Ajker Patrika

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবি করে বিপাকে আ.লীগ নেতা, ফায়দা নিতে তৎপর প্রতিপক্ষ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ২০: ১২
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবি করে বিপাকে আ.লীগ নেতা, ফায়দা নিতে তৎপর প্রতিপক্ষ

আইন পরিবর্তন করে হলেও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিপাকে পড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা। দলীয় পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য তৎপর হয়েছে বিরোধী গ্রুপ। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে কেন্দ্রে সুপারিশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। 

গত ৩০ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবি জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার। অবশ্য চাপের মুখে পড়ে সেই স্ট্যাটাস তিনি সরিয়ে নেন। 

এদিকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত আসার আগেই সভা-সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বলে বেড়াচ্ছেন, আবদুল মোতালেব আর বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নন। 

সভাপতির এই বক্তব্যের পর আবদুল মোতালেবের দলীয় প্রতিপক্ষ সংসদ সদস্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম ফিরোজের অনুসারীরা আনিচুর রহমান নামে এক নেতাকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বলে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। এ নিয়ে দুই দিন ধরে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা। 

গতকাল শনিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে উপজেলা সদরের আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয় জনতা ভবনের সামনে আ স ম ফিরোজের অনুসারীরা শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। ওই সভায় সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ উপস্থিত ছিলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর। 

সমাবেশে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে নিয়ে আবদুল মোতালেব যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সংগঠন পরিপন্থী কাজ। এ কারণে তাঁকে (আবদুল মোতালেব) দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এখন থেকে তিনি আর বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক না।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী আলমগীর বলেন, ‘মোতালেবকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রে সুপারিশ করেছি, তাই তাঁর আর দায়িত্ব নেই। শান্তি সমাবেশে ফিরোজ ভাই বলেছিল, আনিচুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দিতে। কিন্তু আমি দিইনি। ফিরোজ ভাইকে বলেছি, কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে আপনি কমিটি নিয়ে আসেন।’ 

জেলা সভাপতির এমন বক্তব্যের বিষয়ে আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, ‘শিশুকাল থেকে এই সংগঠন করি। এ কারণেই উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, যুবলীগের সভাপতি, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলাম। পরপর তিনবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এই আওয়ামী লীগ করার কারণে বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় আমি ও আমার শিশুসন্তানের ৬৭ বছর সাজা হয়। কারাগারে থাকাকালীন আমার একমাত্র মেয়ের স্বামীকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘তবে দলও আমাকে অনেক দিয়েছে। দলের কারণেই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং বড় ছেলে হাসান মাহামুদ জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হয়েছে।’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘রাজনৈতিক বিবেচনায় ওই স্ট্যাটাস দিইনি। পরবর্তী সময় যখন বুঝেছি, এটা দেওয়া ঠিক হয়নি, তখন ওই স্ট্যাটাস মুছে ফেলেছি। এ বিষয়ে শোকজের জবাবও দিয়েছি। শুনেছি আমার বিরুদ্ধে সাংগাঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা কমিটি কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠিয়েছেন। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কমিটি কোনো নির্দেশ না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদে আছি।’ 

উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মোতালেব। এর জন্য প্রয়োজনের আইন পরিবর্তনের পরামর্শও দেন তিনি। ওই পোস্টের মন্তব্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা প্রতিক্রিয়া দেন। ঘটনার পর নেতা-কর্মীদের মধ্যে ‘বিভ্রান্তি’ দূর করতে ২ অক্টোবর আরেকটি পোস্ট দেন আবদুল মোতালেব। অবশ্য পরে দুটি পোস্টই মুছে ফেলেন। 

 ৭৮ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদ্‌রোগে ভুগছেন। গত ৯ আগস্ট থেকে দুই মাসের বেশি সময় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত