Ajker Patrika

গোপালগঞ্জে চলছে কারফিউ, পরিবেশ থমথমে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১২: ২৯
গোপালগঞ্জে চলছে কারফিউ, পরিবেশ থমথমে

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদরে কারফিউ জারি করেছে জেলা প্রশাসন। বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে শুরু হওয়া কারফিউ বলবৎ থাকবে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। শহরে এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

কারফিউ সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কিছু মানুষকে জরুরি প্রয়োজনে সড়কে চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে অফিসগামী মানুষ ছাড়া বেশির ভাগ মানুষই ঘর থেকে বের হননি। সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ বা সেনাবাহিনীর তেমন কোনো টহল চোখে পড়েনি, যদিও কিছু স্থানে আনসার সদস্যদের দেখা গেছে।

একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও শহরের পরিবেশ এখনো থমথমে। গোপালগঞ্জ সদর সার্কেলের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক, তবে থমথমে। কারফিউ বলবৎ আছে। গতকাল সন্ধ্যা থেকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথ অভিযান চালাচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, গতকালের ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি।

হামলা-সংঘর্ষে চারজন নিহত, গুলিবিদ্ধ ৯ জন

গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে বুধবার দিনভর বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। সহিংসতায় চারজন নিহত এবং অন্তত নয়জন গুলিবিদ্ধ হন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

গোপালগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গোপালগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সকালে রাস্তায় পড়ে ছিল প্রতিবন্ধকতা

বৃহস্পতিবার সকালে শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, অনেক জায়গায় এখনো পড়ে আছে ইটপাটকেল, বাঁশ, ভাঙা তোরণ ও কেটে ফেলা গাছ। এগুলো যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গোপালগঞ্জ চক্ষু হাসপাতালের সামনে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে পড়ে থাকা একটি রেইনট্রি গাছ সরানোর চেষ্টা করেন স্থানীয় এক নারী, রোজিনা বেগম। তিনি বলেন, ‘সকালে হাঁটতে বেরিয়ে দেখি গাছটা রাস্তার ওপর পড়ে আছে। রাতে কেউ ফেলেছে হয়তো। সংসারের কাজে লাগবে ভেবে কয়েকটা ডাল কেটে নিচ্ছি।’

এ ছাড়া ঘোনাপাড়া মোড়ে সকাল থেকে কিছু ইজিবাইক ও মাহিন্দ্রা চলাচল করতে দেখা যায়। তবে গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট, গোপালগঞ্জ-ব্যাশপুর ও গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া-পয়সারহাট রুটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। দূরপাল্লার কিছু যানবাহন চললেও সংখ্যায় তা কম।

চেকপোস্ট নেই, টহলও সীমিত

সকাল ৮টা পর্যন্ত শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট যেমন—ঘোনাপাড়া, এলজিইডি মোড়, জেনারেল হাসপাতাল, কোর্ট চত্বর, লঞ্চঘাট ও কাঁচাবাজার এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন কোনো উপস্থিতি দেখা যায়নি। পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে কিছু গ্রাম পুলিশ ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

বেশির ভাগ দোকান বন্ধ

সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। তবে কিছু চায়ের দোকান ও রেস্তোরাঁ খুলেছে। কাঁচাবাজারের পাশে কিছু ফলের দোকানেও লোকজনের আনাগোনা দেখা গেছে।

বিজিবির চার প্লাটুন মোতায়েন

বুধবার রাতে সংঘর্ষ শুরু হলে র‍্যাব, সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় টহল জোরদার করেন। বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গোপালগঞ্জে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত