Ajker Patrika

সমুদ্রতলে সাবমেরিন কেব্‌ল বসাতে চিলির সঙ্গে গুগলের চুক্তি

অনলাইন ডেস্ক
চিলিতে গুগলের অন্যতম বৃহৎ ডেটা সেন্টার অবস্থিত। ছবি: এবিসি নিউজ
চিলিতে গুগলের অন্যতম বৃহৎ ডেটা সেন্টার অবস্থিত। ছবি: এবিসি নিউজ

গুগল ও চিলি সরকার একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে সই করেছে, যার আওতায় দক্ষিণ আমেরিকা, এশিয়া ও ওশেনিয়া মহাদেশকে যুক্ত করতে একটি সাবমেরিন ফাইবার অপটিক কেব্‌ল স্থাপন করা হবে। ২০২৭ সালের মধ্যে ‘হুম্বোল্ড কেব্‌ল’ নামের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কেব্‌লটি চিলির উপকূলীয় শহর ভালপারাইসো থেকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। সেই সঙ্গে এটি ফরাসি পলিনেশিয়া অতিক্রম করবে। প্রস্তাবিত এই কেব্‌লের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১৪ হাজার ৮০০ কিলোমিটার (৯ হাজার ২০০ মাইল)।

২০১৬ সালে প্রথমবার প্রকল্পটির পরিকল্পনা করা হয় এবং এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাথমিক গবেষণা শুরু হয় ২০১৮ সালে। চিলির পরিবহনমন্ত্রী হুয়ান কার্লোস মুনিওস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এটি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের প্রথম সাবমেরিন কেব্‌ল। তাই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার।’

চিলি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রসহ লাতিন আমেরিকার অন্য দেশগুলোর সঙ্গে একটি বিদ্যমান সাবমেরিন কেব্‌লের মাধ্যমে সংযুক্ত। তবে অন্য মহাদেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে বিদ্যমান কেব্‌লগুলোকে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়।

চিলিতে গুগলের অন্যতম বৃহৎ ডেটা সেন্টার অবস্থিত। চুক্তির মাধ্যমে দেশটি ডিজিটাল হাবে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এতে চিলি ও অস্ট্রেলিয়ার প্রযুক্তি, খনি এবং ব্যাংকিং খাতে কয়েক কোটি ডলার বিনিয়োগ আকৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের লাতিন আমেরিকার টেলিকমিউনিকেশন অবকাঠামোর পরিচালক ক্রিস্টিয়ান রামোস বলেন, ‘এই কেব্‌ল শুধু গুগলের জন্য নয়, বরং চিলিতে কার্যরত অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানিও এটি ব্যবহার করতে পারবে।’

যদিও গুগল প্রকল্পে তাদের মোট বিনিয়োগের পরিমাণ জানায়নি, তবে স্থানীয় অংশীদার ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অবকাঠামো কোম্পানি ‘ডেসারোলো পাঈস’-এর ব্যবস্থাপক পাত্রিসিও রে জানিয়েছেন, এই কেব্‌লের মোট দাম প্রায় ৩০ থেকে ৫৫ কোটি মার্কিন ডলার হতে পারে। এর মধ্যে চিলি সরকার ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার দেবে।

এই ‘হুম্বোল্ড কেব্‌ল’ চিলিকে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য একটি ডেটা গেটওয়েতে পরিণত করবে। বিশেষ করে চীনের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। চীন বর্তমানে চিলির সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার।

ক্লাউড কম্পিউটিং সেবার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাবমেরিন কেব্‌লের গুরুত্ব বহুগুণ বেড়েছে।

এই প্রকল্পের পরবর্তী ধাপগুলো হলো কেব্‌ল স্থাপন, টেলিযোগাযোগ অপারেটর নির্বাচন ও চুক্তিবদ্ধকরণ এবং চিলিতে ল্যান্ডিং স্টেশন নির্মাণ।

তবে, এই প্রকল্প ভূরাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। কারণ, চীন ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে চলমান বৈরিতার মাঝে চিলির এই অবস্থান ভবিষ্যতে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, সাবমেরিন কেব্‌ল দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক বিরোধের স্পর্শকাতর ইস্যু হয়ে আছে।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স ও এপি নিউজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত