Ajker Patrika

মোজাইক ভাইরাসে বিপাকে চরাঞ্চলের কুমড়াচাষিরা

গঙ্গাচড়া ও তারাগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৫৩
মোজাইক ভাইরাসে বিপাকে চরাঞ্চলের কুমড়াচাষিরা

পূর্ব মহিপুর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেনের মহিপুর শেখ হাসিনা সেতুর পাশে চরের দুই একরের মিষ্টি কুমড়ার খেত বন্যায় নষ্ট হয়ে যায়। নতুন করে বাঁচার তাগিদে স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে ফের রোপণ করেন মিষ্টি কুমড়ার বীজ। এক সময় সবুজে ভরে উঠে তিস্তার চর। গাছ জুড়ে ফল আসে। কিন্তু মিষ্টি কুমড়ার খেতে মোজাইক ভাইরাসের আক্রমণ দেখা দেওয়ায় খেত রক্ষায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন আবুল। বাজারে প্রচলিত কীটনাশক দিয়ে এ রোগ দমন হচ্ছে না।

সরেজমিনে তিস্তার বিভিন্ন চর ঘুরে অন্তত ১০ জন মিষ্টি কুমড়া চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাছে ফুল ও ফল ধরার পর এ রোগ খেতে ছড়িয়ে পড়ে। এ ভাইরাস আক্রান্তের ফলে মিষ্টি কুমড়ার গাছের পাতায় ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। আক্রান্ত পাতায় হলদে বর্ণের দাগ দেখা দেয়। ধীরে ধীরে পাতার আকার ছোট ও অনিয়মিত হয়ে যায়। কচিপাতা সরু হয়ে কুঁকড়ে যায় এবং খসখসে হয়ে যায়।

তিস্তার চর ছালাপাকে কথা হয় কৃষক সহিদার রহমানের সঙ্গে। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘বাবা, মুই এবার ফকির। আড়াই একর জমির কুমড়া এক দিনের বন্যাত ভাসি গেইছে। ফের ধারদেনা করি ওই জমিত কুমড়া নাগাছনু। গাছ দেখি মনে হছলো এবার ভালোই লাভ হইবে। কিন্তু ফল ধরার সময় রোগ ধরি গাছে পাতা কোঁকড়া নাগি শুঁকি যাওছে। ওষুধ দিয়াও কাম হওচে না।’

গান্নারপার চরে কথা হয় বর্গাচাষি ইউসুফ আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, তাঁরও তিন একর জমির মিষ্টি কুমড়ার খেত বন্যায় বালুচাপা পড়ে। নদীর পানি নেমে গেলে পোষা দুটি গরু বিক্রি করে এক লাখ টাকায় সেই জমিতে ফের কুমড়ার চাষ শুরু করেন। খেতের অধিকাংশ গাছেই কুমড়া ধরে। সেই কুমড়া খেতজুড়ে এখন মোজাইক ভাইরাসের হানা। কয়েক দফা কীটনাশক প্রয়োগ করেও এ রোগ দমন করতে পারছেন না তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় নোহালী, কোলকন্দ, সিংগীমারী, গান্নারপার চর, লক্ষ্মীটারী, চর ছালাপাকসহ বেশ কয়েকটি চরে মোট ১১৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে। মোজাইক ভাইরাসটি সাধারণত বীজ থেকে ছড়ায়। লিফ হপারস বা ছোট আকৃতির ফড়িং এই রোগ ছড়াতে সাহায্য করে। জাব পোকা এ রোগের অন্যতম বাহক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রোগ দমনে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। রোগমুক্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ ও আক্রান্ত গাছ খেত থেকে তুলে ফেললে এ রোগ অনেকটাই দমন হয়। এটি ভাইরাসজনিত রোগ। কৃষি শ্রমিক, খেতে ব্যবহৃত সরঞ্জাম দ্বারাও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই কৃষকদের সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কাও ঢাকায় এসিসির সভা বর্জন করল

মুক্তি পেয়ে আ.লীগ নেতার ভিডিও বার্তা, বেআইনি বলল বিএনপি

গাড়ি কেনার টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে মারধর, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে মামলা

সালাহউদ্দিনকে নিয়ে বিষোদ্‌গার: চকরিয়ায় এনসিপির পথসভার মঞ্চে বিএনপির হামলা-ভাঙচুর

যুদ্ধবিমানের ২৫০ ইঞ্জিন কিনছে ভারত, ফ্রান্সের সঙ্গে ৬১ হাজার কোটি রুপির চুক্তি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত