Ajker Patrika

টানা বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৫৩টি স্থানে ভূমিধস, মৃত্যু ১

কক্সবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুন ২০২৫, ২২: ০৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

টানা বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৫৩টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে মাটির দেয়ালধসে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বজ্রপাতে আহত হয়েছেন ১১ জন। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি বাড়িঘর।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইউএনএইচসিআর সাব-অফিস কক্সবাজারের যোগাযোগ সহযোগী মোশারফ হোসেন।

এতে বলা হয়েছে, পাঁচ দিন ধরে প্রবল বৃষ্টিপাতে শরণার্থী আশ্রয়শিবিরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে দুই দিনের ভারী বর্ষণে ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে ৫৩টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে বন্যা ও ঝোড়ো হাওয়ায় ১ হাজার ৪০০-এর বেশি আশ্রয়স্থল ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আজ ভোরে দেয়াল ধসে একজন প্রাণ হারিয়েছেন এবং বজ্রপাতে আহত হয়েছেন ১১ জন।

অন্তর্বর্তীকালীন ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি জুলিয়েট মুরেকেইসনি বলেন, পাহাড়ের ঢালু জায়গা, বন্যা ও অস্থায়ী আশ্রয় মিলিয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আর ঝোড়ো হাওয়া বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে তৈরি ঘরগুলোকে আরও দুর্বল করে তুলেছে।

জুলিয়েট মুরেকেইসনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে ও কমিউনাল সেন্টারগুলোতে স্থানান্তরে শরণার্থী স্বেচ্ছাসেবকেরা সহায়তা করছেন। কিন্তু শেল্টারের জন্য আরও জায়গা দরকার। আক্রান্ত পরিবারদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিতে কমিউনাল স্থাপনাগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে বর্ষার আগেই শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয়ের জন্য যথেষ্ট জায়গা ছিল না।

বিশেষ করে, মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে সুনির্দিষ্ট সহিংসতা ও হত্যার শিকার হয়ে গত কয়েক মাস এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে আগে পালিয়ে আসা তাদের আত্মীয়ের ঘরে আশ্রয় নিয়েছে।

জুলিয়েট মুরেকেইসনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকি কমাতে মানবিক সংস্থাগুলো আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেমন ত্রিপল, দড়ি, ঘুমানোর ম্যাট, পানিশোধন ট্যাবলেট ও জেরিক্যানের মতো ত্রাণসামগ্রী মজুত রাখা। প্রাথমিক চিকিৎসা ও উদ্ধার কার্যক্রমে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকেরা বিপদের সময় উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ ও চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সহায়তায় প্রস্তুত রয়েছেন।

জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস বলেন, বড় ধরনের অর্থসংকট এই প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী ও আশপাশের বাংলাদেশি জনগণ একইভাবে এমন একটি এলাকায় বাস করছে; যেখানে বন্যা, ভূমিধস, ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি সব সময় থাকে। এই দুর্যোগগুলোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটা জীবনরক্ষাকারী। সাধারণত মে মাসের আগেই বর্ষার প্রস্তুতি শুরু হয়, কিন্তু এ বছর অর্থের অভাবে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।

গোয়েন লুইস বলেন, ২০২৫ সালে মানবিক সহায়তাকারী সংস্থাগুলো প্রায় ১৪ দশমিক ৮ লাখ মানুষকে সহায়তা করতে ৯৩ দশমিক ৪ কোটি মার্কিন ডলার তহবিল চেয়েছে; যার মধ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও আশপাশের বাংলাদেশি জনগণ অন্তর্ভুক্ত। জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি আরও বলেন, বছরের মাঝপথে পৌঁছে যাওয়া সত্ত্বেও যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনায় এখনো ২০ শতাংশের কম অর্থায়ন এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত