Ajker Patrika

প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ যে নারীরা

ফিচার ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পলিথিন ও প্লাস্টিক একই জিনিস নয়। তবে পলিথিন মূলত একধরনের প্লাস্টিক। বিশ্বজুড়ে সেই প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে চলছে আন্দোলন। আগামীকাল বিশ্ব পরিবেশ দিবস। হ্যাশট্যাগ বিট প্লাস্টিক পলিউশন স্লোগান দিয়ে এবার প্লাস্টিকদূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। প্লাস্টিক পরিবেশ দূষণ করে। আর এই দূষণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন নারীরা। বিশ্বজুড়ে অনেক নারী পরিবেশকর্মী তাঁদের সাহসী উদ্যোগ ও নেতৃত্বের মাধ্যমে প্লাস্টিকদূষণ কমিয়ে আনতে কাজ করছেন।

আফ্রিকা, এশিয়া তো বটেই, ইউরোপ বা আমেরিকা মহাদেশেও নারীরা রুখে দাঁড়িয়েছেন প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে। এই আন্দোলন আজকের নয়।

১৯৯৭ সালে গাম্বিয়ার ইসাতু সিসে তাঁর চারজন সহকর্মী নিয়ে গাম্বিয়ার ন’জাউ গ্রামে রিসাইকেল সেন্টার অব এন’জু প্রতিষ্ঠা করেন। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল প্লাস্টিক বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করে পরিবেশ রক্ষা এবং নারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করা। ইসাতু সিসে গাম্বিয়ার উইম্যান’স ইনিশিয়েটিভ দ্য গাম্বিয়া প্রতিষ্ঠা করেন, যা নারীদের জন্য বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ পরিচালনা করে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে নারীরা জৈব বর্জ্য থেকে জ্বালানি তৈরি, সার উৎপাদন এবং প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে নিজেদের আয় বাড়ান। তাঁরা প্লাস্টিক ব্যাগ সংগ্রহ করে সেগুলোকে ধুয়ে, কেটে, সুতোয় পরিণত করে ব্যাগ, পার্স ইত্যাদির মতো পণ্য তৈরি করেন। এই পণ্যগুলো বিক্রি করে নারীরা নিজেদের আয় বাড়াতে সক্ষম হন। এই উদ্যোগের কারণে ইসাতু সিসেকে বলা হয় কুইন অব রিসাইক্লিং।

বাহামাসের ক্রিস্টাল অ্যামব্রোস একজন সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী ও পরিবেশকর্মী। ২০১৩ সালে তাঁর প্রতিষ্ঠান বাহামাসে প্লাস্টিক ক্যাম্প কর্মসূচির মাধ্যমে ৫ হাজার পাউন্ডের বেশি সমুদ্র বর্জ্য সংগ্রহ করেছিল। ২০১৮ সালে ক্রিস্টাল অ্যামব্রোস একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের পণ্য নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দেন। এর ফলে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাহামাসে একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যাগ, স্ট্র, স্টাইরোফোম কনটেইনার ও কাপ নিষিদ্ধ করা হয়। এমনই কাজ করেছেন নেপালের শিলশিলা আচার্য। তিনি আভনি সেন্টার ফর সাসটেইনেবিলিটি প্রতিষ্ঠা করে স্কুল, হোটেল ও পাহাড়ি অঞ্চলে প্লাস্টিক বর্জ্য কমাতে কাজ করছেন। এ ছাড়া প্লাস্টিক প্রতিস্থাপনে পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণের প্রচারে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। কেনিয়ার উদ্যোক্তা লরনা রুট্টো ইকো পোস্ট নামক সংস্থার মাধ্যমে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে পরিবেশবান্ধব নির্মাণসামগ্রী তৈরি করেন।

যুক্তরাজ্যের নাবিক ও পরিবেশকর্মী এমিলি পেন এক্সএক্সপেডিশন নামে মহাসাগরের প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে গবেষণা করছেন। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠান থেকে হওয়া ১১টি অভিযানে এক শতাধিক নারী অংশ নেন। এটি ছাড়া এমিলি এমন একটি সংস্থা চালু করেছেন, যা মহাসাগর প্লাস্টিকদূষণ মোকাবিলায় ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সমাধান খুঁজে বের করতে সহায়তা করে। যুক্তরাষ্ট্রের সি হাগার সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সেল ক্লিভ প্লাস্টিকদূষণ রোধে তৃণমূল সচেতনতা তৈরিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং সমুদ্রতট পরিচ্ছন্ন অভিযানে জনগণকে যুক্ত করছেন।

এই কয়েকজন নারী প্রমাণ করেছেন, নেতৃত্ব আর সদিচ্ছা থাকলে পরিবেশ রক্ষায় বাস্তব পরিবর্তন নিয়ে আসা সম্ভব। তাঁরা শুধু নিজেরাই বলছেন না; অন্যান্য নারী ও পুরুষদের সংগঠিত করছেন প্লাস্টিকদূষণ বন্ধ করার লক্ষ্যে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পশ্চিমবঙ্গে আটক দুই আওয়ামী লীগ নেতা ও পুলিশ কর্মকর্তা, পরে মুক্তি

সভা শেষে সরকারি গাড়িতেই গরু নিয়ে গেলেন ইউএনও

যশোরে বিএনপি ও যুবদল নেতার বাড়িতে কাফনের কাপড়, দা, চিরকুট পাঠিয়ে হুমকি

১২ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা

নিউজিল্যান্ডের সংসদে হাকা, দুনিয়া কাঁপানো সেই সাংসদেরা বরখাস্ত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত