Ajker Patrika

পুকুর গিলে হাউজিং প্রকল্প

  • ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে বড় আকারের একটি পুকুর ভরাট করা হচ্ছে বালু ফেলে।
  • খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভরাটকাজ বন্ধ করে দিয়েছে বিসিসি কর্তৃপক্ষ।
খান রফিক, বরিশাল 
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭: ৩৩
কীর্তনখোলা নদী থেকে পাইপলাইনে বালু এনে ভরাট করা হচ্ছে বরিশাল নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের খ্রিষ্টানপাড়া এলাকার একটি পুকুর। এই এলাকায় গড়ে ওঠা ‘ছালাম মিয়া হাউজিং’ কর্তৃপক্ষ পুকুরটি ভরাট করছে বলে জানা গেছে। ছবিটি: আজকের পত্রিকা
কীর্তনখোলা নদী থেকে পাইপলাইনে বালু এনে ভরাট করা হচ্ছে বরিশাল নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের খ্রিষ্টানপাড়া এলাকার একটি পুকুর। এই এলাকায় গড়ে ওঠা ‘ছালাম মিয়া হাউজিং’ কর্তৃপক্ষ পুকুরটি ভরাট করছে বলে জানা গেছে। ছবিটি: আজকের পত্রিকা

বরিশাল নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়ানগরে পুকুর, জলাশয় ভরাট করে হাউজিং প্রকল্প গড়ে তোলার হিড়িক পড়েছে। সেখানকার খ্রিষ্টানপাড়াসংলগ্ন বড় আকারের একটি পুকুর বালু ফেলে ভরাট করছে ‘ছালাম মিয়া হাউজিং’ প্রকল্প। চার দিন ধরে কীর্তনখোলা নদী থেকে পাইপলাইনে বালু এনে ওই পুকুরের একাংশ ভরে ফেলা হয়েছে। খবর পেয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) কর্তৃপক্ষ গত রোববার বিকেলে পুকুর ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। তবে এলাকাবাসী জানান, আশপাশের বহু পুকুর, জলাশয়ের মতো খ্রিষ্টানপাড়ার এ পুকুরটিও রক্ষা পাবে কি না, তা নিয়ে মানুষ সন্দিহান।

সরেজমিন গত রোববার বেলা ১টার দেখা গেছে, জিয়ানগর খ্রিষ্টানপাড়ায় বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে ‘ছালাম হাউজিং প্রকল্প’। স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকায় থাকা ফসলি জমি, পুকুর, জলাশয় একটু একটু করে ভরে ওই হাউজিং প্রকল্প করা হয়েছে। এখন চোখ পড়েছে খ্রিষ্টানপাড়াসংলগ্ন সড়কের পাশের পুকুরটি। পুকুরের পশ্চিম পাশে পাইপ স্থাপন করে বালু দিয়ে একাংশ ভরাট করেছে ছালাম হাউজিং।

পুকুরের পাশের দোকানি কামাল হোসেন বলেন, ‘২০ বছর ধরে এই দোকানে বসে পুকুরটি দেখছি। গোসল ও গৃহস্থালির কাজে এ পুকুরটি ব্যবহার করে আসছেন স্থানীয়রা। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত ছালাম মিয়ার ছেলে তানু চার দিন ধরে বালু ফেলে পুকুরটি ভরছেন।’

বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁরা লোক পাঠিয়ে পুকুর ভরাট বন্ধে সংশ্লিষ্টদের নোটিশ দিয়েছেন।

খ্রিষ্টানপাড়া পরিদর্শন করেন করপোরেশনের উচ্ছেদ শাখার পরিদর্শক ইমরান রাজিব। তিনি বলেন, রোববার বেলা ১টার পর গিয়ে দেখেন ছালাম হাউজিং পাইপ বসিয়ে বালু ফেলছে পুকুরটিতে। পরে তাৎক্ষণিকভাবে পাইপ অপসারণ করে ভরাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

পরিদর্শক ইমরান আরও বলেন, ‘ছালাম হাউজিং দাবি করেছে, এটি নাল জমি। কিন্তু আমরা বলে এসেছি, সিটি করপোরেশনের অনুমতি ছাড়া এটি ভরাট করা যাবে না।’

জানতে চাইলে ছালাম মিয়া হাউজিংয়ের স্বত্বাধিকারী ওয়াহেদুর আনাম তানু জানান, পুকুর ভরা হচ্ছে কি না, তা তাঁর জানা নেই। জেনে এ বিষয়ে জানাবেন। তবে হাউজিংয়ের কেয়ারটেকার জাকির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের লোকজন এসে পাইপ খুলে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু আমরা কাগজ দেখিয়েছি যে, এটা নাল জমি। করপোরেশনের স্টাফ বলেছেন, পুকুর আর ভরলে মামলা করা হবে।’ জাকির দাবি করেন, হাউজিংয়ের রাস্তা করার জন্য পুকুরের একাংশ ভরছেন।

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর, বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তা ওই পুকুর ভরাট প্রতিরোধে গেছেন বলে জানা যায়নি। অধিদপ্তরটির পরিদর্শক বি এম রকিব গতকাল বিকেলে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অবশ্য অভিযোগ রয়েছে, বরিশালে পরিবেশ অধিদপ্তর অনেকটা গা বাঁচিয়ে চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

সৈয়দ জামিলের অভিযোগের জবাবে যা লিখলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা

এনসিপির কর্মীদের ঢাকায় আনতে সরকারের বাস রিকুইজিশন, সমালোচনার ঝড়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত