Ajker Patrika

অবসরে সাফজয়ী স্বপ্না, বিদায় নিতে চান কোচ ছোটনও

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ মে ২০২৩, ১৫: ৪০
Thumbnail image

বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের আক্রমণভাগের ভরসা ছিলেন সিরাত জাহান স্বপ্না। নেপালে নারী ফুটবল দলকে সাফ শিরোপা এনে দেওয়ার পেছনে ছিল তাঁর প্রত্যক্ষ অবদান। ফুটবলে ফর্মের চূড়ান্ত শিখরে থাকা অবস্থায় হঠাৎ করেই ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন ২২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড স্বপ্না!

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আজ শুক্রবার দুপুরে আকস্মিকভাবে পেশাদার ফুটবলকে বিদায়ের কথা লেখেন স্বপ্না। দারুণ ফর্মে থাকা অবস্থায় কেন ফুটবলকে বিদায় সেই প্রশ্নের জবাবে স্বপ্না বললেন, ‘কোনো কারণ নেই!’

স্বপ্না বলেন, ‘অনেক দিন তো ফুটবল খেললাম। এখন পরিবারকে সময় দেব। ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসে অনেক ভেবেচিন্তে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যে কারণই জিজ্ঞেস করেন না কেন, আমি কিছু বলব না।’ 

চোট নাকি অভিমান, অবসরের কারণ কী সেই প্রশ্নেরও উত্তর দেননি স্বপ্না, ‘ইনজুরি বা কোনো চোটের কারণে নয়। আমি পুরোপুরি ফিট আছি। ক্যাম্পে হার্ড ট্রেনিং চলছিল, সেখানেও ভালো অনুশীলন করেছি। অবসরের কোনো কারণ বলতে পারব না।’ 

নিজ ইচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছেন বলে জানালেন নারী সাফে চার গোল করা স্বপ্না। অবসরের পর আর ফুটবলেও জড়িত হবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘আমি নিজ ইচ্ছায় পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর নিলাম। প্রায় আট বছর পেশাদার ফুটবল খেলার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। ফুটবল ক্যারিয়ারে আসার পর আমি অনেক কিছু পেয়েছি। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি। খেলার সুবাদে অনেকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে। তাই জেনে বা না জেনে যদি কারও মনে কষ্ট দিয়ে থাকি প্লিজ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন…। এবং সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন...’

নেপালের কাঠমান্ডুতে হওয়া গত সাফে গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ৬-০ গোলে জেতা ম্যাচে একবার জালের দেখা পেয়েছিলেন স্বপ্না। 

গ্রুপ পর্বেই ভারতের বিপক্ষে জাতীয় দলের পাওয়া ‘প্রথম’ জয়ে জোড়া গোল করেছিলেন তিনি। ভুটানের বিপক্ষে সেমি ফাইনালেও করেন এক গোল। চোটের কারণে নেপালের বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে জেতা ফাইনালে পুরোটা খেলতে পারেননি তিনি। 

কোনো কারণের কথা না বললেও ফুটবল নিয়ে যে অভিমান তৈরি হয়েছিল, সেটাই যেন ইঙ্গিত করলেন স্বপ্না। স্বপ্না কেন অবসরে গেলেন—সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে যোগাযোগ করা হয় নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের সঙ্গে। উত্তরে তিনি দিলেন বিস্ফোরক তথ্য। জানালেন ৩১ মের মধ্য অবসরে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে তাঁরও। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেছেন, ‘নারী ফুটবলে কোনো ভবিষ্যৎ দেখছি না। প্রতিদিনই কাজের চাপ বাড়ছে, জবাবদিহি করতে হয় প্রতিনিয়ত। আমার কোনো ব্যক্তিগত জীবন নেই, পরিবার নেই। মাঠে খেলা না থাকায় মেয়েরাও এই কারণেই ফুটবল ছাড়ছে।’

কোচের কথাতেই স্পষ্ট, ফুটবল নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত নারী ফুটবলাররা। শঙ্কা তৈরি হয়েছে নারী ফুটবলারদের ভেতরেও। গত জানুয়ারিতে অবসরে যান জাতীয় দলের দুই ফুটবলার আনুচিং মগিনি ও সাজেদা খাতুন। অবসরে গেছেন বয়সভিত্তিক দলের ফুটবলারও। মাঠে নেই নিয়মিত টুর্নামেন্ট। এই মে মাসেই নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের কথা বলেও ভালোই ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে রেখেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত