বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আয়েশা আক্তার (২৯), গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নির্বাক। ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গুলিতে মারা যাওয়া অ্যাম্বুলেন্সচালক মো. টিটু হাওলাদারের (৩৬) স্ত্রী তিনি।
স্বামীর মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই শোকে পাথর আয়েশা। মুখে কোনো খাবার নিচ্ছেন না ঠিকমতো। মায়ের মতোই শোকে মুষড়ে গেছে ১০ বছরের মেয়ে তানজিলা আক্তার। আর চার মাসের ছোট মেয়ে তামান্না জানেই না তার বাবা চলে গেছে অজানা এক দেশে, যেখান থেকে সে আর কখনো ফিরবে না। ছয় বছরের ছেলে সায়মুন এখনো বুঝে উঠতে পারছে না তার বাবা কোথায়। তার ছোট্ট দুটি চোখ খুঁজে ফিরছে বাবাকে।
বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এক গ্রাম নীলখোলা। এই গ্রামের বাসিন্দা রিকশাচালক আব্দুর রহিম হাওলাদারে ছেলে টিটু। মা রাশেদা বেগম চার বছর আগে সাপের দংশনে মারা গেছেন। চার ভাই–বোনের মধ্যে টিটু সবার বড়। অভাবের কারণে ছোট ভাই ইমরান হোসেন রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
অপরদিকে এক বোনকে বিয়ে দিতে পারলেও আরেক বোন বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ভাইয়ের সংসারে আছেন। বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী ও তিন সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে টিটু কয়েক বছর আগে আসেন ঢাকায়। তাই টিটুর আকস্মিক মৃত্যুতে শোকে কাতর পুরো পরিবার।
শুক্রবার নিহত টিটু হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গাছগাছালিতে ভরা বাড়ির চারপাশ টিটুর মৃত্যুতে যেন নিস্তব্ধ। বাড়িতে প্রবেশের মুখেই কবর দেওয়া হয়েছে টিটুকে।
এ সময় টিটুর মামাতো ভাই রাকিব হাসান ছলছল চোখে হাত উঁচু করে দেখাতে দেখাতে বলছিলেন, ‘ওইখানে আমার ভাই শুয়ে আছেন।’ একটু দূরে ছোট্ট টিনের ঘরজুড়ে কেবল নিস্তব্ধতা। রাকিব তার মামা আব্দুর রহিমকে ঘরের ভেতর থেকে ডেকে আনলেন বারান্দায়। সাংবাদিক পরিচয় জেনে আব্দুর রহিম ফ্যালফ্যাল কেঁদে ফেললেন।
তিনি বললেন, ‘আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করত না। ঢাকায় অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে বাড়িতে আমাদের জন্য টাকা পাঠাত। এবারে আমার ছেলে ঢাকায় যাওয়ার সময় বলেছিল, বাবা ওদের (টিটুর সন্তানদের) দেখে রেখো। এই ছিল আমার ভাগ্যে? আমার বাবাকে পক্কির (পাখির) মতো গুলি করা হয়েছে। এখন আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমার নাতি–নাতনিদের এখন কে দেখবে?’ বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন আব্দুর রহিম।
টিটুর মামাতো ভাই রাকিব হাসান জানান, টিটু ঢাকায় একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালাতেন। গত ১৮ জুলাই দুপুরের খাবার খেয়ে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তার মাথায় একটি বুলেট বিদ্ধ হয়। সারা শরীরে ছিল অসংখ্য রাবার বুলেটের ক্ষত। খবর পেয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালে ছুটে যান। তারপর সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০ জুলাই রাতে বাড়িতে লাশ নিয়ে আসেন। পরে সেখানেই জানাজার পর দাফন হয়।
দুপুর গড়িয়ে গেছে। ফেরার সময় নিহত টিটুর স্ত্রী আয়েশার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি বারান্দায় আসেন। তাঁর কাঁধে ছোট্ট তামান্না তখনো গভীর ঘুমে নিমগ্ন। তাঁর বিধ্বস্ত চেহারা দেখে বোঝা গেল কতটা ঝড় বইছে জীবনের ওপর দিয়ে। মাথা নিচু করে নীরবতা ভেঙে তিনি শুধু বলছিলেন, ‘ছোট্ট তিনটি বাচ্চা নিয়ে আমি এখন কোথায় যাব, কী করব কিছুই জানি না।’ সন্তানদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ চিন্তা যেন স্বজন হারানো শোককে ম্লান করে দিয়েছে।
একই উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের সোনার বাংলা এলাকার লিটন মাতুব্বর ঢাকার বাড্ডা এলাকায় রং এর কাজ করতেন। ১৯ জুলাই দুপুরে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছিল। এ সময় লিটন রাস্তার পার হয়ে বাসায় যাচ্ছিলেন। সেখানেই গুলিবিদ্ধ হন।
তার বড় ভাই বশির মাতুব্বর বলেন, ‘২০ বছর ধরে লিটন বাড্ডা এলাকায় থাকত। সে সেখানে টাইলস এর কাজ করত। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় লিটনকে ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে পুলিশ তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরদিন তার লাশ হস্তান্তর করলে বাড়ি নিয়ে এসে দাফন করি।’
স্থানীয়রা জানান, ছয় সদস্যের পরিবারের আয়ের প্রধান ব্যক্তি ছিলেন লিটন। তাকে হারিয়ে পরিবারটির এখন দৌন্যদশা। তার উপার্জনে চলতো প্রতিবন্ধী বাবা তৈয়ব মাতুব্বরের (৭৫) চিকিৎসা। এখন তার চিকিৎসা সেবা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবারের অন্য সদস্যরা। লিটনের চার ভাই–বোন। ভাইদের মধ্যে সে সবার ছোট। বাবার চিকিৎসার কথা চিন্তা করে সে বিয়ে করেনি।
আয়েশা আক্তার (২৯), গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নির্বাক। ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গুলিতে মারা যাওয়া অ্যাম্বুলেন্সচালক মো. টিটু হাওলাদারের (৩৬) স্ত্রী তিনি।
স্বামীর মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই শোকে পাথর আয়েশা। মুখে কোনো খাবার নিচ্ছেন না ঠিকমতো। মায়ের মতোই শোকে মুষড়ে গেছে ১০ বছরের মেয়ে তানজিলা আক্তার। আর চার মাসের ছোট মেয়ে তামান্না জানেই না তার বাবা চলে গেছে অজানা এক দেশে, যেখান থেকে সে আর কখনো ফিরবে না। ছয় বছরের ছেলে সায়মুন এখনো বুঝে উঠতে পারছে না তার বাবা কোথায়। তার ছোট্ট দুটি চোখ খুঁজে ফিরছে বাবাকে।
বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এক গ্রাম নীলখোলা। এই গ্রামের বাসিন্দা রিকশাচালক আব্দুর রহিম হাওলাদারে ছেলে টিটু। মা রাশেদা বেগম চার বছর আগে সাপের দংশনে মারা গেছেন। চার ভাই–বোনের মধ্যে টিটু সবার বড়। অভাবের কারণে ছোট ভাই ইমরান হোসেন রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
অপরদিকে এক বোনকে বিয়ে দিতে পারলেও আরেক বোন বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ভাইয়ের সংসারে আছেন। বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী ও তিন সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে টিটু কয়েক বছর আগে আসেন ঢাকায়। তাই টিটুর আকস্মিক মৃত্যুতে শোকে কাতর পুরো পরিবার।
শুক্রবার নিহত টিটু হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গাছগাছালিতে ভরা বাড়ির চারপাশ টিটুর মৃত্যুতে যেন নিস্তব্ধ। বাড়িতে প্রবেশের মুখেই কবর দেওয়া হয়েছে টিটুকে।
এ সময় টিটুর মামাতো ভাই রাকিব হাসান ছলছল চোখে হাত উঁচু করে দেখাতে দেখাতে বলছিলেন, ‘ওইখানে আমার ভাই শুয়ে আছেন।’ একটু দূরে ছোট্ট টিনের ঘরজুড়ে কেবল নিস্তব্ধতা। রাকিব তার মামা আব্দুর রহিমকে ঘরের ভেতর থেকে ডেকে আনলেন বারান্দায়। সাংবাদিক পরিচয় জেনে আব্দুর রহিম ফ্যালফ্যাল কেঁদে ফেললেন।
তিনি বললেন, ‘আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করত না। ঢাকায় অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে বাড়িতে আমাদের জন্য টাকা পাঠাত। এবারে আমার ছেলে ঢাকায় যাওয়ার সময় বলেছিল, বাবা ওদের (টিটুর সন্তানদের) দেখে রেখো। এই ছিল আমার ভাগ্যে? আমার বাবাকে পক্কির (পাখির) মতো গুলি করা হয়েছে। এখন আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমার নাতি–নাতনিদের এখন কে দেখবে?’ বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন আব্দুর রহিম।
টিটুর মামাতো ভাই রাকিব হাসান জানান, টিটু ঢাকায় একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালাতেন। গত ১৮ জুলাই দুপুরের খাবার খেয়ে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তার মাথায় একটি বুলেট বিদ্ধ হয়। সারা শরীরে ছিল অসংখ্য রাবার বুলেটের ক্ষত। খবর পেয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালে ছুটে যান। তারপর সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০ জুলাই রাতে বাড়িতে লাশ নিয়ে আসেন। পরে সেখানেই জানাজার পর দাফন হয়।
দুপুর গড়িয়ে গেছে। ফেরার সময় নিহত টিটুর স্ত্রী আয়েশার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি বারান্দায় আসেন। তাঁর কাঁধে ছোট্ট তামান্না তখনো গভীর ঘুমে নিমগ্ন। তাঁর বিধ্বস্ত চেহারা দেখে বোঝা গেল কতটা ঝড় বইছে জীবনের ওপর দিয়ে। মাথা নিচু করে নীরবতা ভেঙে তিনি শুধু বলছিলেন, ‘ছোট্ট তিনটি বাচ্চা নিয়ে আমি এখন কোথায় যাব, কী করব কিছুই জানি না।’ সন্তানদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ চিন্তা যেন স্বজন হারানো শোককে ম্লান করে দিয়েছে।
একই উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের সোনার বাংলা এলাকার লিটন মাতুব্বর ঢাকার বাড্ডা এলাকায় রং এর কাজ করতেন। ১৯ জুলাই দুপুরে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছিল। এ সময় লিটন রাস্তার পার হয়ে বাসায় যাচ্ছিলেন। সেখানেই গুলিবিদ্ধ হন।
তার বড় ভাই বশির মাতুব্বর বলেন, ‘২০ বছর ধরে লিটন বাড্ডা এলাকায় থাকত। সে সেখানে টাইলস এর কাজ করত। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় লিটনকে ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে পুলিশ তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরদিন তার লাশ হস্তান্তর করলে বাড়ি নিয়ে এসে দাফন করি।’
স্থানীয়রা জানান, ছয় সদস্যের পরিবারের আয়ের প্রধান ব্যক্তি ছিলেন লিটন। তাকে হারিয়ে পরিবারটির এখন দৌন্যদশা। তার উপার্জনে চলতো প্রতিবন্ধী বাবা তৈয়ব মাতুব্বরের (৭৫) চিকিৎসা। এখন তার চিকিৎসা সেবা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবারের অন্য সদস্যরা। লিটনের চার ভাই–বোন। ভাইদের মধ্যে সে সবার ছোট। বাবার চিকিৎসার কথা চিন্তা করে সে বিয়ে করেনি।
রাজধানী ঢাকার উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে মাইলস্টান স্কুলের ওই ঘটনায় মেয়েকে আনতে গিয়ে প্রাণ হারান গাংনীর মটমুড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদের মেয়ে রজনী খাতুন (৩৭)। তবে রজনী খাতুনের মেয়ে ঝুমঝুম খাতুন...
৩ মিনিট আগেসিরাজগঞ্জের কামারখন্দে জামা কিনে না দেওয়ায় অভিমান করে খাদিজা খাতুন নামের এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খাদিজা জামতৈল ধোপাকান্দি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা খাদেম আলী মন্ডল পেশায় কৃষক।
২০ মিনিট আগেমাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের অনেকের লাশ খালি চোখে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তাই পুলিশ সেসব লাশ শনাক্তে ডিএনএ প্রোফাইল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
৩৩ মিনিট আগেবন্ধুদের সঙ্গে হাসিমুখে শ্রেণিকক্ষ ত্যাগ করার একটু পরই বিকট শব্দ শুনতে পান ফারহান হাসান। দেখতে পান, একটি বিমান তাদের স্কুল প্রাঙ্গণে বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছেন। বিবিসিকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এই ছাত্র বলেন, ‘আমার চোখের সামনে জ্বলন্ত বিমানটি এসে পড়ল।’
৪২ মিনিট আগে