Ajker Patrika

বাঁধাকপির গাছ দিয়ে শৌখিন লাঠি!

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২১, ২২: ২৭
Thumbnail image

কপি মানেই নরম কোমল সুস্বাদু সবজি। কিন্তু কপির গাছে চড়ে পাতা সংগ্রহ বা কান্ড দিয়ে লাঠি বানানোর গল্প হজম করা প্রথম ধাক্কায় খুব একটা সহজ হবে না নিশ্চয়ই। ব্রিটেনের এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপে এমন জাতেরই কপি পাওয়া যায়। 

এই কপির কান্ডের নিচের অংশের পাতা গবাদিপশু ও পাখিকে খাওয়ানো হয়। আর ওপরের নরম পাতা ও গুটি রান্না করে খায়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এই কপির কান্ড দিয়ে শক্ত শৌখিন লাঠি তৈরি করা যায়। 

বিক্রির জন্য প্রস্তুত জার্সি কপি স্টিকইউরোপে এই কপি জার্সি বাঁধাকপি নামে পরিচিত। জার্সি বাঁধাকপি (ব্রাসিকা ওলরেসিয়া লংগাটা) ইংল্যান্ডের চ্যানেল দ্বীপপুঞ্জের একটি স্থানীয় জাত। এ দ্বীপপুঞ্জের বৃহত্তম দ্বীপ জার্সির নামেই এই নামকরণ। কান্ড অস্বাভাবিকরকম বড় এবং শক্ত হয়। শৌখিন লোকেরা এই কান্ড দিয়ে হাঁটার লাঠি (ওয়াকিং স্টিক) তৈরি করেন। এক সময় বেশ ভালো দামে এই লাঠি বিক্রি হতো। স্থানীয়দের কাছে এই কপিকে জার্সি পালং বা গোখাদ্যের বাঁধাকপি পরিচিত। 

‘জার্সি বাঁধাকপি’র গাছের গড় উচ্চতা ৬ থেকে ১০ ফুট। তবে পুষ্টি আর আলো জল ঠিকঠাক পেলে ১৮ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। 

ঐতিহ্যগতভাবে জার্সি দ্বীপের বাসিন্দারা এই বাঁধাকপির কান্ড দিয়ে হাঁটার লাঠি তৈরি করতেন। এক সময় প্রতি বছর ৩০ হাজার লাঠি বিক্রি হতো। বিক্রির বেশিরভাগই ছিল রপ্তানি। ফলে দ্বীপবাসীর আয়ের একটি অন্যতম উৎস ছিল এই কপি গাছের লাঠি।

এখনো জার্সি দ্বীপের কিছু শৌখিন পরিবার লাঠি তৈরির সঙ্গে যুক্ত আছেজার্সি বাঁধাকপি খেতের বেড়া দেওয়ার জন্য এবং ঘরের উয়া-বাটাম হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। 

লাঠি তৈরির উদ্দেশ্যে জার্সি দ্বীপবাসীরা কপির কান্ড বড় করতে নিচের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন এবং ডালপালা ছাড়া সোজা বেড়ে ওঠার ব্যবস্থা করেন। প্রাপ্তবয়স্ক গাছ কেটে কান্ডটি সুন্দর করে বার্নিশ করা হয়। এরপর হাতল তৈরি করার জন্য গোড়ার দিকের অংশ আগুনে গরম করে বাঁকানো হয়। অথবা রোপণ করাই হতো এমনভাবে বাঁকিয়ে যাতে মূলের দিকটি প্রাকৃতিকভাবেই হাতলের মতো বেঁকে যায়। 
 
শখের বশে জার্সি কপি চাষ করেন অনেক শৌখিন চাষিএই বাঁধাকপি কিন্তু খাওয়ার জন্যও চাষ করা হতো। এর একেবারে মাথায় ছোট আকৃতির গুটি হয়। এটি নরম ও খাওয়া যায়। তবে গুটি এতই ছোট যে খাওয়ার জন্য চাষ করে পোষাত না। ফলে পশুখাদ্য আর লাঠি তৈরির জন্যই চাষ করা হতো। 

চ্যানেল দ্বীপপুঞ্জে কপির এই জাতটি এখন খুব একটা দেখা যায় না। হাতেগোণা কয়েকটি পরিবার এখনো চাষ করেন। স্থানীয় কৃষিমেলাতে তাঁরা ঝুড়ি ভর্তি করে চকচকে লাঠি বিক্রি করতে আনেন। খরগোশের খাদ্য হিসেবেও অনেকে ব্যক্তিগতভাবে যৎসামান্য চাষ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত