Ajker Patrika

সরদার ফজলুল করিম

সম্পাদকীয়
Thumbnail image

সরদার ফজলুল করিম একজন জ্ঞানী অধ্যাপক, মৌলিক অনুবাদক, দার্শনিক ও লেখক ছিলেন। আজীবন মার্ক্সবাদে আস্থাশীল ছিলেন তিনি। স্বপ্ন দেখতেন সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার।

সরদার ফজলুল করিমের জন্ম বরিশালের আঁটিপাড়া গ্রামে ১৯২৫ সালের ১ মে। শৈশব ও কৈশোরের প্রথম ভাগ কেটেছে এই গ্রামে। স্থানীয় স্কুল থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাস করে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে। এখান থেকে প্রথম বিভাগে প্রথম হয়ে দর্শনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ইংল্যান্ডে পড়ার জন্য বৃত্তি পেলেও সেখানে আর যাননি। অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।

ছাত্রজীবনেই বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। একপর্যায়ে কমিউনিস্ট পার্টিতে সময় দেওয়ার জন্য ছেড়ে দেন শিক্ষকতা। পূর্ণাঙ্গ অনিশ্চিত জীবনের মধ্যে কলকাতায় গিয়ে কবি আহসান হাবীবের বাড়িতে ওঠেন। এক রাতে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে চলে আসেন নরসিংদী। এখানে তিনি কৃষকদের সঙ্গে কাজ করেন তাঁদের ঘরে থেকে এবং তাঁদের দেওয়া খাবার খেয়ে।

শাসকশ্রেণির রোষে পড়ে একাধিকবার কারারুদ্ধ হয়েছেন। প্রথম কারাবন্দী থাকা অবস্থায় পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। আইয়ুব খান ক্ষমতা দখল করার পর আবার গ্রেপ্তার হন। চার বছর পরে মুক্তি পেলেন। এরপর যোগ দিলেন বাংলা একাডেমিতে। ১৯৬৩ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমির সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যক্ষ ছিলেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সেপ্টেম্বরে আবার কারাবন্দী হলেন। মুক্তি পেলেন একাত্তরের ১৭ ডিসেম্বর। ১৯৭২ সালে অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের আমন্ত্রণে তিনি যোগ দিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে।

লেখালেখি আর অনুবাদের পাশাপাশি তিনি সম্পাদনা করেছেন একাধিক স্মারকগ্রন্থ। তাঁর রচনাবলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য—প্লেটোর রিপাবলিক (অনুবাদ), রুশোর সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট (অনুবাদ), আমি সরদার বলছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পূর্ববঙ্গীয় সমাজ, দর্শনকোষ ইত্যাদি। তিনি মারা যান ২০১৪ সালের ১৫ জুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত