Ajker Patrika

নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধ /ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় সাজঘর থেকে হঠাৎ রঙ্গমঞ্চে জেনারেল আসিম মুনির

অনলাইন ডেস্ক
ট্যাংকের উপর দাঁড়িয়ে মাইক্রোফোন হাতে কথা বলছেন জেনারেল অসিম মুনির। ছবি: এএফপি
ট্যাংকের উপর দাঁড়িয়ে মাইক্রোফোন হাতে কথা বলছেন জেনারেল অসিম মুনির। ছবি: এএফপি

পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে যুদ্ধ যুদ্ধ রব উঠেছে। এই উত্তেজনায় দুই দেশের মধ্যে নানা পর্যায়ে যে নাটক চলছে, তাতে পাকিস্তানের মধ্যমনি এখন সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনির। ঐতিহ্যগতভাবে ভারতের প্রতিবেশী দেশটিতে সেনাবাহিনীর আধিপত্য সুবিদিত এবং ইতিপূর্বে বহু জেনারেল তার নজির দেখিয়েও দিয়েছেন। কিন্তু যাকে নিয়ে আজকের এই নিবন্ধ, সেই আসিম মুনিরকে তেমনভাবে দেখা যায়নি। এই সমরনেতা এতদিন পর্দার আড়ালেই ছিলেন, জনসমক্ষে আসতেন কম। নির্দিষ্ট সামরিক অনুষ্ঠানেই কেবল তাঁকে দেখা যেত, সেসব অনুষ্ঠানে বক্তব্যও সীমিত থাকে।

কিন্তু দুই সপ্তাহ আগের ভারতের কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের উপর নজিরবিহী সন্ত্রাসী হামলার পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে। কয়েকজন অস্ত্রধারী নির্বিচার গুলি চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করে। হামলার পেছনে পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই তৈয়্যেবা সমর্থিত দ্য রেজিস্ট্যান্স ফোর্সকে (টিআরএফ) দায়ী করছে ভারত। এতে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় মদদ আছে অভিযোগ করে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতেই সামরিক সাজঘর থেকে রাজনীতির মঞ্চে আবির্ভাব ঘটল জেনারেল আসিম মুনিরের।

গত বৃহস্পতিবার এক সামরিক মহড়ায় ট্যাংকের ওপর দাঁড়িয়ে সৈন্যদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘কোনো অস্পষ্টতা যেন না থাকে। পুরোনো রেকর্ড বাজিয়ে তিনি ‘ভারতের যেকোনো সামরিক দুঃসাহসের দাঁতভাঙা জবাবের’ প্রতিশ্রুতি দেন আসিম মুনির। তাঁর এই মন্তব্যকে ভারত তো বটেই পাকিস্তানের নানা মহলও নানা দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করছে। বছরের পর বছর ধরে রাজনৈতিক বিভাজন ও অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর প্রতি জনগণের একসময় যে অবিচল সমর্থন ছিল, তাতে চিড় ধরেছে। এমন পরিস্থিতিতে নিজের শক্তি প্রদর্শন ও জনসমর্থন পেতেই হয়তো জেনারেল মুনির এমন মন্তব্য করছেন বলে অনেকে মনে করেন।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, জেনারেল মুনিরের এই প্রতিক্রিয়া কেবল রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের ফল নয়। তাঁদের মতে, তিনি ভারত প্রসঙ্গে কট্টর মনোভাবাপন্ন। পাকিস্তানের দুই প্রধান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা ও ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বকে ‘ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ’ থেকে তুলে ধরার চেষ্টা এই মতের পক্ষে দৃঢ় প্রমাণ।

পেহেলগামে হামলার ৬ দিন আগে জেনারেল মুনির কাশ্মীরের ব্যাপারে এক মন্তব্য করেছিলেন, যা ভারতে অনেকে লুফে নিয়েছেন। রাজধানী ইসলামাবাদে প্রবাসী পাকিস্তানিদের এক অনুষ্ঠানে তিনি কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জুগুলার ভেইন বা গলার শিরা’ বলে অভিহিত করেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর বিভক্ত হলেও দুটি দেশই পুরো অঞ্চলটিকে নিজেদের বলে দাবি করে।

এই দাবি বুঝতে হলে পাকিস্তানের জাতীয়তাবাদী অভিধান পড়তে হবে। জাতীয় পরিচিতির জন্য কাশ্মীরকে পাকিস্তান কতটা অত্যাবশ্যক মনে করে, তা সেই অভিধানে বিধৃত আছে। এই মন্তব্যকে ‘উসকানিমূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।কাশ্মীরকে ভারতের ‘অভিন্ন অংশ’ বলছে দিল্লি। তবে বর্তমান সংকট বাড়বে নাকি প্রশমনের পথে যাবে, তা আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও দুই দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ওপর নির্ভর করবে।

পরমাণু শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তানকে উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ। জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিফ আহমদ শুক্রবার বলেছেন, পাকিস্তানের কূটনীতিক ও মন্ত্রীরা ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা নিয়ে চীনা নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। চীন পাকিস্তানের মিত্র ও দেশটিতে তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থও রয়েছে।

কিন্তু শুধু কূটনীতি যথেষ্ট নাও হতে পারে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী নেতা। তাঁর হিন্দু জাতীয়তাবাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেশের ও পাকিস্তানের মুসলিমরা ‘হুমকি।’ তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, ভারত ‘প্রতিটি সন্ত্রাসী ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত’ ধাওয়া করবে।

২০১৬ ও ২০১৯ সালে কাশ্মীরে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী ‘ঘাঁটিতে’ আঘাত হেনেছিল বলে দাবি করে। এবারের হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছে। কয়েক দশকের মধ্যে এটি ওই অঞ্চলের সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। দিল্লির লেখক ও সাংবাদিক আদিত্য সিনহা বলেন, ‘এবারে কেবল অনুমিত ঘাঁটিগুলোতে সীমান্ত পার হয়ে বিমান হামলা চালানো (মোদির) ডানপন্থী সমর্থকদের রক্তপিপাসা মেটাতে পারবে না।’

অন্যদিকে, পেহেলগাম হামলার পর থেকে স্পষ্টতই আদর্শিক ভাষায় কথা বলেছেন জেনারেল মুনির। ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি যে সম্ভব নয়— তাঁর ভাষ্যে সেই ইঙ্গিত আছে। গত ২৬ এপ্রিল তিনি দেশের প্রধান সামরিক একাডেমির স্নাতক অনুষ্ঠানে ক্যাডেটদের উদ্দেশে ভাষণে ‘দ্বি-জাতি তত্ত্বের’ কথা উল্লেখ করেন। এটি ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ভিত্তি। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, হিন্দু ও মুসলমান দুটি পৃথক জাতি, যাদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র প্রয়োজন।

এই তত্ত্ব দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের জাতীয় পরিচয় ও পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি। অতীতে ভারত–পাকিস্তান উত্তেজনার সময় পাকিস্তানি জেনারেলরা এই আদর্শিক বক্তব্যকে সামনে আনতেন এবং কূটনীতির সময় এলে তা কমিয়ে দিতেন। জেনারেল মুনিরের এই তত্ত্বের পুনরুজ্জীবন ও অন্যান্য মন্তব্যকে পাকিস্তানের ভারতনীতির স্পষ্ট পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন বহু ভারতীয়।

কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জুগুলার ভেইন’ আখ্যা দেওয়া ভারতে বিশেষ আলোড়ন তুলেছে। একই বক্তৃতায় জেনারেল মুনির বলেন, ‘আমাদের কাশ্মীরি ভাইবোনেরা ভারতীয় দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে যে বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন, তা থেকে আমরা আমাদের কাশ্মীরি ভাইবোনদের সরে আসতে দেব না।’

ভারতীয় অনলাইন সংবাদপত্র দ্য প্রিন্টের প্রধান সম্পাদক শেখর গুপ্ত বলেন, জেনারেল মুনিরের মন্তব্যের সময় ও তাঁর ভারতের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ নয়া দিল্লির পক্ষে উপেক্ষা করা কঠিন। গুপ্ত বলেন, ‘পেহেলগামের ঘটনা জেনারেল মুনিরের বক্তৃতার পরপরই ঘটেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারত যদি বিশেষভাবে আত্মতুষ্ট না হয়, তবে এই সংযোগ (জেনারেল মুনিরের বক্তব্য ও কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলা) টানতে বাধ্য হবে। বিশেষ করে, যখন তিনি হিন্দুদের প্রতি বৈরিতার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। এই বিষয়টি কোনো পাকিস্তানি নেতা অনেক দিন হলো করেননি।’

পাকিস্তানি কর্মকর্তারা অবশ্য জেনারেল মুনিরের মন্তব্যের সঙ্গে কাশ্মীরে হামলার সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন। জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি ভারতে হামলার সঙ্গে পাকিস্তানি সংশ্লিষ্টতার দাবি খারিজ করে দিয়ে বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার অস্থিতিশীলতার ‘মূল কারণ’ কাশ্মীর নিয়ে অমীমাংসিত বিরোধ। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয়ে দুই দেশ গঠনের পর থেকেই এই অঞ্চল ভারত-পাকিস্তান প্রতিদ্বন্দ্বিতার কেন্দ্রে। কাশ্মীরে যুদ্ধ, বিদ্রোহ এবং দীর্ঘস্থায়ী সামরিক উপস্থিতি দেখা গেছে। যার ফলে, অঞ্চলটি বিশ্বের অন্যতম অস্থির সংঘাতের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার বর্তমান সংঘাতই জেনারেল মুনিরের জন্য প্রথম আঞ্চলিক সংকট নয়। ২০১৯ সালে যখন কাশ্মীরে আত্মঘাতী বোমা হামলার পর ভারত পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায় তখন দুই দেশের মধ্যে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সে সময় জেনারেল মুনির পাকিস্তানের শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স বা আইএসআই-এর প্রধান ছিলেন। পরে তাঁকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সরিয়ে দেন।

ইমরান খান পরে জেনারেল মুনিরের সেনাপ্রধান হওয়ার বিরোধিতা করেন এবং তাদের সম্পর্ক বৈরীই থেকে যায়। সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে মনোমালিন্যের পর ২০২২ সালের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। ৭ মাস পর জেনারেল মুনির সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আর পাকিস্তানে ব্যাপক জনপ্রিয় ইমরান খান গত দুই বছর ধরে কারাগারে।

নিজের ভাবমূর্তি ধরে রাখতে জেনারেল মুনির অপরিকল্পিত মন্তব্য এড়িয়ে চলেন। তাঁর বক্তৃতাগুলো জোরালো, দ্ব্যর্থহীন এবং তিনি প্রায়শই ধর্মীয় বিষয়গুলো থেকে উদাহরণ টানেন। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুসেন হাক্কানি বলেন, জেনারেল মুনির ‘ধর্মের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল’ এবং এটি ভারতের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে। হাক্কানির মতে, জেনারেল মুনির ‘নিজেকে সামলানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন’ এবং ‘উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টার পাশাপাশি যতটা সম্ভব সুবিধা আদায় করে নেবেন।’

এদিক থেকে দেখলে, জেনারেল মুনির যেন পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর ক্রমবর্ধমান ‘ইসলামিকরণেরই’ প্রতিফলন ঘটাচ্ছেন। এই ধারা ১৯৮০-এর দশকে সামরিক স্বৈরশাসক জেনারেল মোহাম্মদ জিয়াউল হক শুরু করেছিলেন। আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যখন জিহাদিদের সমর্থন জোগাচ্ছিল, তখন জেনারেল জিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে এটি করেছিলেন।

সমালোচকদের মতে, জেনারেল মুনির পাকিস্তানের রাজনীতি ও সমাজে সামরিক বাহিনীর ক্রমবর্ধমান নিয়ন্ত্রণেরও নেতৃত্ব দিচ্ছেন, ভিন্নমত দমন করছেন। হুসেন হাক্কানি বলেন, ‘জনপ্রিয়তার চেয়ে নিয়ন্ত্রণ তাঁর বেশি পছন্দ বলে মনে হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঘরোয়া রাজনীতিতেও তিনি এই পদ্ধতি অবলম্বন করেন এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনেও তাঁর সম্ভাব্য এই পদ্ধতিই থাকবে।’

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনী আরও শক্তিশালী ভূমিকা নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কারণ গোয়েন্দাপ্রধানকে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ করে ভবিষ্যতের যেকোনো আলোচনায় সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ জোরালো করা হয়েছে। অতীতে এই পদটি অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল এবং বেসামরিক ব্যক্তিদের হাতে থাকত।

আপাতত দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক হিম শীতল। নীরব কূটনীতির বদলে আক্রমণাত্মক জনসম্পর্কই যোগাযোগের প্রধান মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভুল পদক্ষেপের ঝুঁকি তীব্র। ইসলামাবাদের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক জাহিদ হোসেন বলেন, ভারত সামরিক হামলা চালালে পাকিস্তান পাল্টা জবাব দিতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন হলো, মোদি এই পর্যায়ে এসে থামতে পারবেন কিনা।’ তাঁর মতে, ‘এমনকি সীমিত ভারতীয় হামলাও বিস্তৃত সংঘাতে রূপ নিতে পারে।’

অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত