Ajker Patrika

কক্সবাজারে বিপাকে ৩০ হাজার পর্যটক, বাস দিয়েছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক ও কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারে বিপাকে ৩০ হাজার পর্যটক, বাস দিয়েছে পুলিশ

ঢাকা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে গত বুধবার ভোরে কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন রুবেল। পরিকল্পনা ছিল শুক্রবার সকালের বাসে ঢাকা ফিরে যাবেন। তেমন প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু হঠাৎ পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আটকা পড়েছেন সবাই। এদিকে পকেটেও টান পড়েছে। বাধ্য হয়ে গতকাল বাড়ি থেকে বিকাশে টাকা আনাতে হয়েছে।

আজ দুপুরে কক্সবাজার ডলফিন মোড়ে কথা হয় পর্যটক রুবেলের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুক্রবার সকাল ৮টায়ও বাস ছিল। সে অনুযায়ী হোটেল ছেড়ে বাস স্টেশনে আসার সময় কাউন্টার ম্যানেজার কল দিয়ে জানান, বাস যাবে না। রাতে যেতে পারে। কিন্তু সেই বাস আজ পর্যন্ত যায়নি। এখন বলছে, রাতে যাবে। টাকাও শেষ। শেষ পর্যন্ত বাসা থেকে টাকা আনিয়েছি।

শুধু রুবেল নন, তাঁর মতো প্রায় ৩০ হাজার পর্যটক কক্সবাজারে আটকে পড়েছেন। অনেকেই পড়েছেন অর্থ সংকটে। কেউ কেউ অতিরিক্ত ব্যয়ে মাইক্রো ভাড়া করে ফিরছেন গন্তব্যে।

এদিকে আজ বিকাল থেকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের উদ্যোগে পর্যটকদের জন্য ছয়টি বাস চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজার পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কক্সবাজার জেলা পুলিশের সহায়তায় নিজস্ব পরিবহনে পর্যটকদের বিনা ভাড়ায় চট্টগ্রাম জেলায় পৌঁছে দেওয়া হবে। আটকে পড়া পর্যটকদের পুলিশ লাইনসে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়া হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির উদ্যোগে দুটি বাস চালু করা হতে পারে।

ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত শুক্রবার সকাল থেকে সারাদেশে অঘোষিত ধর্মঘট পালন করছে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংক লরি-প্রাইমুভার মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। শুক্রবার সকাল থেকে যাত্রীবাহী বাসও বন্ধ রেখেছেন মালিকেরা।

কক্সবাজারে পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার ফেরার জন্য বাসের টিকিট করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু বাস ছাড়ার আগমুহূর্তে জানানো হয় কোনো বাস ছাড়বে না। কখন ছাড়বে সেটিও তাঁরা বলছেন না। চাইলে টিকিটের টাকা ফেরত নিতে বলছেন তাঁরা।

অন্যদিকে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং শনিবার কক্সবাজারে পর্যটক বেশি থাকেন। কিন্তু ধর্মঘট থাকায় অনেকই বুকিং দেওয়ার পরে আর আসেননি। এতে তাঁরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে কথা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পল্লব বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি জানান, সেমিস্টার শেষ হওয়ার পরে বন্ধুর সঙ্গে কক্সবাজার ঘুরতে এসেছিলেন। শুক্রবার সকাল ১০টার বাসের ফেরার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাস ছাড়ার নাম নেই।

শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের লাবণী পয়েন্টের কাউন্টার ম্যানেজার জানান, শুক্রবার থেকে তাঁদের কোনো বাস ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে না। আর কখন যাবে সেটাও জানেন না। তাই আজ টিকিট বিক্রিও করেননি তিনি।

কাউন্টারে থাকাকালীন ম্যানেজারকে ফোন কল করেন এক যাত্রী। যাত্রীকে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের বাস যাবে না মনে হয়। বাস যখন চলবে আপনাকে জানাবো।

কক্সবাজার মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম শিকদার বলেন, করোনাভাইরাসের ঢেউ কাটিয়ে আমাদের ব্যবসার কেবল শুরু হচ্ছে, আর তখন বাস ধর্মঘট আমাদের জন্য বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। এতে দেশের বিকাশমান পর্যটন শিল্প ব্যাহত হচ্ছে। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে প্রায় ৩০ হাজার পর্যটক বাধ্য হয়ে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। এতে অনেকেই আর্থিক সংকটে পড়েছেন। এই সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

বিড়াল নির্যাতনের ঘটনায় গ্রামীণফোন ও অ্যারিস্টোফার্মা কেন আলোচনায়

বাগ্‌বিতণ্ডার মধ্যে সাম্যকে ইট ও ধারালো অস্ত্রের আঘাত করা হয়: ডিএমপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত