Ajker Patrika

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম

সওজের জমি দখল করে হোটেল, মাদক কারবার

  • ৪২ কিলোমিটার এলাকায় এ ধরনের হোটেল রয়েছে শতাধিক।
  • ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলে মাদক সরবরাহ।
মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা)
আপডেট : ১২ মে ২০২৫, ০৮: ৫০
চৌদ্দগ্রামের সৈয়দপুর এলাকায় মহাসড়ের পাশে হোটেল বিরতিতে ট্রাক-পিকআপসহ বিভিন্ন যান। ছবি: আজকের পত্রিকা
চৌদ্দগ্রামের সৈয়দপুর এলাকায় মহাসড়ের পাশে হোটেল বিরতিতে ট্রাক-পিকআপসহ বিভিন্ন যান। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক ও জনপদের শত কোটি টাকার জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ খাবার হোটেল। এগুলো ট্রাক হোটেল নামে পরিচিত। আর এই হোটেল ব্যবসার আড়ালে মাদকের কারবার চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম অংশে ৪২ কিলোমিটার এলাকায় এ ধরনের হোটেল রয়েছে শতাধিক। এসব হোটেল থেকে প্রতিদিন ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক লাখ টাকার মাদক সরবরাহ হচ্ছে। ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের চালকেরা এখান থেকে মাদক নেন।

সরেজমিন এবং সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার লালবাগ থেকে দত্তসার দিঘি পর্যন্ত সড়ক ও জনপদের কয়েক শ কোটি টাকার জায়গা দখল করে এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল হোটেল খুলেছে। আর এই হোটেলগুলোতে যাত্রাবিরতি করে মালপত্র বহনকারী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান।

বিশেষ করে রাতে হোটেলগুলোতে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের ভিড় লেগে থাকে কিন্তু এই হোটেলগুলোর যাত্রাবিরতিতে কিছু সংখ্যক অসাধু চালক মাদক সেবন করে। আবার এই হোটেলগুলো থেকে সীমান্তবর্তী এলাকা কাছাকাছি হওয়ায় মাদক কারবারিরা সহজে মাদক এনে হোটেলগুলোতে মজুত করে রাতের আঁধারে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে। প্রতিদিন এই হোটেলগুলো থেকে কয়েক লাখ টাকার মাদক দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হচ্ছে। আর এতে জড়িত হোটেলমালিক ও কর্মচারীরা।

গত ৮ মে মহাসড়কের লালারপোল জোনাকি হোটেল থেকে সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে বিপুল মাদকসহ চারজনকে আটক করে। এর আগে ২৭ এপ্রিল র‍্যাব মহাসড়কের নবগ্রাম এলাকায় জান্নাত হোটেলে অভিযান চালিয়ে গাঁজা, ইয়াবাসহ আরও চার মাদক কারবারিকে আটক করে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে হোটেলের মালিক ও কর্মচারী রয়েছেন।

র‍্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. মাহমুদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, চৌদ্দগ্রাম থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত খাবার হোটেলগুলোতে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানের চালক ও সহকারীদের কাছে মাদক কারবারি করে আসছিল। এর সঙ্গে হোটেলের মালিক ও ম্যানেজার সরাসরি জড়িত। চালকেরা খাবার খাওয়া এবং বিশ্রামের জন্য এই হোটেলগুলোতে বিরতি করে থাকে। এ সময় তারা হোটেলগুলোতে মাদক ক্রয় এবং সেবন করে।

সড়ক ও জনপদ বিভাগের কুমিল্লা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, সওজের জায়গা দখল করে যারা স্থাপনা নির্মাণ করেছে, আগামী কোরবানির ঈদের পর এসব স্থাপনা উচ্ছেদের কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, ‘মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম অংশের খাবার হোটেলের আড়ালে মাদক কারবারি চলে আসছে। আমরা বিভিন্ন সময় গোপন তথ্যের মাধ্যমে তাদের মাদকসহ আটক করে আসছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘হোটেলগুলোর পাশে ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় সহজে মাদক কারবারিরা সীমান্ত থেকে পাচার করে এনে এসব হোটেলে মজুত করে। আমাদের কাছে তথ্য এলে আমরা অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত