টিসিবি পণ্য

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। প্রতিনিয়তই বাড়ছে তেল, চিনি, ডাল, পেঁয়াজ ও সবজিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম। বাজারে এসব পণ্য কিনতে এসে আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতেই হিমশিম খাচ্ছেন সীমিত আয়ের মানুষ। ফলে অনেকেই বাজারে এসে কেনাকাটা না করে ক্ষোভ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

মৌলভীবাজারে সামাজিক অনুষ্ঠানে খাদ্যের জোগান দিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাকসেল লাইনে দাঁড়াচ্ছেন মানুষ। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে এসব পণ্য কিনছেন দরিদ্রদের সঙ্গে মধ্যবিত্তরাও। আঁতকে ওঠার মতো ঘটনা হলেও এটিই মাঠের চিত্র।

লাগামহীন বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। করোনার ধাক্কা কাটতে না কাটতেই প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের টানাটানির জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। স্বল্প আয়ের অনেক মানুষ বাড়তি দামের বোঝা সামলাতে জেরবার।

লাইন দিচ্ছে টিসিবির পণ্য বিক্রির ট্রাকের পেছনে। কিন্তু সবাই এই সুযোগ নিতে পারে না। টিসিবির সরবরাহ সীমিত। মানুষের গড় আয় বাড়ার গল্প আর মাঠের বাস্তবতা ভিন্ন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রমবর্ধমান দামে নাভিশ্বাস উঠেছে লাখ লাখ মানুষের।

উপজেলার ডিলার ও ক্রেতাদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার থেকে নালিতাবাড়ী পৌর শহরে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়। ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়। বাজারে এক লিটার সয়াবিন তেল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা, চিনি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা ও ডাল ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে টিসিবিতে একজন ক্রেতা এক কেজি ডাল ৬৫ টাকা, দ

পাইকগাছার বিভিন্ন এলাকায় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পক্ষ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারের থেকে কম দামে পাওয়ায় টিসিবির পণ্য কিনতে ভিড় করছেন শত শত উপজেলাবাসী।

ভোগ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সারা দেশের মতো মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে বিক্রি হচ্ছে ন্যায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য। এর ফলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে ও সাধারণ আয়ের মানুষের সহায়তার জন্য টিসিবি কর্তৃক সারাদেশব্যাপী মহানগর, জেলা ও উপজেলায় ৪০০-৪৫০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে টিসিবির পণ্য আজ বুধবার থেকে বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়ে আগামী ২৮ নভেম্বর (শুক্রবার ছাড়া) পর্যন্ত চলবে।

বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী মাসেও টিসিবির নিত্যপণ্য বিক্রি চালিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আবারও এ কার্যক্রম চালু হতে পারে বলে উল্লখ করেন তিনি। 

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য নিয়ে ট্রাক আসবে সকাল ১০টার পর। কিন্তু সূর্য ওঠার আগেই বিভিন্ন পয়েন্টে নারীদের লাইন। গাড়ি না আসা পর্যন্ত তাঁরা অপেক্ষায় থাকেন। কিন্তু ডাল, চিনি, তেল কিনে সবাই বাড়ি নিয়ে যান না। অনেকেই দোকানে দোকানে বিক্রি করে টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরেন।

সাধারণ মানুষের নিত্যপণ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাকসেলের মাধ্যমে যে পণ্য বিক্রি, সেখানেও ভিআইপি লাইন তৈরি হওয়াটা বিস্ময়করই বটে। কিন্তু হয়েছে তাই। নওগাঁর বদলগাছিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরই টিসিবির গাড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকেরা পণ্য দিতে ব্যস্ত থাকেন। 

কল্যাণপুরে প্রায় এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আনোয়ার হোসেন। গতকাল বুধবার সকালে তিনি জীবনে প্রথম টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে আসেন। হঠাৎ করে নিম্ন আয়ের মানুষের বাজারে ভাগ বসিয়েছেন বলে কথা বলতে বেশ লজ্জা পাচ্ছিলেন এই চাকরিজীবী।

কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে দোকানপাট বন্ধ। নিত্যপণ্যের দামও বেড়ে গেছে। এর মধ্যে টিসিবির ট্রাক থেকে বাজারের চেয়ে কম দামে পণ্য কিনে বেশ খুশি ক্রেতারা। চিনি ও ডালের দাম নিয়ে আপত্তি না থাকলেও তেলের দাম আরেকটু কমানোর দাবি তাঁদের।

কঠোর লকডাউনে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে মানুষের জীবন-জীবিকা। বন্ধ হয়ে গেছে হাজার হাজার মানুষের আয়-রোজগারের পথ। এ অবস্থায় করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় নতুন করে হুমকির মুখে পড়েছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষজন।