ইশতিয়াক হাসান
লাওসের জিয়েন খোয়াং এলাকায় ছড়িয়ে আছে বিশাল আকারের সব পাথরের পাত্র। এগুলো দেখলে প্রথম যে প্রশ্ন আপনার মনে আসবে সেটি হলো, এত্তো বিশাল পাত্র ব্যবহার করত কারা? আর কী কাজেই বা লাগত এগুলো?
প্লেইন অব জারস নামে পরিচিত এই পাত্রগুলোর উচ্চতা তিন থেকে ১০ ফুট। সর্বোচ্চ ওজন ১৪ টন। এ ধরনের ২ হাজারের বেশি পাত্র বা জার আছে এলাকাটিতে।
এখনো পর্যন্ত এই জার বা পাত্রগুলো কারা তৈরি করল কিংবা কীভাবে এলো, সে সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, দেড় থেকে ২ হাার বছর আগে এগুলো ব্যবহার করা হতো। পাত্রগুলো আসলে কী কাজে ব্যবহার করা হতো তা নিয়েও আছে নানা মত। গবেষকদের একটি দলের ধারণা, মৃতদের শরীরের ভস্ম বা ছাই রাখার কাজে এগুলো ব্যবহার করা হতো। আবার অপর দলটির ধারণা, খাবার সংরক্ষণে ব্যবহার করা হতো বিশাল আকারের সব পাত্র।
অবশ্য ওই অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাসটা কোনোভাবেই মেলে না গবেষকদের মতের সঙ্গে। তাঁদের দাবি, বিশাল পাত্রগুলো তৈরি করান খুন চেয়াং নামের এক প্রাচীন রাজা। উঁচু এলাকায়, মানে পাহাড়ে বাস করা এই রাজা ও তাঁর লোকেরা ছিলেন গায়ে-গতরে দানবাকৃতির। রাজা খুন চেয়াং একবার দীর্ঘ, রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধে জেতেন। তারপর এই পাত্রগুলো বানানোর নির্দেশ দেন বিজয় উৎসবের জন্য মদ প্রস্তুত করতে।
১৯৩০-র দশকের আগ পর্যন্ত দ্য প্লেইন অব জারস পশ্চিমাদের তেমন একটা নজর কাড়েনি। তার পরই ফরাসি নারী প্রত্নতাত্ত্বিক মেদেলেইনে কোলানি জায়গাটিতে অনুসন্ধান শুরু করেন। তিনি আসার আগে এই পাত্রগুলোয় অলংকার, নানা ধরনের মূল্যবান পাথর-পুঁতি, কুঠারসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিস থাকার খবর পাওয়া যায়। তবে কোলানি আসার আগেই ওই সব জিনিস লুট হয়ে যায়। তবে তিনি কাছের এক গুহায় মানুষের শরীরের পোড়া হাড়, ছাই খুঁজে পান। এটা থেকেই ধারণা করা হয়, ওই সম্প্রদায়ের গোত্রপতিদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও দেহাবশেষ সংরক্ষণের কাজে ব্যবহার করা হতো।
এ সময় এই এলাকার মাটি খুঁড়ে বিভিন্ন নমুনা পান, যেগুলোর কিছু খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০ থেকে ৮০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যকার। মেদেলেইনে কোলানি, তাঁর অনুসন্ধানের ফলাফল লিপিবদ্ধ করেন দ্য মেগালিথস অব আপার লাওসে।
লাওসের ফনসাভান ও এর আশপাশের অঞ্চলে এ ধরনের জার বা পাত্র সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেলেও এই জায়গা থেকে উত্তর ভারত পর্যন্ত এ ধরনের ছড়ানো-ছিটানো পাত্র চোখে পড়ে। আর এ ধরনের পাত্রের উপস্থিতি এশিয়ার অন্য জায়গায় থাকায় ধারণা করা হয়, বিশাল একটা বাণিজ্যপথের আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে স্থাপন করা হয়েছে এগুলো।
কোনো কোনো গবেষকের মত, এই পাত্রগুলোতে বর্ষার সময় বৃষ্টির পানি ধরে রাখা হতো। এতে শুকনো মৌসুমে পর্যটকদের পানির অভাব হতো না। এর বদলে এখানে বিভিন্ন অলংকার ও পুঁতি রেখে যেতেন।
মজার ঘটনা, লাওসের এই এলাকাতেই পাত্র আছে এমন নব্বইটি সাইট বা অঞ্চল আছে। এগুলোর কোথাও কোথাও শতাধিক পাত্র আছে। আবার কোথাও দুই-তিনটা পাত্রও পাবেন। ছোট ছোট পাহাড়, উপত্যকা আর সমতলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে এগুলো।
জায়গাটিকে ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হলেও এখনো একে ভ্রমণের জন্য বিপজ্জনক এলাকা বলা যায়। ভিয়েতনাম যুদ্ধের স্মৃতি বহন করছে এলাকাটি। এখনো ওই সময় অবিস্ফোরিত বোমা দুর্ঘটনা ঘটায়। বলা হয়, যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের ফাইটার জেট প্লেনগুলোর চলাচলের পথে পড়ত ফনসাভানের আশপাশের এলাকা। এ সময় অব্যবহৃত গুচ্ছ বোমা এখানে ফেলে দেওয়া হতো। এগুলোর যেগুলো বিস্ফোরিত হয়নি বা নিষ্ক্রিয় করা হয়নি, সেগুলোই ঝুঁকি বাড়ায়। এখনো বিস্ফোরকগুলোকে সরানো বা নিষ্ক্রিয় করার কাজ চলছে।
তাই নির্দিষ্ট কিছু এলাকা কেবল পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। অর্থাৎ যেসব জায়গায় এই পাত্রগুলো আছে, তার সবগুলো চাইলেই ঘুরে দেখতে পারবেন না।বিশাল পাত্রগুলো যে এলাকায়, সেটি লাওসের রাজধানী ভিয়েনতিয়েনের ৪০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে।
আপনাকে প্রথমে যেতে হবে ফনসাভান শহরে। সেখান থেকেই ঘুরে ঘুরে দেখতে পারবেন পুরোনো দিনের ওই সব বিশাল পাত্র। চাইলে এগুলোর রহস্যভেদেও নেমে পড়তে পারেন!
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, এ সোশ্যাল নোমাড ডট কম, অ্যামিউজিং প্ল্যানেট
লাওসের জিয়েন খোয়াং এলাকায় ছড়িয়ে আছে বিশাল আকারের সব পাথরের পাত্র। এগুলো দেখলে প্রথম যে প্রশ্ন আপনার মনে আসবে সেটি হলো, এত্তো বিশাল পাত্র ব্যবহার করত কারা? আর কী কাজেই বা লাগত এগুলো?
প্লেইন অব জারস নামে পরিচিত এই পাত্রগুলোর উচ্চতা তিন থেকে ১০ ফুট। সর্বোচ্চ ওজন ১৪ টন। এ ধরনের ২ হাজারের বেশি পাত্র বা জার আছে এলাকাটিতে।
এখনো পর্যন্ত এই জার বা পাত্রগুলো কারা তৈরি করল কিংবা কীভাবে এলো, সে সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, দেড় থেকে ২ হাার বছর আগে এগুলো ব্যবহার করা হতো। পাত্রগুলো আসলে কী কাজে ব্যবহার করা হতো তা নিয়েও আছে নানা মত। গবেষকদের একটি দলের ধারণা, মৃতদের শরীরের ভস্ম বা ছাই রাখার কাজে এগুলো ব্যবহার করা হতো। আবার অপর দলটির ধারণা, খাবার সংরক্ষণে ব্যবহার করা হতো বিশাল আকারের সব পাত্র।
অবশ্য ওই অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাসটা কোনোভাবেই মেলে না গবেষকদের মতের সঙ্গে। তাঁদের দাবি, বিশাল পাত্রগুলো তৈরি করান খুন চেয়াং নামের এক প্রাচীন রাজা। উঁচু এলাকায়, মানে পাহাড়ে বাস করা এই রাজা ও তাঁর লোকেরা ছিলেন গায়ে-গতরে দানবাকৃতির। রাজা খুন চেয়াং একবার দীর্ঘ, রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধে জেতেন। তারপর এই পাত্রগুলো বানানোর নির্দেশ দেন বিজয় উৎসবের জন্য মদ প্রস্তুত করতে।
১৯৩০-র দশকের আগ পর্যন্ত দ্য প্লেইন অব জারস পশ্চিমাদের তেমন একটা নজর কাড়েনি। তার পরই ফরাসি নারী প্রত্নতাত্ত্বিক মেদেলেইনে কোলানি জায়গাটিতে অনুসন্ধান শুরু করেন। তিনি আসার আগে এই পাত্রগুলোয় অলংকার, নানা ধরনের মূল্যবান পাথর-পুঁতি, কুঠারসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিস থাকার খবর পাওয়া যায়। তবে কোলানি আসার আগেই ওই সব জিনিস লুট হয়ে যায়। তবে তিনি কাছের এক গুহায় মানুষের শরীরের পোড়া হাড়, ছাই খুঁজে পান। এটা থেকেই ধারণা করা হয়, ওই সম্প্রদায়ের গোত্রপতিদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও দেহাবশেষ সংরক্ষণের কাজে ব্যবহার করা হতো।
এ সময় এই এলাকার মাটি খুঁড়ে বিভিন্ন নমুনা পান, যেগুলোর কিছু খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০ থেকে ৮০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যকার। মেদেলেইনে কোলানি, তাঁর অনুসন্ধানের ফলাফল লিপিবদ্ধ করেন দ্য মেগালিথস অব আপার লাওসে।
লাওসের ফনসাভান ও এর আশপাশের অঞ্চলে এ ধরনের জার বা পাত্র সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেলেও এই জায়গা থেকে উত্তর ভারত পর্যন্ত এ ধরনের ছড়ানো-ছিটানো পাত্র চোখে পড়ে। আর এ ধরনের পাত্রের উপস্থিতি এশিয়ার অন্য জায়গায় থাকায় ধারণা করা হয়, বিশাল একটা বাণিজ্যপথের আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে স্থাপন করা হয়েছে এগুলো।
কোনো কোনো গবেষকের মত, এই পাত্রগুলোতে বর্ষার সময় বৃষ্টির পানি ধরে রাখা হতো। এতে শুকনো মৌসুমে পর্যটকদের পানির অভাব হতো না। এর বদলে এখানে বিভিন্ন অলংকার ও পুঁতি রেখে যেতেন।
মজার ঘটনা, লাওসের এই এলাকাতেই পাত্র আছে এমন নব্বইটি সাইট বা অঞ্চল আছে। এগুলোর কোথাও কোথাও শতাধিক পাত্র আছে। আবার কোথাও দুই-তিনটা পাত্রও পাবেন। ছোট ছোট পাহাড়, উপত্যকা আর সমতলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে এগুলো।
জায়গাটিকে ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হলেও এখনো একে ভ্রমণের জন্য বিপজ্জনক এলাকা বলা যায়। ভিয়েতনাম যুদ্ধের স্মৃতি বহন করছে এলাকাটি। এখনো ওই সময় অবিস্ফোরিত বোমা দুর্ঘটনা ঘটায়। বলা হয়, যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের ফাইটার জেট প্লেনগুলোর চলাচলের পথে পড়ত ফনসাভানের আশপাশের এলাকা। এ সময় অব্যবহৃত গুচ্ছ বোমা এখানে ফেলে দেওয়া হতো। এগুলোর যেগুলো বিস্ফোরিত হয়নি বা নিষ্ক্রিয় করা হয়নি, সেগুলোই ঝুঁকি বাড়ায়। এখনো বিস্ফোরকগুলোকে সরানো বা নিষ্ক্রিয় করার কাজ চলছে।
তাই নির্দিষ্ট কিছু এলাকা কেবল পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। অর্থাৎ যেসব জায়গায় এই পাত্রগুলো আছে, তার সবগুলো চাইলেই ঘুরে দেখতে পারবেন না।বিশাল পাত্রগুলো যে এলাকায়, সেটি লাওসের রাজধানী ভিয়েনতিয়েনের ৪০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে।
আপনাকে প্রথমে যেতে হবে ফনসাভান শহরে। সেখান থেকেই ঘুরে ঘুরে দেখতে পারবেন পুরোনো দিনের ওই সব বিশাল পাত্র। চাইলে এগুলোর রহস্যভেদেও নেমে পড়তে পারেন!
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, এ সোশ্যাল নোমাড ডট কম, অ্যামিউজিং প্ল্যানেট
সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপ ও এশিয়ায় বিপুল পরিমাণে পাচার হচ্ছে বড় আকারের লাখ লাখ পিঁপড়া। ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোতে এসব পিঁপড়া পোষা প্রাণী হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। আফ্রিকার দেশ কেনিয়া থেকে সম্প্রতি হাজার হাজার জীবন্ত পিঁপড়া পাচারকালে ৪ চোরাকারবারিকে আটক করা হয়েছে।
৩ দিন আগেগত বছর একটি রাতের অনুষ্ঠানে এক ভ্লগারের ক্যামেরায় অপ্রত্যাশিত এবং অশালীন মন্তব্য করে রাতারাতি ভাইরাল হন হেইলি ওয়েলচ। দ্রুতই ‘হক তুয়াহ’ নামে খ্যাতি পান তিনি। সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন এই তরুণী। তিনি জানিয়েছেন, নিজের নামে চালু করা বিতর্কিত ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করে...
৫ দিন আগেরাজনীতি তো বটেই, একের পর এক উদ্ভট কথা আর কাণ্ডের জন্যও আলোচনায় থাকেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বুধবার (২ এপ্রিল) বিশ্বজুড়ে শতাধিক দেশের ওপর পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি। এরপর থেকেই এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা গুরুগম্ভীর আলোচনা, বিশ্লেষণ চলছে। আবার সামাজিক মাধ্যমে চলছে
১৫ দিন আগেচলচ্চিত্রের প্রতি উন্মাদনা যুগ যুগ ধরে। প্রিয় নায়কের, পছন্দের চলচ্চিত্রের পোস্টার ও কার্ড সংগ্রহে রাখার বাতিক অনেকেরই। এমনই একজন সংগ্রাহক যুক্তরাষ্ট্রের রিয়েল এস্টেট এজেন্ট ডুইট ক্লিভল্যান্ড। অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে জমিয়েছেন চলচ্চিত্রের পোস্টার ও লবি কার্ড। এবার তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁর সংগ্র
১৬ মার্চ ২০২৫