Ajker Patrika

অভাবের কারণে কাউকে না জানিয়েই সন্তান দত্তক দিয়েছিলেন মা

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
অভাবের কারণে কাউকে না জানিয়েই সন্তান দত্তক দিয়েছিলেন মা

পরিবারের কাউকে না জানিয়ে পরিচিত এক দম্পতির কাছে ১৩ দিন বয়সী নিজ শিশু সন্তানকে দত্তক দেন মা। এরপর বিষয়টি নিয়ে শিশুটির বাবাসহ পরিবারের সবার মনে যাতে সন্দেহের সৃষ্টি না হয় সে জন্য অপহরণের মিথ্যা নাটক সাজান জেরিন আক্তার। গতকাল বৃহস্পতিবার সাজানো অপহরণের শিকার শিশুটিকে উদ্ধারের পর এ তথ্য নিশ্চিত নিশ্চিত করেছে সীতাকুণ্ড থানা–পুলিশ।

পুলিশ বলছে, গত বুধবার অপহরণের ঘটনায় এক শিশুর বাবা মো. ইয়াছিন শেখ বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা পর থেকেই অপহৃত শিশুকে উদ্ধারে নানামুখী তৎপরতা শুরু করেন সীতাকুণ্ড থানা–পুলিশ। মামলা দায়েরের ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকার একটি বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নির্মল ত্রিপুরা ও আব্দুল্লাহ আল নোমান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নির্মল ত্রিপুরা বলেন, ‘শিশুটিকে নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকার মফিজুর রহমান ও সেলিনা বেগম দম্পতির বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে ওই দম্পতি জানিয়েছেন, এটি কোনো অপহরণের ঘটনা নয়। শিশুটির মা জেরিন আক্তার নিজেই শিশুটিকে তাদের কাছে দত্তক দিয়েছেন। এ সময় তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে শিশুটির মায়ের সামনে ওই দম্পতিকে মুখোমুখি করা হয়। এ সময় স্বেচ্ছায় শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করেন শিশুটির মা জেরিন আক্তার। তবে স্বামী ও তাঁর পরিবারের কাছ থেকে রক্ষা পেতে অপহরণ নাটক সাজান তিনি।’

শিশুটির মা জেরিন আক্তার বলেন, ‘তার প্রথম বাচ্চার বয়স ১৬ মাস। এরই মধ্যে জন্ম নেয় দ্বিতীয় বাচ্চা। একদিকে অভাবের সংসার, অন্যদিকে পরপর দুটি বাচ্চা জন্মগ্রহণ করায় প্রতিবেশীদের ব্যঙ্গাত্মক আচরণে ডিপ্রেশনে ভুগছিলাম। তাই বাধ্য হয়ে পরিচিত দম্পতির কাছে নিজ শিশু সন্তানকে দত্তক দিয়েছি।’

এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ ও পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি নিয়ে প্রথম থেকেই সন্দেহ করেছিলাম। অপহরণের ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করলেও শিশুটি উদ্ধারে তার মায়ের কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। ছেলেকে ফিরে পেতে তার বাবা বিচলিত হলেও তার মায়ের মানসিক অবস্থা ছিল স্বাভাবিক। এতে আমাদের সন্দেহ আরও ঘনীভূত হতে থাকে। ফলে আমরা শিশুটি উদ্ধারে জোরালো অনুসন্ধান শুরু করি। বৃহস্পতিবার বিকেলে শিশুটিকে নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকার একটি বাসা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।’

পুলিশ কর্মকর্তারা আরও বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটির মাকে অপ্রকৃতিস্থ বলে মনে হয়েছে তাদের। আইনি প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটিকে তার বাবার মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত বুধবার শিশুটিকে সিএনজি অটোরিকশা করে চিকিৎসকের কাছে নেওয়ার সময় সিএনজির ভেতরে দুজন যাত্রী তার শিশুসন্তানকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ দেন শিশুটির মা। এ ঘটনায় এদিন রাতেই শিশুটির বাবা মো. ইয়াছিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে অবতরণ করল প্রথম ফ্লাইট

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত