জাকির তালুকদার

এক ঘণ্টা আগেও জানতাম না অচেনা যুবতী আর আমি একই রাতে, একই সময়ে একই স্বপ্ন দেখেছি।
বেশির ভাগ স্বপ্ন মানুষ আর মনে রাখতে পারে না ঘুম ভেঙে গেলে। আর কিছু স্বপ্ন ঘুম ভাঙিয়ে মানুষকে জাগিয়ে রাখে পরের কয়েকটি দিন এবং রাত পর্যন্ত। তার মানে আর সবকিছুর মতো স্বপ্নের গুরুত্বেও অনেক তারতম্য আছে।
ফোনটা এল যখন আমি বিছানা না ছেড়ে স্বপ্নটার কথাই ভাবছি। স্ক্রিনে কোনো নাম বা নম্বর নেই। খুব অবাক হওয়ার মতো বিষয় নয়। অনেক ভিআইপি বা গোয়েন্দা সংস্থার লোকের ফোন নম্বর ওঠে না স্ক্রিনে। তাই খুব বেশি অবাক না হলেও একটু সতর্ক হয়েই রিসিভ করতে হয়। কণ্ঠে যেন ঘুমের আমেজ না বোঝা যায়। মোটামুটি স্বাভাবিক কণ্ঠ, তবে সর্দি-লাগলে যেমন ভারী শোনায়, শেষের অক্ষরটির উচ্চারণ অস্পষ্ট হয়ে যায়, ঠিক সে রকম মনে হলো।
হ্যালো বলল না, কোনো সম্ভাষণ করল না, আমি রিসিভ বাটন চাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বলল—মেয়েটির ফোন নম্বর বলছি শুনুন।
বললাম—একটু হোল্ড করুন। কাগজ-কলম নিয়ে আসি। লিখে রাখতে হবে। নইলে এগারোটা ডিজিট মনে রাখতে পারব না।
উত্তর এল—ভুলবেন না।
মানে? আপনি কি আমাকে নম্বরটি টেক্সট করে পাঠাবেন?
তারও দরকার নেই।
নম্বরটা বলা হলো আমাকে। তারপর সেই কণ্ঠ খুব আকুতি মিশিয়ে বলল—মনে রাখবেন আজ সূর্যাস্তের মধ্যেই আপনাদের দুজনকে করতে হবে কাজটি। নইলে কিন্তু সমূহ বিপদ! কোনো দ্বিধা রাখবেন না, প্লিজ। মনে কোনো সন্দেহ রাখবেন না। পৃথিবীর অস্তিত্ব নির্ভর করছে আপনাদের ওপর।
তারপর মোবাইল নীরব।
তবে একটু পরেই মেয়েটির ফোন।
আমার নাম জাহরা।
জানি।
তার মানে আপনিও রাতে সেই একই স্বপ্ন দেখেছেন?
একই স্বপ্ন কি না, জানি না। তবে একটি স্বপ্ন দেখেছি।
বুঝেছি। একই স্বপ্ন দেখেছি আমরা।
কীভাবে বুঝলেন?
উত্তর না দিয়ে প্রশ্ন আসে—আমার মোবাইল নম্বরটি বলুন তো?
আমি একমুহূর্ত না থেমে এগারোটি ডিজিট বলে যাই। নিজেই অবাক হই স্মৃতি আমার এত ঝকঝকে হলো কেমন করে! একবার শুনেই মুখস্থ হয়ে গেছে নম্বর!
মেয়েটি বলে—আর কোনো সন্দেহ নেই। আমি তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়ব পনেরো মিনিটের মধ্যে। বলুন কোথায় দেখা হবে আমাদের?
আমি বলি—দাঁড়ান, দাঁড়ান! স্বপ্নটা তো নিছক স্বপ্নই হতে পারে।
তা পারে। কিন্তু যদি সত্যি হয়ে থাকে? তাহলে কাজটা না করলে যে পৃথিবী বাঁচবে না! এত বড় রিস্ক আমরা নেব?
এবার সত্যিই আমার ভেতরটা কেঁপে ওঠে। তবু বলি—কিন্তু পৃথিবীতে আট শ কোটি মানুষ থাকতে আমাদের দুজনকেই কেন বেছে নেওয়া হলো? কী আছে আমাদের মধ্যে?
সেগুলো পরে ভাবা যাবে। আপনি বেরিয়ে আসুন।
আমি ঈষৎ বিরক্তি প্রকাশ করি—আপনি কিন্তু আমাকে জোর করছেন!
জাহরা এ কথায় পাল্টা বিরক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায় না। বলে, আমাকে ফোনে সেই কণ্ঠ এটা করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। বলেছে, আপনি নিজে থেকে আমাকে ফোন না-ও করতে পারেন। কারণ মেয়েদের কাছে ছোট হতে আপনার খুব অনিচ্ছা বলেই আপনি এখন পর্যন্ত প্রেমহীন। আপনি আগ বাড়িয়ে কোনো মেয়েকে ফোন করবেন না হয়তো। সে কারণেই উদ্যোগী আমাকেই হতে হয়েছে।
একটু চুপ থেকে বলি—আমি বেরোচ্ছি। আপনিই বলুন কোথায় দেখা হবে আমাদের?
পাবলিক লাইব্রেরির গেটে আসুন।
দেখার সঙ্গে সঙ্গেই চিনতে পারলাম জাহরাকে। জাহরাও আমাকে। কে যে চেনাল কে জানে! আমার চেহারা নিতান্তই সাধারণ। ভিড়ের মধ্যে আলাদা করে চোখে পড়ার মতো নয়। আর জাহরাকেও আমি আগে কোনো দিন দেখেছি বলে মনে পড়ে না। উদ্বিগ্ন সুন্দর জাহরা। তবু চিনলাম।
জাহরা কাছে এসে দাঁড়াল। সোজাসুজি চলে এল কাজের কথায়—কোথায় যাব আমরা?
এবার তার দুই গালে একটু লালিমা। উদ্বেগের সঙ্গে লজ্জার মিশেল—কোথায় গিয়ে কাজটা...মানে ওইটা...মানে...কাজটা করব আমরা?
আমি তো জানি না।
আপনার বাসায়?
কথা যত এগোচ্ছে জাহরা তত লাল হয়ে উঠছে লজ্জায়।
সম্ভব না। মা আছে, রিটায়ার্ড বাবা প্রায় সব সময় বাসাতেই থাকেন, বড় ভাইয়ের বউ-ছেলে-মেয়ে আছে। আপনার বাসার কী অবস্থা?
জাহরা বলে—একই।
আমি একটু শব্দ করে হাসি—আমাদের কোনো ‘লিটনের ফ্ল্যাট’ নেই।
সে-ও হেসে ফেলে—আমরা ব্যাকডেটেড। তবু আমাদের ওপরই কেন যে পড়ল এই কাজের ভার! চলেন আমরা বরং পার্ক, উদ্যানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখি। কোথাও না কোথাও সুযোগ পেয়ে যাব।
কাজ। মানে পরস্পরকে চুম্বন করা। মাত্র একবার। স্বপ্নে দেখেছি পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হলে আমাদের দুজনকে মাত্র একবার পরস্পরকে নিবিড় চুম্বন করতে হবে। এমন চুম্বন যখন দুজন পৃথিবী ভুলে যাবে। আমাকে কেন বেছে নেওয়া হলো? কারণ আমি আজ পর্যন্ত কোনো নারীর ঠোঁটে চুম্বন করিনি। জাহরাকেও সেই একই কারণে বেছে নেওয়া হয়েছে। এটি আমাদের দুজনেরই গোপন আফসোসের জায়গা। অন্তত আমার। কিন্তু সেটিই হলো আজ আমাদের যোগ্যতা।
আমি বলি—দাঁড়ান। জায়গা খুঁজে পেলেও আমি কিন্তু প্রেমহীন চুম্বন করতে রাজি নই। আমাদের মধ্যে প্রেম তৈরি হয়নি। এত তাড়াতাড়ি তা তৈরির সুযোগও নেই।
জাহরা একটু ঝাঁজালো কণ্ঠে বলে—সে সমস্যা তো আমারও। প্রেমহীন চুম্বন চাই না, স্পর্শ চাই না বলেই তো আমার ঠোঁট এখনো ভার্জিন।
চলেন, জায়গা খুঁজি। যদি এই সময়ের মধ্যে মনে প্রেমের অনুভূতি না তৈরি হয়, তাহলে কাজটা না করেই ফিরে যাব যে যার ঘরে।
আমরা পার্ক বা উদ্যানে নির্জন জায়গার সন্ধানে বেরিয়ে পড়ি। রিকশায়, সিএনজিতে, হেঁটে ঘুরতে থাকি শহরের এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত। কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়, দুপুর পেরিয়ে বিকেল হয়, আমরা একটি পবিত্র চুম্বনের জন্য কোনো নির্জন স্থান পাই না। তখন আমাদের উদ্বেগ বাড়তে থাকে। পেটে হয়তো খিধে। কিন্তু আমরা নিজেদের হাতের বোতলের পানিতে মাঝে মাঝে চুমুক দেওয়া ছাড়া অন্য খাবারের জন্য সময় নষ্ট করিনি। কোনো জায়গা না পেয়ে আমরা গুগল সার্চ দিই। শহরের আর কোনো পার্ক বা উদ্যান বাকি আছে কি না, খুঁজি। না নেই। তখন আমাদের দুজনের দিশেহারা অবস্থা। জাহরার চোখ-মুখ হতাশায় আচ্ছন্ন। আমি মরিয়া হয়ে একটা সিএনজি ডাকি। উঠে বসে বলি, সোজা উত্তরে যেতে। সিএনজি চলে আর আমরা বারবার সূর্যের দিকে তাকাই। সূর্য যখন প্রায় পশ্চিমের কাছাকাছি, তখন আমরা শহর ছাড়িয়ে চলে এসেছি শহরতলিতে। হঠাৎ রাস্তা থেকে একটু দূরে একটা নিঃসঙ্গ ঘর চোখে পড়ে আমার। দূর থেকেও বোঝা যায় ঘরটি জীর্ণ। আমি প্রায় চিৎকার করে সিএনজিকে থামতে বলি। মিটারে কত টাকা উঠেছে জিজ্ঞেস না করে এক হাজার টাকার নোট ড্রাইভারের হাতে গুঁজে দিয়ে জাহরাকে বলি—তাড়াতাড়ি নামেন।
তার হাত ধরে প্রায় ছুটতে থাকি নিঃসঙ্গ ঘরটির দিকে। মনের মধ্যে শঙ্কা। ওখানেও যদি মানুষ থাকে!
ধাক্কা দিতেই নড়বড়ে দরজা খুলে যায়। মনের মধ্যে স্বস্তির বাতাস অনুভব করি। ঘরে কোনো লোক নেই। ভেতরে পা রাখতে গিয়ে জাহরার হাতের টানে থমকে যাই আমি। একটু বিরক্ত হয়েই বলি—কী হলো?
জাহরা ঘরের মেঝের দিকে আঙুল নির্দেশ করে—মেঝেতে অন্তত আট-দশটি সাপ।
এখন!
সূর্যের দিকে তাকাই। অল্পক্ষণের মধ্যেই ডুবে যাবে। আমাদের আর কোনো সুযোগ নেই। কী যে হয়, আমি জাহরাকে হাত ধরে টানি—চলো ঘরের মধ্যে চলো! যা হয় হবে। সাপ কামড়ালে কামড়াবে। কিন্তু আমরা কাজটা এখানেই শেষ করব। আমরা মরলেও পৃথিবীটা বাঁচবে।
জাহরা আমার চোখের দিকে তাকায়। বলে—আমাকে জড়িয়ে ধরো।
আমরা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে সাপগুলোর পাশে পা রাখি। অবাক হয়ে দেখি ওরা আমাদের দেখে ফণা তুলে তেড়ে না এসে সড়াৎ সড়াৎ করে পাশ কেটে বেরিয়ে যাচ্ছে দরজা দিয়ে বাইরে।
জাহরা আছড়ে পড়ে আমার বুকে—ওগো, প্রেমের এমন শক্তি আগে কোনো দিন ভাবিনি।
আমাদের দুই জোড়া ঠোঁট তখন পরস্পরের মধ্যে হারিয়ে গেছে।
পৃথিবী বাঁচবে। বেঁচে থাকবে। কেননা প্রেম অন্তরিক্ষ থেকে নেমে এসেছে মানব-মানবীর বুকে।

এক ঘণ্টা আগেও জানতাম না অচেনা যুবতী আর আমি একই রাতে, একই সময়ে একই স্বপ্ন দেখেছি।
বেশির ভাগ স্বপ্ন মানুষ আর মনে রাখতে পারে না ঘুম ভেঙে গেলে। আর কিছু স্বপ্ন ঘুম ভাঙিয়ে মানুষকে জাগিয়ে রাখে পরের কয়েকটি দিন এবং রাত পর্যন্ত। তার মানে আর সবকিছুর মতো স্বপ্নের গুরুত্বেও অনেক তারতম্য আছে।
ফোনটা এল যখন আমি বিছানা না ছেড়ে স্বপ্নটার কথাই ভাবছি। স্ক্রিনে কোনো নাম বা নম্বর নেই। খুব অবাক হওয়ার মতো বিষয় নয়। অনেক ভিআইপি বা গোয়েন্দা সংস্থার লোকের ফোন নম্বর ওঠে না স্ক্রিনে। তাই খুব বেশি অবাক না হলেও একটু সতর্ক হয়েই রিসিভ করতে হয়। কণ্ঠে যেন ঘুমের আমেজ না বোঝা যায়। মোটামুটি স্বাভাবিক কণ্ঠ, তবে সর্দি-লাগলে যেমন ভারী শোনায়, শেষের অক্ষরটির উচ্চারণ অস্পষ্ট হয়ে যায়, ঠিক সে রকম মনে হলো।
হ্যালো বলল না, কোনো সম্ভাষণ করল না, আমি রিসিভ বাটন চাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বলল—মেয়েটির ফোন নম্বর বলছি শুনুন।
বললাম—একটু হোল্ড করুন। কাগজ-কলম নিয়ে আসি। লিখে রাখতে হবে। নইলে এগারোটা ডিজিট মনে রাখতে পারব না।
উত্তর এল—ভুলবেন না।
মানে? আপনি কি আমাকে নম্বরটি টেক্সট করে পাঠাবেন?
তারও দরকার নেই।
নম্বরটা বলা হলো আমাকে। তারপর সেই কণ্ঠ খুব আকুতি মিশিয়ে বলল—মনে রাখবেন আজ সূর্যাস্তের মধ্যেই আপনাদের দুজনকে করতে হবে কাজটি। নইলে কিন্তু সমূহ বিপদ! কোনো দ্বিধা রাখবেন না, প্লিজ। মনে কোনো সন্দেহ রাখবেন না। পৃথিবীর অস্তিত্ব নির্ভর করছে আপনাদের ওপর।
তারপর মোবাইল নীরব।
তবে একটু পরেই মেয়েটির ফোন।
আমার নাম জাহরা।
জানি।
তার মানে আপনিও রাতে সেই একই স্বপ্ন দেখেছেন?
একই স্বপ্ন কি না, জানি না। তবে একটি স্বপ্ন দেখেছি।
বুঝেছি। একই স্বপ্ন দেখেছি আমরা।
কীভাবে বুঝলেন?
উত্তর না দিয়ে প্রশ্ন আসে—আমার মোবাইল নম্বরটি বলুন তো?
আমি একমুহূর্ত না থেমে এগারোটি ডিজিট বলে যাই। নিজেই অবাক হই স্মৃতি আমার এত ঝকঝকে হলো কেমন করে! একবার শুনেই মুখস্থ হয়ে গেছে নম্বর!
মেয়েটি বলে—আর কোনো সন্দেহ নেই। আমি তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়ব পনেরো মিনিটের মধ্যে। বলুন কোথায় দেখা হবে আমাদের?
আমি বলি—দাঁড়ান, দাঁড়ান! স্বপ্নটা তো নিছক স্বপ্নই হতে পারে।
তা পারে। কিন্তু যদি সত্যি হয়ে থাকে? তাহলে কাজটা না করলে যে পৃথিবী বাঁচবে না! এত বড় রিস্ক আমরা নেব?
এবার সত্যিই আমার ভেতরটা কেঁপে ওঠে। তবু বলি—কিন্তু পৃথিবীতে আট শ কোটি মানুষ থাকতে আমাদের দুজনকেই কেন বেছে নেওয়া হলো? কী আছে আমাদের মধ্যে?
সেগুলো পরে ভাবা যাবে। আপনি বেরিয়ে আসুন।
আমি ঈষৎ বিরক্তি প্রকাশ করি—আপনি কিন্তু আমাকে জোর করছেন!
জাহরা এ কথায় পাল্টা বিরক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায় না। বলে, আমাকে ফোনে সেই কণ্ঠ এটা করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। বলেছে, আপনি নিজে থেকে আমাকে ফোন না-ও করতে পারেন। কারণ মেয়েদের কাছে ছোট হতে আপনার খুব অনিচ্ছা বলেই আপনি এখন পর্যন্ত প্রেমহীন। আপনি আগ বাড়িয়ে কোনো মেয়েকে ফোন করবেন না হয়তো। সে কারণেই উদ্যোগী আমাকেই হতে হয়েছে।
একটু চুপ থেকে বলি—আমি বেরোচ্ছি। আপনিই বলুন কোথায় দেখা হবে আমাদের?
পাবলিক লাইব্রেরির গেটে আসুন।
দেখার সঙ্গে সঙ্গেই চিনতে পারলাম জাহরাকে। জাহরাও আমাকে। কে যে চেনাল কে জানে! আমার চেহারা নিতান্তই সাধারণ। ভিড়ের মধ্যে আলাদা করে চোখে পড়ার মতো নয়। আর জাহরাকেও আমি আগে কোনো দিন দেখেছি বলে মনে পড়ে না। উদ্বিগ্ন সুন্দর জাহরা। তবু চিনলাম।
জাহরা কাছে এসে দাঁড়াল। সোজাসুজি চলে এল কাজের কথায়—কোথায় যাব আমরা?
এবার তার দুই গালে একটু লালিমা। উদ্বেগের সঙ্গে লজ্জার মিশেল—কোথায় গিয়ে কাজটা...মানে ওইটা...মানে...কাজটা করব আমরা?
আমি তো জানি না।
আপনার বাসায়?
কথা যত এগোচ্ছে জাহরা তত লাল হয়ে উঠছে লজ্জায়।
সম্ভব না। মা আছে, রিটায়ার্ড বাবা প্রায় সব সময় বাসাতেই থাকেন, বড় ভাইয়ের বউ-ছেলে-মেয়ে আছে। আপনার বাসার কী অবস্থা?
জাহরা বলে—একই।
আমি একটু শব্দ করে হাসি—আমাদের কোনো ‘লিটনের ফ্ল্যাট’ নেই।
সে-ও হেসে ফেলে—আমরা ব্যাকডেটেড। তবু আমাদের ওপরই কেন যে পড়ল এই কাজের ভার! চলেন আমরা বরং পার্ক, উদ্যানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখি। কোথাও না কোথাও সুযোগ পেয়ে যাব।
কাজ। মানে পরস্পরকে চুম্বন করা। মাত্র একবার। স্বপ্নে দেখেছি পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হলে আমাদের দুজনকে মাত্র একবার পরস্পরকে নিবিড় চুম্বন করতে হবে। এমন চুম্বন যখন দুজন পৃথিবী ভুলে যাবে। আমাকে কেন বেছে নেওয়া হলো? কারণ আমি আজ পর্যন্ত কোনো নারীর ঠোঁটে চুম্বন করিনি। জাহরাকেও সেই একই কারণে বেছে নেওয়া হয়েছে। এটি আমাদের দুজনেরই গোপন আফসোসের জায়গা। অন্তত আমার। কিন্তু সেটিই হলো আজ আমাদের যোগ্যতা।
আমি বলি—দাঁড়ান। জায়গা খুঁজে পেলেও আমি কিন্তু প্রেমহীন চুম্বন করতে রাজি নই। আমাদের মধ্যে প্রেম তৈরি হয়নি। এত তাড়াতাড়ি তা তৈরির সুযোগও নেই।
জাহরা একটু ঝাঁজালো কণ্ঠে বলে—সে সমস্যা তো আমারও। প্রেমহীন চুম্বন চাই না, স্পর্শ চাই না বলেই তো আমার ঠোঁট এখনো ভার্জিন।
চলেন, জায়গা খুঁজি। যদি এই সময়ের মধ্যে মনে প্রেমের অনুভূতি না তৈরি হয়, তাহলে কাজটা না করেই ফিরে যাব যে যার ঘরে।
আমরা পার্ক বা উদ্যানে নির্জন জায়গার সন্ধানে বেরিয়ে পড়ি। রিকশায়, সিএনজিতে, হেঁটে ঘুরতে থাকি শহরের এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত। কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়, দুপুর পেরিয়ে বিকেল হয়, আমরা একটি পবিত্র চুম্বনের জন্য কোনো নির্জন স্থান পাই না। তখন আমাদের উদ্বেগ বাড়তে থাকে। পেটে হয়তো খিধে। কিন্তু আমরা নিজেদের হাতের বোতলের পানিতে মাঝে মাঝে চুমুক দেওয়া ছাড়া অন্য খাবারের জন্য সময় নষ্ট করিনি। কোনো জায়গা না পেয়ে আমরা গুগল সার্চ দিই। শহরের আর কোনো পার্ক বা উদ্যান বাকি আছে কি না, খুঁজি। না নেই। তখন আমাদের দুজনের দিশেহারা অবস্থা। জাহরার চোখ-মুখ হতাশায় আচ্ছন্ন। আমি মরিয়া হয়ে একটা সিএনজি ডাকি। উঠে বসে বলি, সোজা উত্তরে যেতে। সিএনজি চলে আর আমরা বারবার সূর্যের দিকে তাকাই। সূর্য যখন প্রায় পশ্চিমের কাছাকাছি, তখন আমরা শহর ছাড়িয়ে চলে এসেছি শহরতলিতে। হঠাৎ রাস্তা থেকে একটু দূরে একটা নিঃসঙ্গ ঘর চোখে পড়ে আমার। দূর থেকেও বোঝা যায় ঘরটি জীর্ণ। আমি প্রায় চিৎকার করে সিএনজিকে থামতে বলি। মিটারে কত টাকা উঠেছে জিজ্ঞেস না করে এক হাজার টাকার নোট ড্রাইভারের হাতে গুঁজে দিয়ে জাহরাকে বলি—তাড়াতাড়ি নামেন।
তার হাত ধরে প্রায় ছুটতে থাকি নিঃসঙ্গ ঘরটির দিকে। মনের মধ্যে শঙ্কা। ওখানেও যদি মানুষ থাকে!
ধাক্কা দিতেই নড়বড়ে দরজা খুলে যায়। মনের মধ্যে স্বস্তির বাতাস অনুভব করি। ঘরে কোনো লোক নেই। ভেতরে পা রাখতে গিয়ে জাহরার হাতের টানে থমকে যাই আমি। একটু বিরক্ত হয়েই বলি—কী হলো?
জাহরা ঘরের মেঝের দিকে আঙুল নির্দেশ করে—মেঝেতে অন্তত আট-দশটি সাপ।
এখন!
সূর্যের দিকে তাকাই। অল্পক্ষণের মধ্যেই ডুবে যাবে। আমাদের আর কোনো সুযোগ নেই। কী যে হয়, আমি জাহরাকে হাত ধরে টানি—চলো ঘরের মধ্যে চলো! যা হয় হবে। সাপ কামড়ালে কামড়াবে। কিন্তু আমরা কাজটা এখানেই শেষ করব। আমরা মরলেও পৃথিবীটা বাঁচবে।
জাহরা আমার চোখের দিকে তাকায়। বলে—আমাকে জড়িয়ে ধরো।
আমরা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে সাপগুলোর পাশে পা রাখি। অবাক হয়ে দেখি ওরা আমাদের দেখে ফণা তুলে তেড়ে না এসে সড়াৎ সড়াৎ করে পাশ কেটে বেরিয়ে যাচ্ছে দরজা দিয়ে বাইরে।
জাহরা আছড়ে পড়ে আমার বুকে—ওগো, প্রেমের এমন শক্তি আগে কোনো দিন ভাবিনি।
আমাদের দুই জোড়া ঠোঁট তখন পরস্পরের মধ্যে হারিয়ে গেছে।
পৃথিবী বাঁচবে। বেঁচে থাকবে। কেননা প্রেম অন্তরিক্ষ থেকে নেমে এসেছে মানব-মানবীর বুকে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৮ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১৩ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৯ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

বেশির ভাগ স্বপ্ন মানুষ আর মনে রাখতে পারে না ঘুম ভেঙে গেলে। আর কিছু স্বপ্ন ঘুম ভাঙিয়ে মানুষকে জাগিয়ে রাখে পরের কয়েকটি দিন এবং রাত পর্যন্ত। তার মানে আর সবকিছুর মতো স্বপ্নের গুরুত্বেও অনেক তারতম্য আছে।
২০ আগস্ট ২০২২
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১৩ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৯ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

বেশির ভাগ স্বপ্ন মানুষ আর মনে রাখতে পারে না ঘুম ভেঙে গেলে। আর কিছু স্বপ্ন ঘুম ভাঙিয়ে মানুষকে জাগিয়ে রাখে পরের কয়েকটি দিন এবং রাত পর্যন্ত। তার মানে আর সবকিছুর মতো স্বপ্নের গুরুত্বেও অনেক তারতম্য আছে।
২০ আগস্ট ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৮ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৯ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

বেশির ভাগ স্বপ্ন মানুষ আর মনে রাখতে পারে না ঘুম ভেঙে গেলে। আর কিছু স্বপ্ন ঘুম ভাঙিয়ে মানুষকে জাগিয়ে রাখে পরের কয়েকটি দিন এবং রাত পর্যন্ত। তার মানে আর সবকিছুর মতো স্বপ্নের গুরুত্বেও অনেক তারতম্য আছে।
২০ আগস্ট ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৮ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১৩ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৯ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

বেশির ভাগ স্বপ্ন মানুষ আর মনে রাখতে পারে না ঘুম ভেঙে গেলে। আর কিছু স্বপ্ন ঘুম ভাঙিয়ে মানুষকে জাগিয়ে রাখে পরের কয়েকটি দিন এবং রাত পর্যন্ত। তার মানে আর সবকিছুর মতো স্বপ্নের গুরুত্বেও অনেক তারতম্য আছে।
২০ আগস্ট ২০২২
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৮ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১৩ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৯ দিন আগে