Ajker Patrika

দুই প্রিয় সন্তান মেসি-দি মারিয়ার জন্য গর্বিত রোজারিও

আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২২, ১১: ৫৮
দুই প্রিয় সন্তান মেসি-দি মারিয়ার জন্য গর্বিত রোজারিও

এমন আনন্দে শেষ কবে মেতেছিল আর্জেন্টাইনরা? গত পরশু হাজার মাইল দূরে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়াম যেন হয়ে উঠেছিল এক টুকরো আর্জেন্টিনা। চারদিকে আকাশি-নীল জার্সিতে ভরে গিয়েছিল চারপাশ। ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয় কী কম কথা! রোমাঞ্চকর ফাইনালে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে নিজেদের তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মেতেছে আর্জেন্টিনা। 

শিরোপা জয়ের পরপরই রাজধানী বুয়েনেস এইরেস হয়ে ওঠে উৎসবের নগরী। লাখ লাখ মানুষ নেমে আসে রাস্তায়। বুয়েনস এইরেস থেকে কাতার—কোথায় ছিল না উৎসব ও হাসির ঢল! তবে আর্জেন্টিনার শহর রোজারিওর মানুষ কেঁদেছে। এ যে মায়ের কান্না! সন্তানের বিশ্বজয়ে মায়ের আনন্দ অশ্রু। 

রোজারিওর দুই সন্তান লিওনেল মেসি ও আনহেল দি মারিয়া। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয় এই দুজনের জাদুতে। ফাইনালেও গোল পেয়েছেন তাঁরা। এমন সন্তানদের নিয়ে গর্ব না করে কি পারেন মা? দুই প্রিয় পুত্রের আনন্দে আবেগতাড়িত হয়েছেন রোজারিওর অধিবাসীরা। শহরটির বাসিন্দা মারতুন রেইনা নামে একজন এএফপিকে বলেছেন, ‘এই জাতীয় দলের শিরোপা প্রাপ্য। মেসি কখনো চেষ্টা ছাড়ে না। সে অসাধারণ মানুষ।’ 

ফাইনাল ম্যাচ শেষ হওয়ার পরপরই কান্নায় ভেঙে পড়েন রোজারিওর ঐতিহ্যবাহী এল কাইরো বারে খেলা দেখতে বসা লোকজন। গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ, যাঁকে সবাই ডাকে ‘দিবু’ নামে, তিনি যখন পেনাল্টি শুটআউটে ফ্রান্সের শট রুখে দেন, তখন তাঁরা লিওনেল স্কালোনির শিষ্যদের নামে হর্ষধ্বনিতে ফেটে পড়েন। শিরোপাজয়ের পর উদ্‌যাপনে মেতে ওঠেন কেউ কেউ। কেউ কেঁদেছেন, প্রার্থনায় বসেছেন। উল্লাস ও কান্না যেন মিলেমিশে যাচ্ছিল তাঁদের চোখেমুখে। 

ফাইনালে দি মারিয়ার জাদুতে প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। তার একটি পেনাল্টি থেকে করেন মেসি, অন্যটি দি মারিয়ার। তবে ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার আগেই কিলিয়ান এমবাপ্পের এক মিনিটের জাদুতে সমতায় ফেরে ফ্রান্স। অতিরিক্ত সময়ে ফের লা আলবিসেলেস্তেদের এগিয়ে দেন মেসি। কিন্তু পেনাল্টি থেকে গোলটি শোধ দিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন এমবাপ্পে। টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচে মেসি জাল খুঁজে নেন। কিন্তু ফ্রান্স হারে এই স্নায়ুযুদ্ধে। গোলরক্ষক মার্তিনেজের নৈপুণ্যে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ শিরোপার স্বাদ পায় আর্জেন্টিনা। 

ফাইনালে দুর্দান্ত খেলেছেন মেসি ও দি মারিয়া। দুজনের জন্ম আর্জেন্টিনার শহর রোজারিওতে। তাঁদের বীরত্বে আনন্দের ঢল সেখানে। মেসি ও দি মারিয়াকে নিয়ে গর্বিত ৩১ বছর বয়সী এমিলিয়ানো গামারা। তিনি আয়ারল্যান্ডের এক রেস্টুরেন্টে কাজ করেন। তবে বিশ্বকাপ দেখার জন্য সম্প্রতি ফেরেন নিজের বাড়ি রোজারিওতে। তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বকাপ জয় অসাধারণ, আপনি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবেন না। মেসি রোজারিওর সন্তান। দি মারিয়া রোজারিওর। তারা আজ (গত পরশু) গোল করেছেন এবং আমাদের শিরোপা এনে দিয়েছেন।’ 

মেসির জন্ম ১৯৮৭ সালে, রোজারিওতে। ছোটবেলায় তিনি যোগ দেন নিউওয়েলস ওল্ড বয়েস ক্লাবে। দি মারিয়ার জন্মও একই শহরে, ১৯৮৮ সালে। তাঁর শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রাল। এই দুই রোজারিয়ানের জাদুতে বিশ্বকাপের অপেক্ষার অবসান হলো আর্জেন্টাইনদের। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত