২০২৩ বিশ্বকাপ

আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের ১ লাখ ৩২ হাজার দর্শককে চুপ করিয়ে দেওয়ার হুংকার প্যাট কামিন্স দিয়েছিলেন ফাইনালের আগের দিনই। যেই কথা সেই কাজই গতকাল ফাইনালে করেছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। প্রথমে টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া। বুদ্ধিদীপ্ত কৌশলে ভারতকে অল্প রানে বেঁধে ফেলে শিরোপা জয়ের অর্ধেক কাজ যেন সেখানেই স

টসের সময় রবি শাস্ত্রী দুই দলের অধিনায়ককে এমনভাবে পরিচয় করিয়ে দিলেন, যেন আহমেদাবাদে ক্রিকেট নয়, কুস্তির ফাইনালে নেমেছেন রোহিত শর্মা ও প্যাট কামিন্স। শাস্ত্রীর বলার ধরনটা বেশ ভালোই লাগল অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের। টস জিতে মুচকি হাসি দিয়ে জানিয়ে দিলেন, তাঁর দল শুরুতে বোলিং করতে চায়। 

১০ ম্যাচের ১০টি জিতে ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল ভারত। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে গতকাল ভারত-অস্ট্রেলিয়া ফাইনালের আগে বেশিরভাগেরই ভবিষ্যদ্বাণী ছিল ভারতের পক্ষে। ঘরের মাঠ, চেনা কন্ডিশন, তার ওপর টুর্নামেন্ট জুড়ে ভারতীয় দলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে তাদের এগিয়ে না রাখার কোনো উপায় কি ছিল। 

চার মেরেই অস্ট্রেলিয়াকে শিরোপা জয়ের আনন্দে ভাসাতে চেয়েছিলেন ট্রাভিস হেড। মোহাম্মদ সিরাজের শর্ট বলকে সেভাবেই পুল করেন হেড। কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড় হয়ে বল চলে যায় ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা শুবমান গিলের হাতে। তারপরও আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের গ্যালারি, ভারতীয় ক্রিকেটার-কারোরই ছিল না কোনো উচ্ছ

শচীন টেন্ডুলকার বিশ্বকাপ জিতেছিলেন লম্বা ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে। বিরাট কোহলি ভাগ্যবান—আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখার তৃতীয় বছরে পরেছিলেন বিশ্বজয়ের মুকুট। এক যুগ আগে শচীনকে কাঁধে নিয়ে কোহলির মুম্বাইয়ের পুরো ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ঘুরে বেড়ানো ক্রিকেট বিশ্বেরই আইকনিক দৃশ্য হয়ে আছে।

চোটে পড়ে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নভঙ্গ হতে চলছিল। কিন্তু বিশ্বকাপের আগে ট্রাভিস হেড ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। তাই বাদ না দিয়ে বিধ্বংসী ব্যাটারকে পেতে অপেক্ষা করেছিল অস্ট্রেলিয়া টিম ম্যানেজমেন্ট। সেই আস্থার মূল্য দিলেন তিনি। অজিদের আরেকটি বিশ্বকাপ এনে দিতে রাখলেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। 

মঞ্চটা প্রস্তুত করেই নেমেছিল ভারত। ক্রিকেটের দিক থেকে ধারণক্ষমতায় সর্বোচ্চ স্টেডিয়ামে শিরোপা উদ্‌যাপন করবে তারা। সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন ভারতের দর্শক–সমর্থকেরাও। কিন্তু ১ লাখ ৩০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার আহমেদাবাদে বিপরীত চিত্র দেখল ভারত। 

২৪১ রানের লক্ষ্য। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এ রানে নির্ভর করা রীতিমতো কঠিন ব্যাপার হওয়ারই কথা। তবু আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অসাধারণ কিছুর আশা নিয়ে বোলিং শুরু করে ভারতের বোলিং আক্রমণ। জসপ্রিত বুমরা-মোহাম্মদ শামিদের বোলিং তোপে ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।

বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন মোহাম্মদ শামি। তাঁর দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১২ বছর পর ফাইনালে উঠেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আজ তাই আহমেদাবাদের ফাইনালে খেলার দেখার কথা ছিল তাঁর মা আঞ্জুম আরার। 

এবারের বিশ্বকাপে ব্যাটিংয়ের অনেক রেকর্ডই ভেঙেছেন বিরাট কোহলি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—প্রথম ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির ফিফটি, এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান ও পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। ভারতীয় ব্যাটারের আজও সুযোগ ছিল বেশ কিছু রেকর্ড নিজের করে নেওয়ার। 

অস্ট্রেলিয়াকে ভড়কে দিতে আজ ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে বিধ্বংসী শুরু করেছিল ভারত। মনে হচ্ছিল আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের ফাইনালে পাহাড়সমান রান করে অজিদের চাপে ফেলবে ভারত। তবে ভারতের শুরুর দিকে তোলা ঝড়ের গতি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। দুর্দান্ত বোলিং, ফিল্ডিংয়ে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে অজিরা। নিয়মিত বিরতিতে

আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে চলছে ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল। সমানতালে লড়ছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। রোহিত শর্মার ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দারুণ শুরু পেয়েছিল ভারত। তবে ৩ উইকেট ফিরিয়ে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করে অস্ট্রেলিয়া। 

প্রথম ম্যাচ থেকে শুরু করে সেমিফাইনাল-টানা ১০ ম্যাচ দাপটের সঙ্গে খেলেছে ভারত। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালেও সেই ধারা বজায় রেখেছে ভারতীয়রা। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে গিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছে স্বাগতিকেরা। 

২০১৩ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ের পর আর কোনো বৈশ্বিক শিরোপা জেতা হয়নি ভারতের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ১০ বছরের অপেক্ষা ফুরোনোর মিশনে নামছে ভারত। ১ লাখ ৩২ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে টস হেরে ব্যাটিং পেয়েছে ভারত।

২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল শুরু হতে আর বেশি সময় বাকি নেই। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বেলা আড়াইটায় মুখোমুখি হবে ভারত-অস্ট্রেলিয়া। 

ভারতের বৈশ্বিক শিরোপার প্রসঙ্গ এলে ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির কথা চলে আসে আপনাআপনি। কারণ ১০ বছর আগেই সর্বশেষ আইসিসি ইভেন্টের শিরোপা জিতেছে ভারতীয়রা। এরপর থেকে তাদের গল্পটা হতাশার। যতবার আইসিসি ইভেন্টের নক আউট পর্বে উঠেছে, ভারতকে ফিরে আসতে হয়েছে বারবার। আরও এক ফাইনালে যখন ভারত উঠেছে, তখন ঘুরেফিরে আসছে অ

সব সিলিন্ডারের ছিপি খুলে দিয়ে যেন আকাশে উড়ছে ভারত! কি ব্যাটিং, কি বোলিং, কি ফিল্ডিং—কোনো বিভাগেই কমতি নেই দলটির। ১০০-তে ১০০ নম্বর পেয়েই ফাইনালে উঠেছে ভারত। ভারতীয় দলের এই উদ্ভাসিত পারফরম্যান্সের রহস্য কী? ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মার উত্তর, ‘টিমওয়ার্ক’।