে। এই পর্যন্ত তিনবার ভাঙন দিছে। নদীভাঙনে সব হারাইয়া পরের জায়গায় আশ্রয় নিছিলাম। অহন এইহানেও ভাঙন শুরু হইছে। ঘর-দুয়ার ভাইঙ্গা রাস্তার পাশে থুইয়া দিছি। অহন পর্যন্ত থাকনের মতো কোনো জায়গা পাই নাই।’
বড়কান্দি ইউনিয়নের রঞ্জন ছৈয়াল কান্দি গ্রামের আমিনুল ইসলাম সেন্টু বলেন, ‘এইবার আমাগো ইউনিয়নের সরদারকান্দি, খলিফাকান্দি, রঞ্জন ছৈয়ালের কান্দি, মিরআলি মাদবরে কান্দি, পাথালিয়াকান্দি গ্ৰামে ব্যাপক নদীভাঙন শুরু হইছে। যেকোনো সময় এই এলাকার গ্রামগুলো নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। এই গ্রামগুলোতে প্রায় ১ হাজার ২০০ পরিবার বসবাস করে। আমরা খুবই আতঙ্ক নিয়া রাইত কাটাই।’
জাজিরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোবারক আলী শিকদার জানান, ‘নদীতে অবৈধ ড্রেজারে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে নদীভাঙন বেড়েছে। নদীতীরবর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করায় নদীর গভীরতা বেড়ে গিয়ে স্রোত বইছে নদীর তীর ঘেঁষে। এ বছরের নদীভাঙনে জাজিরা উপজেলার প্রায় দেড় শ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হচ্ছে।’
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, ‘নদীভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে ৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ২৩টি প্যাকেজে জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ ছাড়া এই এলাকাকে নদীভাঙনের হাত থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা করতে একটি ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। আশা করি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ডিপিপি অনুমোদন করে ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কাজ শুরু করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সরকারের পক্ষ থেকে ভাঙনকবলিত প্রতিটি পরিবারকে ৩০ কেজি চাল ও নগদ ২ হাজার করে টাকা সহায়তা করা হয়েছে। এ ছাড়া নদীভাঙনে গৃহহীন ২৫টি পরিবারকে দুই বান্ডিল করে ঢেউটিন ও নগদ ৬ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।’
রাজধানীর উত্তরায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এবি শামীম (১৪) নামে আরও এক শিক্ষার্থী জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছে। এ পর্যন্ত বার্ন ইনস্টিটিউট ও ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটে মোট পাঁচজন মারা গেল।
১ মিনিট আগেহৃদয়বিদারক, মর্মান্তিক, মর্মস্পর্শী। এমনই এক দুর্ঘটনা ঘটেছে গতকাল সোমবার রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে। বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনা শোকবিহ্বল করেছে পুরো দেশকে। দুপুরে ওই যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে আছড়ে পড়ে বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন...
১৬ মিনিট আগেরাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে শিশু ওমায়ের নূর আশিক। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে স্কুলটিতে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গুরুতর আহত হয় শিশুটি। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে প্রথমে উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে, পরে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়।
২৪ মিনিট আগেচট্টগ্রামের চকবাজারে শিবির-ছাত্রদল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয় বলে জানা গেছে। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে শিবির ও ছাত্রদল। মাঝখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন। তারা দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করারও চেষ্ঠা করছেন।
৩৮ মিনিট আগে