Ajker Patrika

ড্রেসিংরুম থেকে মাঠে নামতেই ভয় ভয় লাগছিল

মোস্তাফিজুর রহমান
ড্রেসিংরুম থেকে মাঠে নামতেই ভয় ভয় লাগছিল

ঢাকা: এপ্রিল, ২০১৫। খুলনার হয়ে জাতীয় লিগের ম্যাচ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম তখন। সেখান থেকেই আমার ডাক পড়বে জাতীয় দলে–এমন কিছু ভাবনাতেও ছিল না। জাতীয় লিগে খেলা চলার সময় সতীর্থদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছিল, আমাদের ভেতর থেকে একজন জাতীয় দলে ডাক পাচ্ছেন। বিশ্বাস করুন, সেই একজন যে আমি–একবারও আমার মাথায় আসেনি। আমি ভেবেছি অন্য কেউ হয়তো। সেই নামটি যে আমার–তা জানতে পারি মধ্যাহ্নবিরতির পর। এক ওভার বোলিং করার পর হঠাৎ রাজ ভাই (আবদুর রাজ্জাক) বললেন, ‘তোর আর বোলিং করতে হবে না। তুই প্রস্তুত হ।’ তিনি আমাকে সেই সুসংবাদ দেন। পরে ম্যাচটা মাঝপথে রেখেই ঢাকার ফ্লাইট ধরি। এরপর তো পাকিস্তানের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টিতে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়ে গেল।

অভিষেকে আফ্রিদি ও হাফিজকে আউট করলাম। আফ্রিদির উইকেটটা পেয়ে খুব ভালো লেগেছিল। সে এত বড় তারকা। অভিষেকে তাঁকে আউট করতে পারা যেকোনো বোলারেরই স্বপ্ন। অভিষেকের আগে মজার একটা ঘটনা আছে। প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমে ঢোকার পরের কথা। ম্যাচের আগে অনুশীলনের জন্য ড্রেসিংরুম থেকে মাঠে নামব–তখন ভয় ভয় হচ্ছিল! একা মাঠে নামতে সাহস পাচ্ছিলাম না। একটু বেরিয়েও আবার ড্রেসিংরুমে ফিরে যাই। পরে রাজু (আবুল হাসান) ভাই এলেন। তাঁর সঙ্গে অনুশীলন করতে নামি। এরপর আর নার্ভাস হইনি। এখন মাঠে বরং দর্শক থাকলে খুব ভালো লাগে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টিতে ভালো করায় ডাক পড়ল ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও। বোলিংয়ে তখন আমার কিছু গোপন অস্ত্র ছিল, আর আমিও অচেনা ছিলাম। সেসব কাজে লাগিয়ে অভিষেকে ৫ উইকেট পেলাম। তবে আমার মনে হয়, আসলে বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি দলের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল বলেই বেশি আলোচিত হয়েছে। ওই ম্যাচেই আবার মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে আমার একটি ঘটনা ঘটল। পিচে ধোনির সঙ্গে ধাক্কা লাগল। ম্যাচে ঘটনাটা সেভাবে বুঝিনি। তবে ম্যাচ রেফারি (অ্যান্ডি পাইক্রফট) ডেকে পাঠালে একটু ভয় লাগছিল। ম্যাচ রেফারি বারবার শুনতে চাইলেন, কেন ওদিকে দাঁড়িয়েছি, আর কখনো এভাবে যেন না দাঁড়াই ইত্যাদি।

অভিষেকেই ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপ একাই ধসিয়ে দিয়েছিলেন মোস্তাফিজভারতের বিপক্ষে ভালো বোলিং করায় মোটামুটি আলোচনায় চলে এসেছি। সবাই চিনতে পারল আমাকে। তবে এটা আমার ব্যক্তিগত জীবনে খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি। ওই পারফরম্যান্সের আগে যে রকম ছিলাম, সেভাবেই থাকতে চেয়েছি। আমি হিরো হয়ে গেছি–এমন কোনো বিষয় আমার ভেতরে কাজ করেনি।

টেস্টের অভিষেকটাও আমার মন্দ নয়। টেস্টের অভিষেকটাও আমার কাছে খুব স্মরণীয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেকে ৪ উইকেট পেয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলাম। তবে আমলার উইকেটটা বেশিই স্পেশাল আমার কাছে। তাঁর মতো বড় ব্যাটসম্যানকে আউট করার স্মৃতিটা সারা জীবন মনে থাকবে। টেস্টে অবশ্য আমি দেশের কন্ডিশনেই বেশি সফল হয়েছি।

আল্লাহ চেয়েছিলেন বলেই তিন সংস্করণেই আমার অভিষেকটা হয়েছে মনে রাখার মতো। বিষয়টা আমি এভাবেই দেখি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাচার করা ৭৮১ কোটি টাকা ফেরত দিতে চেয়েও জামিন পেলেন না নাসার চেয়ারম্যান নজরুল

জীবন বিলিয়ে দিয়ে উত্তরার মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের বাঁচালেন, কে এই মাহরীন চৌধুরী

পাইলটের শেষ বার্তা: বিমান ভাসছে না, নিচে পড়ছে

মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীরাই ছিল ৩৭ বছরের মাসুকার ‘সংসার’, যুদ্ধবিমান তছনছ করে দিল

চোখের জলে পাইলট তৌকিরের বিদায়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত