বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উপকূলের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
ফেরিঘাট ও সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয় তড়িঘড়ি করে, যার ফলে স্থাপনাগুলোর কাঠামো ছিল অত্যন্ত নাজুক ও টেকসইহীন। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের একদিনের আঘাতেই ফেরিঘাট এলাকা ও সড়কটি ভেঙে পড়েছে। তাঁরা বলছেন, সরকারের প্রায় ২০০ কোটি টাকার এই প্রকল্প অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণকাজের কারণে পানিতে ভেসে গেল।
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের ফলে ও টানা বৃষ্টিতে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে উপজেলার নদ-নদী ও হাওরে পানি বাড়ছে।
জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া অবস্থায় একটি হরিণ শাবক উদ্ধার করা হয়েছে। দুবলার চর থেকে উদ্ধার করা দুটি হরিণের মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। ধারণা করছি, লবণ পানি খেয়ে বা সাঁতার কাটতে গিয়ে হরিণ দুটির মৃত্যু হয়েছে।’
বাঁধের বিভিন্ন অংশে যে পরিমাণ ভেঙেছে স্বাভাবিক জোয়ারে সম্পূর্ণভাবে বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে সামনে বর্ষাকাল, সে সময় সাগর আরও বেশি উত্তাল থাকবে, জোয়ারের উচ্চতাও বাড়বে কয়েকগুণ। তাই দ্রত সময়ের মধ্যে এটি মেরামত না করলে চরঈশ্বর ইউনিয়নের বেশির ভাগ অংশই সাগরে বিলীন হয়ে যাবে।
টানা দুই দিন বৃষ্টি হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ঘনীভূত হয়ে প্রথমে নিম্নচাপ ও পরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার কারণেই বর্ষা মৌসুমের আগে এমন বৃষ্টি ঝরছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চার দিন ধরে উত্তাল সাগরের ঢেউয়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বরগুনার তালতলী উপজেলার ফাতরার বন। প্রচণ্ড বাতাস ও ঢেউয়ের আঘাতে সাগরঘেঁষা এই বনের কয়েক হাজার গাছ ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে।
প্রবল বর্ষণের কারণে পানির স্রোতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বাস ভেসে যাচ্ছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। ভিডিওটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে। ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্লাবিত এলাকায় তীব্র স্রোত নিচু এলাকায় প্রবাহিত হচ্ছে। নিচু অংশে একটি...
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানান, এখনো মুহুরি নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ভারতের উজানে বৃষ্টিপাত বাড়লে নদীর পানি হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে পরশুরাম উপজেলায় ২১টি এবং ফুলগাজী উপজেলায় ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে বিশেষ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে রাঙামাটিতে সকল ধরনের নৌযান চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক এক জরুরি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ নির্দেশনার কথা জানান।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত ভারী ও অতিভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। এতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
নিম্নচাপ জনিত ঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসে, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে সারা দেশে টেলিযোগাযোগ সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। আজ শুক্রবার সকালে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব ফেসবুকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে বরিশাল বিভাগের সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সর্বশেষ পরিমাপের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে।
গভীর নিম্নচাপের কারণে আজ বৃহস্পতিবার সারা দিন অঝোরে বৃষ্টি ঝরেছে। উপকূলীয় জেলা ও চরাঞ্চলে চার ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। বৃষ্টি কয়েক দিন চলতে পারে, এতে ঢাকার কিছু কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে। তা ছাড়া পাহাড়ধসের শঙ্কার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাব ও টানা বৃষ্টিতে লক্ষ্মীপুরে দুই উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়। বৈরী আবহাওয়ার কারণে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটের ফেরি-লঞ্চ চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও বৃষ্টির প্রভাবে বাগেরহাটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়েছে। সুন্দরবনের ভেতরের নদীগুলোয় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট পানি বেড়েছে। যার ফলে প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবনের দুবলার চর, করমজলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। গতকাল বুধবার (২৮ মে) রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিনব্যাপী
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ও গত তিন দিনের ভারী বৃষ্টিতে বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সারা দিনে সূর্যের দেখা মেলেনি। পানিতে তলিয়ে গেছে আউশের ধানের বীজতলা, মাছের ঘের ও পানের বরজ।