Ajker Patrika

হৃদযন্ত্রের চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষে বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনার

ক্রীড়া ডেস্ক
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০১: ১১
Thumbnail image

লুসাইলের আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ফাইনাল যেন থ্রিলার মুভিকেও হার মানিয়েছে। প্রতি মুহূর্তেই ম্যাচের বাঁক বদলেছে প্রতি মিনিটে। শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকারে গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজের নৈপুণ্যে শিরোপা জিতল আর্জেন্টিনা। ৩৬ বছর পর শিরোপাখরা ঘুচল আকাশি-নীলদের।

ম্যাচের শুরু থেকেই প্রেসিং ফুটবল খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। ৩ মিনিটে  রদ্রিগো ডি পলের আক্রমণ প্রতিহত করেছিলেন ফ্রান্সের গোলরক্ষক হুগো লরিস। যদিও তা অফসাইড ছিল। এরপর ৮ মিনিটে কর্নার পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। কর্নার থেকে মেসির শটের পর ক্রিস্টিয়ান রোমেরো ফাউল করেন লরিসকে। ফ্রান্সের গোলরক্ষক ব্যথা পেয়েছিলেন বলে ২ মিনিট বন্ধ ছিল। ১৩ মিনিটের সময় কিলিয়ান এমবাপ্পে সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। ১৯ মিনিটে ফ্রান্স আরও একটা গোলের সুযোগ পেয়েছিল। তবে হেড ঠিকঠাক সংযোগ করতে পারেননি অলিভিয়ার জিরু। 

প্রেসিং ফুটবল খেলতে থাকা আর্জেন্টিনা গোলের দেখা পায় ২২ মিনিটে। ২১ মিনিটে দি মারিয়াকে ফাউল করেন ওসমান দেম্বেলে। ২২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে লরিসকে বোকা বানিয়ে গোল করেন মেসি। ৩৬ মিনিটে ম্যাচের দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় আলবিসেলেস্তেরা। ক্রিস্টিয়ান রোমেরোর পাস থেকে মেসি, এরপর মেসি পাস দেন অ্যালেক্সিস ম্যাক আলিস্টারকে। অ্যালিস্টারের পাস রিসিভ করে  লরিসকে ‘ওয়ান-টু-ওয়ান’ সুযোগে গোল করেন দি মারিয়া। ২ গোলে পিছিয়ে থেকে ফ্রান্স গোল করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এমনকি ৪০ মিনিটের সময় জিরু, দেম্বেলে-দুজনকেই উঠিয়ে নেন দিদিয়ের দেশম। তবে ফ্রান্স প্রথমার্ধে কোনো গোল করতে পারেনি। ২-০ তে এগিয়ে থেকে প্রথম ৪৫ মিনিট শেষ করে আকাশি-নীলরা।  

টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে ২–১ গোলে হেরে সমর্থকদের আশ্বস্ত করেছিলেন মেসি। বলেছিলেন তাঁর ওপর ভরসা রাখতে। ছবি: এএফপিদ্বিতীয়ার্ধেও শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। ৪৯ মিনিটে দি মারিয়ার পাস থেকে ভলিতে শট করেছিলেন দি পল। তবে লরিস তা ঠেকিয়ে দেন। ২ মিনিট পর আঁতোয়া গ্রিজমান শট নিলেও তা সোজা এমিলিয়ানো মার্তিনেজের হাতে তুলে দেন। ৬০ মিনিটে আরও একবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। তবে মেসি লক্ষ্য বরাবর শট নিতে পারেননি। ৬২ মিনিটে ম্যাক অ্যালিস্টার সুযোগ পেয়েও  কাজে লাগাতে পারেননি।

টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে ২–১ গোলে হেরে সমর্থকদের আশ্বস্ত করেছিলেন মেসি। বলেছিলেন তাঁর ওপর ভরসা রাখতে। ছবি: এএফপি৬৭ মিনিটের সময় ফ্রান্সের আক্রমণ জোরালো হয়ে ওঠে। ৮০ মিনিটে গোলের দেখা পায় ফ্রান্স। পেনাল্টিতে গোল করে ব্যবধান কমান এমবাপ্পে। ঠিক তার পরের মিনিটে সমতায় ফেরে ফ্রান্স। মার্কাস থুরামের পাস থেকে দারুণ ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন এমবাপ্পে। ৮৩ মিনিটে ফ্রান্সকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন কুলু মুয়ানি। তবে হেড ঠিকঠাকমতো কাজে লাগাতে পারেননি।  ৯০ মিনিটের পরে আক্রমণ আরও জোরালো হয়ে ওঠে। অতিরিক্ত  ৪ মিনিটের সময় এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার পাস থেকে শট করেছিলেন রাবিও। তবে অসাধারণ দক্ষতায় নিশ্চিত গোল ঠেকিয়ে দেন মার্তিনেজ। ৬ মিনিটের সময় ডি বক্সের বাইরে থেকে এবার সজোরে শট করেছিলেন মেসি। তবে লরিস তা ঠেকিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত ৯০ মিনিট ২-২ সমতায় থেকে শেষ হয়। 

টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনার জয়অতিরিক্ত সময়ে গেলে খেলা আরও জমে ওঠে। ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা দুই পক্ষই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে। ১০৪ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েও এগিয়ে যেতে পারেনি আর্জেন্টিনা। লাউতারো মার্তিনেজ লক্ষ্য বরাবর শট নিয়েছিলেন। তবে তা ফরাসি ডিফেন্ডার দায়োত উপামেকানো ঠেকিয়ে দেন। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ১১৩ মিনিটে লাউতারোর জোরালো শট প্রথমে ঠেকিয়ে দেন লরিস, ফিরতি সুযোগে বল জালে জড়ান মেসি। ১১৬ মিনিটে  পেনাল্টি থেকে ম্যাচের ফল ৩-৩ করেন এমবাপ্পে।  

১২০ মিনিটে ৩-৩ সমতায় শেষে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। প্রথম শট নিয়েই গোল করেন এমবাপ্পে। এরপর গোল করেন মেসি। টাইব্রেকারে ১-১ সমতার পর ফ্রান্সের কিংসলে কোমান, অরিলিয়ে চুয়ামেনি-এই দুজনের শট ঠেকিয়ে দেন মার্তিনেজ। আর গঞ্জালো মন্তিয়েলের গোলে শেষ হাসি আর্জেন্টিনার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত