Ajker Patrika

রিমালে লন্ডভন্ড পটুয়াখালীর উপকূল, ৩ জনের মৃত্যু

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ মে ২০২৪, ১২: ২৬
রিমালে লন্ডভন্ড পটুয়াখালীর উপকূল, ৩ জনের মৃত্যু

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে পটুয়াখালীর উপকূল লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কাঁচা ও আধা পাকা ঘরবাড়ি। 

তাঁরা হলেন জেলার দুমকী উপজেলার নলদোয়ানি এলাকায় গতকাল সোমবার সকালে ঘর চাপা পড়ে মারা যাওয়া মো. জয়নাল আবেদীন হাওলাদার (৭০), গতকাল দুপুরে জেলার বাউফল পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ঘর চাপা পড়ে মারা যাওয়া করিম আলী খান (৬৫) এবং গত রোববার দুপুরে জেলার কলাপাড়া উপজেলার অনন্তপাড়া এলাকায় স্বজনদের বাঁচাতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যাওয়া মো. শরীফুল ইসলাম শরীফ (২৪)। 

ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দেবনাথ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, জেলায় ৩ হাজার ৫০০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ঘর চাপা পড়ে ও পানিতে ডুবে তিনজন মারা গেছেন।’ 

ঘূর্ণিঝড় রিমেলের প্রভাবে গতকাল সোমবার দুপুর থেকে জোয়ারের পানি বেড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ৮ থেকে ১০ ফুট ওপরে উঠেছে, যা বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। 

সরেজমিনে জানা গেছে, কলাপাড়া উপজেলার বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে লালুয়া ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া, মঞ্জুপাড়া, চর চান্দুপাড়া, হাসনাপাড়া, চন্দপাড়া, পশুরিবুনিয়া, ছোট পাঁচ নম্বর, বড় পাঁচ নম্বর ও বানাতিসহ ১০টি গ্রাম এবং জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরমোন্তাজ, চর আন্ডা, নয়ার চর, বৌবাজার, মোল্লার গ্রাম ও উত্তর চরমোন্তাজসহ ১০টি গ্রাম ও একই উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর চালিতাবুনিয়া, গরুভাঙ্গা, চিনাবুনিয়া, মরাজঙ্গিসহ পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বাড়িঘরে। 

জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে পটুয়াখালী পৌর শহরে। পটুয়াখালী শহররক্ষা বাঁধ উপচে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন রাস্তাঘাট। এতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। সিডরের পর এত পানি কখনো দেখেননি বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ ঘের ও পুকুরের মাছ পানির স্রোতে ভেসে গেছে। এতে মাছচাষিরা লাখ লাখ টাকার ক্ষতিতে পড়েছেন। ঘূর্ণিঝড় রিমেলের তাণ্ডবে এবং জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ, খেতের ফসল ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা আজ মঙ্গলবার জানা যাবে। 
 
রাঙ্গাবালীর চালিতাবুনিয়া এলাকার কৃষক মো. জুয়েল আহমেদ (৩২) বলেন, ‘সিডরের পর এমন পানি আর হয়নি। যেমন ছিল বাতাসের গতি, তেমন ছিল পানির স্রোত। সব লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঘরের ভিটেমাটি স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। শুধু ঘরটি দাঁড়িয়ে আছে। খেতের ফসল ও বেড়িবাঁধ সব শেষ। কত গাছপালা পড়েছে তার কোনো হিসাব নেই। এখন কোথায় থাকব-খাব জানি না।’ 

পটুয়াখালীর উপকূলে রিমালের প্রভাবে বইছে বাতাসবেড়িবাঁধ ভেঙে বিভিন্ন গ্রাম পানিতে থইথই করছে বলে জানান কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘ইউনিয়নে অন্তত ১০টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে ৭ হাজার মানুষ পানিবন্দী। বিধ্বস্ত এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধটি মেরামত করা জরুরি।’ 

জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘গতকাল সোমবার পর্যন্ত ৩৫০ মেট্রিক টন চাল এবং ২১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার কিংবা বুধবারের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত তালিকা পাওয়া যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

কুষ্টিয়ায় গভীর রাতে বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলি, দেখে নেওয়ার হুমকি

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত