Ajker Patrika

সান্ত্বনার ম্যাচ জিতে তৃতীয় ক্রোয়েশিয়া 

সান্ত্বনার ম্যাচ জিতে তৃতীয় ক্রোয়েশিয়া 

হয়তো সান্ত্বনা থেকেই! ম্যাচ শেষ হওয়ার পর মাঠে আনন্দে ভাসতে দেখা গেল ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলারদের। তিন দিন আগেও যার মুখ ছিল শুকনো সেই লুকা মদরিচও হাসলেন ফাইনালে খেলতে না পারার দুঃখ ভুলে। অন্য প্রান্তে মরক্কোর ক্ষুব্ধ ফুটবলাররা ঘিরে ধরলেন রেফারিকে। সবার চোখে ক্লান্তি আর হতাশা। কে বলবে এটা বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ!

বিশ্বকাপে এই একটা ম্যাচ নিয়েই সম্ভবত খুব বেশি কাউকে মাথা ঘামাতে দেখা যায় না। এই ম্যাচের হার-জিত তেমন কোনো পার্থক্য গড়ে না, ফল নিয়ে আবেগে ভাসতে দেখা যায় না সমর্থকদের। মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই তো বলেই দিয়েছিলেন বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচটা ‘বিরক্তিকর’। ফাইনালে খেলতে না পারার হতাশা নিয়ে কোনো দলই বা তৃতীয় হতে চায়!

বিরক্তি থাকুক কিংবা অনিচ্ছা; খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ভিন্ন এক চিত্রই দেখা গেল। শেষ পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি একটা লড়াই হলো দুই দলের। তবে হতাশা এবারও ছাড়ল না মরক্কোকে। রেগরাগুইয়ের দল হেরে গেল ২-১ গোলে। ১৯৯৮ বিশ্বকাপের পর আবারও তৃতীয় হয়ে কাতার অভিযান শেষ হলো আগের আসরের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়ার।

অবশ্য এই হারে মরক্কোর গৌরব এতটুকুও কমছে না। প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে তৃতীয় হওয়ার গৌরবটুকুই হয়তো দাবি ছিল অ্যাটলাস সিংহদের। স্টেডিয়ামভর্তি করে আজকেও মাঠে এসেছিলেন মরক্কান সমর্থকেরা। চোখে পানি নিয়ে এখন দেশে ফিরতে হবে তাদের।

সেমিফাইনালে বাদ পড়ে যাওয়া দুই দলের জন্য তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ অনেকটা মান বাঁচানোর লড়াই। খেলায় গুরুত্ব কম থাকায় মরক্কোর শুরুটা ছিল নড়বড়ে। আর সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে ৭ মিনিটেই গোল ক্রোয়েশিয়ার। লোভরো মায়ের ফ্রি-কিক থেকে প্রথমে বলে হেড নেন ইভান পেরিসিচ। মরক্কোর ঠিক গোলমুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেন্টারব্যাক ইওস্কো গাভারদিওল। পেরিসিচের হেডে নিখুঁত লক্ষ্যে বল জালে পাঠিয়ে দেন ক্রোয়াট ডিফেন্ডার।

গোল খাওয়ার পরই জেগে উঠল মরক্কো। জবাবটা এল দুই মিনিট পরেই এবং এক ডিফেন্ডারের গোলে। হাকিম জিয়েশের ফ্রি-কিকে একদম অরক্ষিত অবস্থায় বল পান আশরাফ দারি। অফসাইড ভেবে খানিকটা দ্বিধার মধ্যে ছিলেন ক্রোয়েশিয়ান খেলোয়াড়েরা। এমন সুযোগ নষ্ট করেননি দারি, জিয়েশের সেটপিস থেকে হেডে দলকে এনে দেন সমতা।

ক্রোয়েশিয়ার সামনে আবারও এল ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ। ২৪ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে জোরের সঙ্গে শট নেন বিশ্বকাপে সম্ভাব্য শেষ ম্যাচ খেলতে নামা লুকা মদরিচ। গতি থাকায় বলকে গ্লাভসে নিতে ব্যর্থ হোন মরক্কো গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনু। ফিরে আসা বলে শট নিয়েছিলেন ইভান পেরিসিচও কিন্তু সাফল্য পাননি।

তবে ৪২ মিনিটে আর হতাশ হতে হয়নি ক্রোয়াটদের। মরক্কোর ডি-বক্সের ভেতর দলীয় বোঝাপড়ায় মায়ের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান প্রান্তে মিসলাভ অরসিচের দিকে বাড়ান মার্কো লিভায়া। ডান প্রান্ত থেকে বাঁ পোস্টে শট নেন অরসিচ। বল বুনুর মাথার ওপর দিয়ে পোস্টে লেগে জড়ায় জালে। 

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে গতি থাকলেও আর গোল পায়নি কোনো দলই। ৭৪ মিনিটে দুই দলই পাল্টাপাল্টি পেনাল্টির দাবি তুলেছিল কিন্তু রেফারি তাতে সায় দেননি। ৭৫ মিনিটে দারুণ এক সেভে মরক্কোকে সমতায় ফিরতে দেননি ক্রোয়াট গোলরক্ষক দমিনিক লিভাকোভিচ। লিভাকোভিচকে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি ইউসুফ এন-নেসরি। শেষ সময়ে ইয়াহিয়া আত্তিয়াতের হেড অল্পের জন্য খুঁজে পায়নি জাল। স্পেন, পর্তুগালকে হারিয়ে এত দূর আসা মরক্কোর বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হলো চতুর্থ হওয়ার মধ্য দিয়ে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত