Ajker Patrika

মনের আনন্দে খেলে গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার স্বপ্ন

নাজিম আল শমষের, ঢাকা
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১১: ৩৯
মনের আনন্দে খেলে গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার স্বপ্ন

গত বছরের শেষ দিনে জাতীয় জুনিয়র (অনূর্ধ্ব-২০) দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছিল ক্যান্ডিডেট মাস্টার সাকলাইন মোস্তফা সাজিদ। এক সপ্তাহ পার হওয়ার আগেই ১৩ বছর বয়সী সাকলাইন আবার খবরের শিরোনাম ওয়ালটন আন্তর্জাতিক রেটিং দাবার শিরোপা জেতে। ২০২৩ সালের শেষ ও ২০২৪ সালের শুরুতে বাংলাদেশের দাবা এখন পুরোটাই সাকলাইনময়।

শিরোপা দিয়ে সাকলাইনের মাহাত্ম্য বোঝানো কঠিন। আন্তর্জাতিক রেটিং দাবার টুর্নামেন্টে খেলেছেন বাংলাদেশের দুই গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান ও রিফাত বিন সাত্তার। ছিলেন একজন আন্তর্জাতিক মাস্টার, একাধিক ফিদে মাস্টার। সবাইকে পেছনে ফেলে একজন ক্যান্ডিডেট মাস্টার হিসেবে সাকলাইনের এই শিরোপাজয় চমকে দিয়েছে বাংলাদেশের দাবাকে। গতকাল টুর্নামেন্টের শেষ দিনে ৯ ম্যাচে সাড়ে ৭ পয়েন্টে শিরোপা জিতেছে সাকলাইন। সমান পয়েন্ট ছিল গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়ারও। দুজনের সমান পয়েন্ট হওয়ায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকে। সেখানে প্রথমবারের মতো গ্র্যান্ডমাস্টারকে বধ সাকলাইনের।

ছাত্রের এমন সাফল্য অবশ্য অবাক করছে না কোচ আবু সুফিয়ান শাকিলকে। আন্তর্জাতিক মাস্টার শাকিল বরং বুঁদ হয়ে আছেন শিষ্যের দুর্দমনীয় পারফরম্যান্সে। ২০২০ সালে বিশ্ব যখন করোনা মহামারিতে থমকে, তখনই সাকলাইনকে আবিষ্কার করেছিলেন তিনি। লকডাউন উঠে গেলে সেই বছরের অক্টোবরে পাবনা থেকে সাকলাইনকে ঢাকায় এনে দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। সাকলাইনের বাংলাদেশ পুলিশ দলের হয়ে খেলার সুযোগটাও এসেছে শাকিলের হাত ধরে। শিষ্যও গুরুকে হতাশ করেনি। অল্প সময়ে রেটিংয়ের বিশাল লাফে ক্যান্ডিডেট মাস্টার থেকে ফিদে মাস্টার হওয়ার খুব কাছে চলে এসেছে সাকলাইন। ঢাকায় যখন এসেছিল, নিজে নিজে খেলে তার রেটিং ছিল ১৩৬০। তিন বছরে রেটিং বেড়ে হয়েছে এখন ২২০০।

আন্তর্জাতিক মাস্টার শাকিল পেশাদার খেলা ছেড়ে এখন পুরোদস্তুর কোচ। নিজের গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার স্বপ্ন বিসর্জন দিলেও ছাত্রকে দিয়ে সেই স্বপ্ন পূরণ করতে চান তিনি, ‘সাকলাইনের এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সমর্থন। বাংলাদেশ পুলিশ এখন যেভাবে ওকে সমর্থন দিচ্ছে, সেটা আর পাঁচ বছর ধরে রাখতে পারলে ওর গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া নিশ্চিত। ওর চিন্তাভাবনা বেশ পরিষ্কার, ভীষণ মেধাবী। আমার ছাত্র গ্র্যান্ডমাস্টার হতে পারলে সেটা আমার জন্য হবে গর্বের।’

সাকলাইনের শিরোপাজয়ের খবরে গতকাল ফেডারেশনে ছুটে আসেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি শোয়েব রিয়াজ আলম। এই দাবাড়ুর হাতে তুলে দেন একটি ল্যাপটপ ও ১৫ হাজার টাকা। শিরোপা জেতার পর এই প্রাপ্তিতে যেমন খুশি রাজারবাগ পুলিশ লাইনস স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সাকলাইন, এর চেয়ে বেশি খুশি কোচের মুখে প্রশংসা শুনে, ‘বিশ্বাস হচ্ছিল না, এত বড় একটা টুর্নামেন্ট জিতেছি। কোচ আমাকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখেছেন, তাতে আমি খুশি। আমি চাই মনের আনন্দ নিয়ে খেলতে। চাপ ছাড়া খেলে কোচের স্বপ্ন পূরণ করতে পারলে খুশি হব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত