Ajker Patrika

‘মানুষ বুঝতে পারছে, কেন ভয় পাই না’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার। ছবি: সংগৃহীত

নারী দলের কোচ হিসেবে পিটার বাটলারের শুরুর পথ মসৃণ ছিল না। চায়নিজ তাইপের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু। এরপর সাফের শিরোপা ধরে রাখলেও খুব একটা কৃতিত্ব পাননি। আনন্দের সময়েও সিনিয়র ফুটবলারদের অভিযোগের তিরে বিদ্ধ হতে হয় তাঁকে। এমনকি বিদ্রোহের ডাকও দেন ১৮ ফুটবলার।

বাটলার অবশ্য হার মানেননি। অটল ছিলেন নিজের অবস্থানে। শৃঙ্খলার ব্যাপারে ছাড় দেবেন না একটুও। টালমাটাল সেই সময় পেরিয়ে বাটলার এখন সবার ‘প্রিয়’ হয়ে উঠেছেন। তাঁর ‘কড়া হেডমাস্টার’ চরিত্র সাফল্যের অন্যতম অনুষঙ্গ, তার প্রমাণ দিয়ে চলেছেন। বাটলারের অধীনে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপ খেলার সুযোগ পেয়েছে জাতীয় দল।

বয়সভিত্তিক দল নিয়ে বাটলারের অন্যরকম আগ্রহ। হয়তো খেলোয়াড় গড়ে তোলার কাজটা তিনি পছন্দ করেন বলে। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত গেম টাইম দেওয়া মূল লক্ষ্য ছিল, শিরোপা নয়। শুনে কিছুটা অবাক লাগবে। শিরোপায় চোখ না রেখেও বাটলার ঠিকই বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন শিরোপা। সুযোগ করে দিয়েছেন তৃষ্ণা রানী, শান্তি মার্দি, নবীরণ খাতুনদের জ্বলে ওঠার। প্রতি ম্যাচে সাজিয়েছেন ভিন্ন একাদশ। গেম টাইম নিয়ে তাই ২৩ ফুটবলারের কারও অভিযোগ থাকার সুযোগ নেই।

আজকের পত্রিকাকে বাটলার বলেন, ‘সব খেলোয়াড় নানাভাবে খেলার সুযোগ পেয়েছে। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলার নীতি কারও পছন্দ, আবার কেউ দ্বিমত পোষণ করে। তবে এখন মানুষ বুঝতে পারছে, কেন আমি পরিবর্তনে কোনো ভয় করি না। সেটা যে খেলোয়াড়ই হোক না কেন।’

নেপালের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ৪-০ গোলের জয়ে শিরোপা নিশ্চিতের পরই ফুটবলাররা ছুটে গেলেন বাটলারের কাছে। তাঁকে শূন্যে ভাসিয়ে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে দল। এই ভালোবাসা বড্ড হৃদয় ছুঁয়ে গেছে বাটলারের, ‘এটা বলে যে তাদের সাফল্যে আমার একটু হলেও অবদান রয়েছে। সেই সহায়তা করতে পেরে আমি খুবই কৃতজ্ঞ ও বিনীত বোধ করছি।’

ফুটবলে কোচের সিদ্ধান্তই শেষ কথা। দলের মধ্যে তাই কোনো ইগো বা অহমিকা প্রশ্রয় দিতে রাজি নন বাংলাদেশ কোচ, ‘আমি একজন বিনয়ী মানুষ। যেসব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি, তা আমাকে শিখিয়েছে যে দলের মধ্যে সম্মান থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার দায়িত্ব হলো, ভালো একটা কাজের পরিবেশ তৈরি করা। খেলোয়াড়েরা আমার কাজের ধরনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে, যেখানে অহংকারের জায়গা নেই। আমরা জিতলেও বিনয়ী থাকি।’

মাস ছয়েক আগে বাটলারের বিরুদ্ধে অবস্থান ছিল মোসাম্মৎ সাগরিকার। আর দলে ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়েও ছিল অনিশ্চয়তা। সেই সাগরিকা এখন আলো ছড়াচ্ছেন বাটলারের কৌশলে খেলে। নেপালের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ৪ গোলই আসে তাঁর পা থেকে। ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়ে ওঠা ১৭ বছর বয়সী তরুণী অনেক দূর এগিয়ে যাবেন বলে বিশ্বাস বাটলারের, ‘মনোযোগী হয়ে শুনে যদি পা মাটিতে রাখে এবং বিনয়ী থাকে, তাহলে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, সে অনেক দূর যাবে। তার মধ্যে লড়াকু মানসিকতা রয়েছে, যদি সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তাহলে নিজের খেলায় তা বড় সম্পদ হয়ে উঠবে। এএফসিতে সে কেমন করে, সেটি দেখার অপেক্ষা।’

সাফে ১১ দিনের ব্যবধানে খেলতে হয়েছে ৬ ম্যাচ। এটি নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ হন বাটলার। আগামী ৬ আগস্ট লাওসে শুরু হবে অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাই। স্বাগতিক লাওস ছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পূর্ব তিমুর ও শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া। সেখানেও ম্যাচের মাঝখানে এক দিন করে বিরতি পাচ্ছে বাংলাদেশ। এমন পদ্ধতি এখন অনেকটা অভ্যস্ত হলেও নিজেদের জন্য খুব একটা সুবিধাজনক মনে করছেন না বাটলার, ‘আমরা এক ম্যাচ ধরে এগোব।’ এভাবে এগিয়ে বাটলার বাংলাদেশকে নিতে চান আরও একটি এশিয়ান কাপে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কৌশলে বিনিয়োগ সরাচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানি

বিমান বিধ্বস্ত: এক ঘণ্টা পর উদ্ধার হন পাইলট, তখনো বেঁচে ছিলেন

মোহাম্মদপুর থানায় ভুক্তভোগীকে হেনস্তা: চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার, ৩ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

‘ওসি হয়েও আমার কম দামি ফোন, দামি ফোন নিয়ে ঘুরলে ছিনতাই তো হবেই’, ভুক্তভোগীকে মোহাম্মদপুরের ওসি

রংপুরের ১০ কিমি সড়কে ৩৬৫ টন পাথর উধাও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত