Ajker Patrika

পুরুষদের বিশ্বকাপে নারী রেফারি

মোশারফ হোসেন, ঢাকা
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫: ৫১
পুরুষদের বিশ্বকাপে  নারী রেফারি

ফুটবল এক উন্মাদনার নাম! শুধু তা-ই নয়। এর পরতে পরতে আছে ইতিহাস আর রোমাঞ্চ। এই পরম্পরার জন্যই হয়তো প্রথমবারের মতো পুরুষদের বিশ্বকাপে রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন নারী রেফারিরা। কাতার বিশ্বকাপের মঞ্চে দেখা যাবে তিনজন নারী রেফারিকে। তাঁরা হলেন ফ্রান্সের স্তেফানি ফ্র্যাপার্ত, রুয়ান্ডার সালিমা মুকাসাঙ্গা ও জাপানের ইওশিমি ইয়ামাশিতা। এ ছাড়া ব্রাজিলের নিউজা ব্যাক, মেক্সিকোর ক্যারেন দিয়াজ মেদিনা ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাথরিন নেসবিত সহকারী রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

আজ বলা যাক স্তেফানি ফ্র্যাপার্তের গল্প। ৩৮ বছর বয়সী ফ্র্যাপার্তের বর্ণিল ক্যারিয়ার সারা বিশ্বের নারী রেফারিদের জন্য অনুপ্রেরণার। রেকর্ড বইয়েও তাঁর কীর্তির অন্ত নেই। ২০১১ সালে ফ্রান্স ফুটবলের তৃতীয় স্তরে রেফারির দায়িত্ব পালন করেন ফ্র্যাপার্ত। এর তিন বছর পর প্রমোশন পেয়ে আসেন দ্বিতীয় স্তরের ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে। তিনি প্রথম নারী হিসেবে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন।

এরপর কানাডায় ২০১৫ নারী বিশ্বকাপে রেফারির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালের দিকে প্রথম নারী হিসেবে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ স্তরের ‘লিগ ওয়ান’-এর ম্যাচ পরিচালনায় ছিলেন তিনি। ওই বছরই ফ্র্যাপার্ত নিজ দেশে অনুষ্ঠিত নারী বিশ্বকাপের রেফারি ছিলেন এবং ফাইনাল ম্যাচের দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৯ সালের শেষের দিকে আরও একটি বড় অর্জনের সাক্ষী হন ফ্র্যাপার্ত। এবার পুরুষদের ইউরোপীয় সুপার কাপের দায়িত্ব পান তিনি। এর মাধ্যমে প্রথম নারী হিসেবে তিনি পুরুষদের ইউরোপীয় টুর্নামেন্টের কোনো ম্যাচ পরিচালনা করেন। আরও যোগ করলে, তিনি প্রথম নারী, যিনি ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগেরও রেফারি ছিলেন। ২০২২ সালের মে মাসে নঁতে এবং নিসের মধ্যকার ফ্রেঞ্চ কাপ ফাইনালের জন্য তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

অবশেষে এ বছর কাতারে বসা পুরুষদের বিশ্বকাপ আসরে রেফারির মূল তালিকায় ঠাঁই মেলে ফ্র্যাপার্তের। উচ্ছ্বসিত হয়ে তিনি বলেন, ‘পুরুষদের বিশ্বকাপ শুধু ফুটবল নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা। আমি ফ্রান্সের প্রথম নারী রেফারি, ইউরোপে প্রথম, যে জায়গাই দায়িত্ব পালন করি না কেন, প্রতিবারই নারী হিসেবে প্রথম থাকি। আমি জানি পরিস্থিতির সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়।’

ফ্রান্সের উত্তর-পশ্চিমের শহর হারব্লে-সুর-সেইনে বড় হয়েছেন ফ্র্যাপার্ত। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই তিনি শিশুদের ছোট একটি ম্যাচের রেফারির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বাবা ছিলেন স্থানীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড়। তাঁর মাধ্যমেই ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা জন্মে ফ্র্যাপার্তের। ফুটবলের নিয়মকানুন শেখার জন্য বাবা তাঁকে একটি কোর্সে ভর্তি করিয়ে দেন। এরপর তিনি রেফারির কাজ শুরু করেন।

ফ্র্যাপার্ত শনিবার ফুটবল খেলতেন আর রোববার রেফারির কাজ করতেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর চাপ বেড়ে যায়। ‘হয় খেলো নাহয় রেফারির দায়িত্ব পালন করো’ ফ্র্যাপার্ত তখন এমন দ্বিধায় ভুগছিলেন। অবশ্য দ্বিধা কাটিয়ে উঠতেও তাঁর খুব বেশি সময় লাগেনি এবং তিনি দ্বিধাহীনভাবে রেফারির ক্যারিয়ারকেই বেছে নেন।  ফ্র্যাপার্ত বলেন, ‘তখনো নারীদের ফুটবল খুব একটা বিকশিত হয়নি। আমি খেলা বন্ধ করে, রেফারি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু বিশ্বকাপে প্রথম নারী রেফারি হওয়া বা এ রকম কিছু করার কোনো পরিকল্পনা আমার ছিল না।’

ফ্র্যাপার্ত যা-ই বলুন না কেন, সামনের দিনগুলোতে তাঁর মতো সাহসী ব্যক্তিত্ব নারীদের প্রেরণা জোগাবে, সাহসী হতে শক্তি জোগাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

মির্জা ফখরুলের কাছে অভিযোগ, ১৬ দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁও থানার ওসি বদলি

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত