Ajker Patrika

আবারো জনপ্রতিনিধি হতে পারে আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারিরা   

কক্সবাজার প্রতিনিধি
আবারো জনপ্রতিনিধি হতে পারে আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারিরা   

রাত পোহালেই দেশের দক্ষিণের সীমান্ত উপজেলা কক্সবাজারের টেকনাফের চার ইউনিয়নের নির্বাচন। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদে অন্তত ৩৭ জন ইয়াবা কারবারি জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে আত্মস্বীকৃত ইয়াবা ব্যবসায়ী আছেন নয়জন।
 
২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীর হাতে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ আত্মসমর্পণ করে টেকনাফের ১০২ জন ইয়াবা কারবারি। এর মধ্যে এসব ইয়াবা কারবারিরা জামিনে মুক্ত হয়েছেন।

আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারির মধ্যে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের শামশুল আলম, ১ নং ওয়ার্ডের মোয়াজ্জেম হোসেন দানু, ৬ নং ওয়ার্ডের আলী আহমদ, ৭ নং ওয়ার্ডের রেজাউল করিম রেজু, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়াউর রহমান জিয়া, ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী এনামুল হক, হ্নীলা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের জামাল হোসাইন, ৮ নং ওয়ার্ডের নুরুল হুদা ও ৯ নং ওয়ার্ডে মেম্বার পদে প্রার্থী হয়েছেন আব্দুল্লাহ হাসান। এর মধ্যে সদরের চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়াউর রহমান জিয়া এবং হ্নীলার মেম্বার প্রার্থী আব্দুল্লাহ হাসান ছাড়া বাকীরা বর্তমান মেম্বার।

ভোটারদের অভিযোগ আত্মস্বীকৃত ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইয়াবা কারবারিরা জনপ্রতিনিধি হওয়ায় বিভিন্ন সময় এলাকাবাসী সেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হন। দীর্ঘদিন তাঁরা জেলে থাকায় কিংবা পলাতক থাকায় এলাকাবাসী তাঁদের কাছে পায়নি।

নির্বাচনী প্রচারণায় প্রার্থীরা একে অপরকে ইয়াবা কারবারি বলে প্রচারণা চালিয়ে এসেছেন। অনেকের অভিযোগ, ইয়াবা কারবারে অভিযুক্ত প্রার্থীরা নিজেদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে জয়ী করতে বিপুল অর্থ ব্যয় করছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার হ্নীলা, সদর, হোয়াইক্যং ও সাবরাং ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২৫ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৬৮ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৩৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
 
উপজেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যানুযায়ী, চার ইউনিয়নের ৪২টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে হোয়াইক্যং ইউনিয়নে ১১ টি, হ্নীলায় ৯ টি, টেকনাফ সদর ইউনিয়নে ১২টি ও সাবরাংয়ের ১০টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। এসব ভোট কেন্দ্রে এক লাখ ১৭ হাজার ৬১৫ জন ভোটার নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মো. বেদারুল ইসলাম বলেন, ‘আইনিভাবে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মনোনয়ন আটকানোর কোন সুযোগ নেই। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাও নেওয়া সম্ভব হয়নি।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. পারভেজ চৌধুরী বলেন, ‘আইনি বাধা না থাকায় ইয়াবা কারবারিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে যায়। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়েও আলোচনা চলছে। অবশ্যই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। রোববার কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটের সরঞ্জাম সরবরাহ, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চলে যাচ্ছেন।‘

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত