Ajker Patrika

দ্য স্ক্রলের নিবন্ধ

মোদির ‘বাংলাদেশি’ বিতাড়নের রাজনীতি যেভাবে হিন্দুদেরই বিপদে ফেলবে

অনলাইন ডেস্ক
বিজেপির বাঙালি বিরোধী রাজনীতির বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিবাদ মিছিল। ছবি: এক্স
বিজেপির বাঙালি বিরোধী রাজনীতির বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিবাদ মিছিল। ছবি: এক্স

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত বুধবার ভারতে বিজেপি সরকারকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে আরও বেশি বেশি বাংলা বলব। চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, আরেকজন বাংলাভাষীকে গ্রেপ্তারের আগে আমাকে আটককেন্দ্রে পাঠিয়ে দেখান।’

পশ্চিমবঙ্গের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী ভারতের মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং ছত্তিশগড়ের বেশ কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করে অভিযোগ করেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে প্রায় ১ হাজার বাংলাভাষীকে তথাকথিত ‘বাংলাদেশি’ অভিযোগে আটক করা হয়েছে। তিনি পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা থেকে তথাকথিত ‘বাংলাদেশি’ ভোটারদের বাদ দিতে বিহারের মতো বিশেষ শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার দাবিরও প্রতিবাদ করেন। বিভিন্ন রাজ্যেই এ ধরনের পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে আসছে বিজেপি।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলো স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে, তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির নাগরিকত্ব রাজনীতির বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে প্রচার চালাবে। তৃণমূলের লক্ষ্য বিজেপিকে ‘বাঙালি বিরোধী’ হিসেবে চিত্রিত করা। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু শরণার্থী গোষ্ঠীগুলো—যেমন মতুয়া ও রাজবংশী সম্প্রদায়। এই গোষ্ঠীগুলো সাম্প্রতিককালে বিজেপির প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছে।

বিজেপির তথাকথিত ‘বাংলাদেশি বিতাড়ন’ রাজনীতির বিপরীতে নিজেদের অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল কংগ্রেস গত বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের পুনেতে মতুয়া সম্প্রদায়ের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের ঘটনা সামনে এনেছে। এর আগে, গত ৮ জুলাই মমতা নিজেই আসামের কর্মকর্তাদের হাতে হয়রানির শিকার এক রাজবংশী ব্যক্তির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্র ও আসামে বর্তমানে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার।

বিশ্লেষক ও রাজনীতিবিদ—এমনকি পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির অনেকেও—দ্য স্ক্রলকে জানিয়েছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের এই ‘বাঙালি বিরোধী’ হওয়ার অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটির প্রবীণ সদস্য রাহুল সিনহা বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত জোরালোভাবে মাঠে নেমেছেন কারণ তাঁর ‘মূল ভোট ব্যাংক’ হুমকির মুখে।

রাহুল সিনহা অভিযোগ করেন, ‘এখানে ১ কোটি বাংলাদেশি ভোটার হিসাবে নথিভুক্ত।’ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবির প্রতিধ্বনি করে তিনি আরও বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের চিহ্নিত করার জন্য কিছুই করছেন না, সেই কারণেই অন্যান্য রাজ্যগুলোকে এই ধরনের পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।’

বাংলাভাষী মুসলিমদের বিতাড়নের পদক্ষেপ কি বাঙালি মুসলিমদের আরও বেশি করে তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে ঠেলে দেবে—এই প্রশ্নের জবাবে সিনহা বলেন, ‘আমরা মুসলিমদের নিয়ে চিন্তিত নই। কারণ, আমরা জানি—তারা আমাদের ভোট দেবে না। আমাদের শুধু নিশ্চিত করতে হবে যাতে হিন্দুদের কোনো ক্ষতি না হয়।’

রাহুল সিনহা বিহারের মতো পশ্চিমবঙ্গেও ভোটার তালিকা সংশোধনের দাবি জানান। সিনহা বলেন, ‘যদি ভোটার তালিকা থেকে ১০-১৫ শতাংশ (তথাকথিত) বাংলাদেশি মুসলিমদের নাম বাদ দেওয়া হয়, তাহলে মমতার রাজত্বের অবসান ঘটবে। যত বেশি তাঁর ভোটার বাদ পড়বে, আমাদের তত কম অতিরিক্ত ভোটের প্রয়োজন হবে।’ শুধু তিনিই নন, পশ্চিমবঙ্গের অনেক শীর্ষ বিজেপি নেতা একই দাবি তুলেছেন।

রাহুল সিনহা তৃণমূলের হিন্দু শরণার্থী গোষ্ঠীগুলোর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টাকে ভয় দেখানোর কৌশল বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, তাঁর দল বিজেপি হিন্দু ভোটারদের বলবে—শুধু বাংলাদেশি মুসলমানদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

তবে, পশ্চিমবঙ্গের সব বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার মতো আত্মবিশ্বাসী নন। দলের রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটির এক সদস্য দ্য স্ক্রলকে বলেন, নাগরিকত্ব যাচাইয়ের ভিত্তিতে ভোটার তালিকা সংশোধন দলের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নেতা বলেন, ‘মুসলমানেরা নয়, বরং হিন্দুদেরই বেশি ক্ষতি হবে।’

তিনি বলেন, ‘১৯৮৭ সালের পরে জন্মগ্রহণকারী হিন্দুদেরও প্রমাণ করতে হবে যে, তাদের বাবা-মা এখানকার বাসিন্দা। তারা হয়তো ১৯৭০ সালের পরে আসা বাংলাদেশি হিন্দু। যদি তাদের ভোট দিতে না দেওয়া হয়, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে হেরে যাবে।’

নাগরিকত্ব আইন অনুসারে, ১৯৮৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০০৪ সালের ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিরা কেবল তখনই জন্মসূত্রে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবেন, যখন তাদের পিতামাতার মধ্যে অন্তত একজন সেই সময়সীমার মধ্যে ভারতীয় নাগরিক বলে প্রমাণিত হবেন। ২০০৪ সালের ৩ ডিসেম্বরের পরে জন্মগ্রহণকারীদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে হলে পিতামাতা উভয়কেই ভারতীয় নাগরিক প্রমাণ করতে হবে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গে অনেকে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সে সময় অনেক বাংলাদেশি হিন্দু থেকে যান। তাই নাগরিকত্ব আইনের এই নিয়মগুলো দীর্ঘদিন ধরে বাঙালি হিন্দু শরণার্থী সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

ভারতে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ২০১৯ সালে একটি সংশোধনী এনে এই দুর্ভোগ নিরসনের চেষ্টা করেছে। সেই সংশোধনীতে অ-মুসলিম শরণার্থীরা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করলেও নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ তৈরি করা হয়। তবে, এটি বাস্তবায়নে চার বছরেরও বেশি সময় ধরে গড়িমসি করার পর অবশেষে যখন চালু করা হয়, তখন প্রক্রিয়াটি ‘বিশৃঙ্খলাপূর্ণ’ হয়ে দাঁড়ায়।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরবঙ্গের এক বিজেপি বিধায়ক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অনেকে বিভ্রান্ত। কারণ, তারা অনেক নথি জমা দিয়েছে কিন্তু নাগরিকত্ব পায়নি। এখানে অনেক হিন্দু দীর্ঘকাল ধরে বসবাস করছেন। একজন বিধায়ক হয়েও, আমি স্পষ্টভাবে জানি না, তাদের সাহায্য করার জন্য আমি কী করতে পারি!’

এই প্রেক্ষাপটে তিনি আশঙ্কা করছেন, তৃণমূল অনেক ভোটারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবে যে, কেবল মুসলমানরাই নয়, সব শরণার্থীই ঝুঁকিতে। ওই বিজেপি বিধায়ক আরও বলেন, ‘এই অঞ্চলে অনেক তফসিলি সম্প্রদায় ও উপজাতির মানুষ বসবাস করেন। তাঁদের অনেকেই আবার তৎকালীন পূর্ব বাংলা (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে এসেছেন। তৃণমূল সহজেই তাঁদের মনে ভয় জাগাতে সক্ষম হচ্ছে। আমরা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করছি কিন্তু তাঁরা আমাদের কথায় পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন।’

২০২৪ সালে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিশিষ্ট মতুয়া নেতা মুকুট মনি অধিকারী বলেন, এর কারণ হলো—শরণার্থীরা গেরুয়া শিবিরের ওপর আস্থা হারিয়েছে। মতুয়া, রাজবংশী এবং অন্যান্য শরণার্থী সম্প্রদায়কে রাজ্য বিজেপির মেরুদণ্ড হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি এসব জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে বিজেপির ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ নিন্দা করেন।

রানাঘাট থেকে নির্বাচিত বিধায়ক মুকুট মনি বলেন, ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে তাদের ভিত্তি তৈরি করে দেওয়া ভোটারদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। নাগরিকত্ব সংশোধন আইন হোক বা দেশজুড়ে বাঙালিদের ওপর হামলা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই একমাত্র তাদের জন্য লড়াই করছেন।’

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পলিটিক্যাল স্টাডিজের অধ্যাপক দ্বৈপায়ন ভট্টাচার্যও বিজেপির ‘বাংলাদেশি বিতাড়ন’ কৌশলের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান। তাঁর অনুমান ছিল, রাজ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলমান ভোটারদের প্রতি গেরুয়া শিবিরের উদাসীনতার অর্থ হলো—তাঁদের জিততে হলে হিন্দু ভোটের অর্ধেকেরও বেশি পেতে হবে।

দ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য ব্যাখ্যা করে বলেন, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচয়বাদী রাজনীতির সতর্ক পরিমিতিবোধ এবং এই ধরনের রাজনীতির বিরুদ্ধে তৃণমূলের রাজনৈতিক কৌশল বিজেপিকে কোণঠাসা করে ফেলেছে। ফলে, দলটির পক্ষে হিন্দু ভোটের অর্ধেক পাওয়া কঠিন হবে।

এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘জগন্নাথ মন্দির তৈরি করে, বাঙালি হিন্দুদের হয়ে স্বতন্ত্র কণ্ঠস্বর তুলে ধরে, বিশেষ করে বাংলাদেশে হিন্দুদের অবস্থা এবং অন্যত্র বাঙালি অভিবাসীদের কষ্টের কথা উল্লেখ করে তিনি (মমতা) বিজেপির গতানুগতিক ন্যারেটিভকে ভোঁতা করে দিয়েছেন। তাঁকে আর হিন্দুবিরোধী বা অন্ধ মুসলিম সমর্থক হিসেবে চিত্রিত করা সহজ নয়।’

দ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য যে জগন্নাথ মন্দিরের কথা উল্লেখ করেছেন, সেটি পশ্চিমবঙ্গের দিঘা সমুদ্র সৈকতে অবস্থিত এবং গত ৩০ এপ্রিল মমতা নিজেই এটি উদ্বোধন করেন। রাজ্য সরকারের নির্মাণব্যয় বহন করার সিদ্ধান্ত সেই সময় বিতর্ক তৈরি করেছিল। তৃণমূল কংগ্রেস মন্দিরটি চালুর পর থেকে বারবার বাঙালি হিন্দু ভোটারদের আকৃষ্ট করার উপায় হিসেবে ব্যবহার করেছে। এমনকি গত জানুয়ারিতে অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের আগে যে হিন্দুরীতি অনুসরণের কথা জানা গিয়েছিল, সেটিরই অনুকরণে গত জুনে তৃণমূল বাড়ি বাড়ি প্রসাদ বিতরণ করেছিল।

কলকাতাভিত্তিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মঈদুল ইসলাম বলেন, বিজেপির ‘বাংলাদেশি’ তকমার বিরুদ্ধে তৃণমূলের ‘বাঙালি’ পরিচয়ের ওপর জোর সম্ভবত কাজ করবে। কারণ, এই পরিচয় বাঙালিদের স্বাভাবিক পক্ষ হিসেবে গৃহীত হতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, তৃণমূলে বিশেষ ধরনের বাঙালি সত্তার প্রকাশ রাজ্যের গ্রাম ও ছোট শহরগুলোতে সাড়া ফেলেছে।

মঈদুল ইসলামের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবাধে তাঁর রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাঙালি সাংস্কৃতিক গর্ব ব্যবহার করেছেন। তিনি বলেন, ‘তিনি কলকাতার রেড রোডে দুর্গাপূজা কার্নিভ্যাল শুরু করেছিলেন। অনেক তৃণমূল নেতা পূজা কমিটির সঙ্গে যুক্ত। তাই মমতা হিন্দুবিরোধী— এই প্রচার উত্তর ও পশ্চিম ভারতে কিছু শ্রোতা পেলেও পশ্চিমবঙ্গে এসব কেউ খায় না!’

তবে, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মতে, মমতার সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান মনোভাবের বিপরীতে তৃণমূলের ‘বাঙালি’ পরিচয়বাদের রাজনীতি কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আসামের কর্মকর্তারা এক রাজবংশীকে হয়রানি করছেন বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভকে তিনি হাস্যকর অভিহিত করেন। কারণ, ছয় মাস আগে মমতা সরকারের পুলিশই সেই রাজবংশীকে হয়রানি করেছে।

সেলিম বলেন, ‘এখন তিনি জনসমক্ষে বাহানা করছেন। এটি আবেগ দেখানো। এখানে সরকারবিরোধী মনোভাব এত বেশি যে, যদি লোকেরা নারী নিরাপত্তা, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের মতো দৈনন্দিন সমস্যা নিয়ে কথা বলে, তবে তৃণমূল জনগণের ক্রোধের শিকার হবে। তারা সেটা এড়াতে চাচ্ছে।’

অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত