তারাগঞ্জ

দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন গোলাপী বেগম। বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা করিয়েও প্রতিকার পাচ্ছিলেন না। একদিন খোঁজ পান সৈয়দপুরের আজিজুল হক নামে এক ব্যক্তির। তাঁর কাছে চিকিৎসা নেন গোলাপী। চিকিৎসার প্রধান উপাদান ছিল মাশরুম। মাশরুমের তৈরি ওষুধ সেবন করে সুস্থ হয়ে ওঠেন এই নারী।

‘এটে মিসছায়ানা (একটু) দাঁড়ে থাকলে বোঝার পাইমেন এত তাড়াতাড়ি তেল শ্যাষ হইল কেমন করি। একজনে তেলের বোতল নিয়া যাওছে তিনটা-চাইরটা করি। আর হামরা লাইনোত দাঁড়েও তেল পাইনো না। সউগ বেলে শ্যাষ। খালি হাতে বাড়ি যাওছি।’

দ্রব্যমূল্য বাড়লেও মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান। তিনি গতকাল বুধবার তারাগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন।

আমনের পর বোরো ধান চাষের জন্য জমি ফেলে রাখতেন তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের আলমগীরের বাজার গ্রামের কৃষক আরিফ হাসান। তবে এ বছর জমি ফেলে না রেখে ‘বিনা সরিষা-৯’ চাষ করেছিলেন। বোরোর চারা রোপণের আগেই খেত থেকে সেই সরিষা ঘরে তুলেছেন।

তারাগঞ্জের জগদীশপুর গ্রামের ফাত্তাজুল ইসলামকে শ্রমিক ব্যবহার করে এক একর জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণে খরচ করতে হতো ৬ হাজার টাকা। সেই জমিতে এবার তাঁর ব্যয় হয়েছে ২ হাজার টাকা। চারা রোপণের যন্ত্র রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহারের মাধ্যমে তাঁর খরচ এই দুই-তৃতীয়াংশ কমে এসেছে।

খরচ ও শ্রম কম লাগার পাশাপাশি রোগবালাই তেমন না হওয়ায় গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর চরে বাড়ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। চলতি মৌসুমে ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে চরের খেতগুলো। হলুদ ফুলের সৌন্দর্যের সঙ্গে নিজেদের ক্যামেরাবন্দী করতে মাঠে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।

মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হাজীর বাজার কমিউনিটি ক্লিনিক। তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের হাজীরহাট এলাকার প্রায় ছয় হাজার মানুষ এখান থেকে সেবা পান। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি নিজেই পড়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কবলে।

বদরগঞ্জে গৃহবধূ শামসুন্নাহার বেগমকে (২৮) শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ লিচুগাছে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন তাঁর বন্ধু আমিনুর ইসলাম (৪০)। তিনি গত সোমবার রাতে রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেবাংশু কুমার সরকারের আদালতে এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

তারাগঞ্জ উপজেলায় যাতায়াতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পথ তারাগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ সড়ক। সামান্য বৃষ্টিতে এ সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বছরের বেশির ভাগ সময়ই এখানে পানি জমে থাকে। ফলে চলাচলের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় হাজারো মানুষকে।

গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর দমকা বাতাসে দুর্ভোগে পড়েছেন রংপুরের মানুষ। ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না তাঁরা। জনসাধারণে চলাচল কমে যাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে।

কুমড়া খেতে মোজাইক ভাইরাসের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গঙ্গাচড়ার চরাঞ্চলের চাষিরা। বাজারে প্রচলিত কীটনাশক ব্যবহার করেও এ রোগ দমন করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।

তারাগঞ্জ উপজেলার দুই গ্রাম জদ্দিপাড়া ও ডাঙ্গাপাড়া। সদর ঘেঁষা গ্রাম দুটিতে প্রায় ১ হাজার পরিবারের বাস। এখানকার অধিকাংশ মানুষ দিনমজুর। তাঁদের বেশির ভাগের শুধু বসতভিটাই সম্বল। শহরের পাশের এ গ্রামগুলোর মানুষের ভাতের অভাব না থাকলেও মৃতদের নিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তা। লাশ কবর দেওয়া নিয়ে খুবই সমস্যায় পড়তে হয় বাস

ছেলের চিকিৎসা আর নতুন বিয়ে দেওয়া মেয়েকে আসবাবপত্র দেওয়ার জন্য বসতভিটার আংশিক বিক্রি করে ৬০ হাজার টাকা ঘরে রেখেছিলেন তারাগঞ্জের দিনমজুর নজির উদ্দিন। কিন্তু ঘরে আগুন লেগে এই টাকাসহ সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হতে হয় তাঁকে।

লাবণী বেগমকে যদি প্রশ্ন করা হয়, তাঁর কয় সন্তান। এক মুহূর্ত দেরি না করে তিনি জবাব দেন, ২০ জন! ব্যক্তিগতভাবে না চিনলে যে কেউ এই জবাবে বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়বেন।

তারাগঞ্জ উপজেলার যমুনেশ্বরী ও চিকলী নদীর চারটি ঘাটে দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মাণ হয়নি। আশ্বাসেই একমাত্র ভরসা ওই চার ঘাট দিয়ে পারাপার হওয়া ৪৯টি গ্রামের ৬১ হাজার মানুষের। সেতু নির্মাণ না হওয়ায় এ অঞ্চলের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

তারাগঞ্জ উপজেলায় বেড়েছে চুরি। ১৫ দিনের ব্যবধানে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ ছয় জায়গায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

মাঘের শীতে বাঘ পালানোর প্রবাদের সঙ্গে মিলে গেছে রংপুরের নিম্ন-আয়ের মানুষের জীবন। কনকনে শীত আর হিমেল হাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের বাসিন্দারা। তিন দিন ধরে কমছে তাপমাত্রা।