Ajker Patrika

পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে ছিটকে পড়ল বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক
সেঞ্চুরির পর রাচিন রবীন্দ্রকে (বামে) টম ল্যাথামের অভিনন্দন। ছবি: এএফপি
সেঞ্চুরির পর রাচিন রবীন্দ্রকে (বামে) টম ল্যাথামের অভিনন্দন। ছবি: এএফপি

রাওয়ালপিন্ডির উইকেট ব্যাটারদের অপছন্দ হওয়ার কারণ নেই। কিন্তু দলটা যখন বাংলাদেশ, তখন কথাটা ‘যদি’, ‘কিন্তু’ নিয়েই বলতে হয়। ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশ দলের কোচ ফিল সিমন্স জানিয়েছিলেন, তিন শর বেশি রান করার সামর্থ্যের কথা। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে সেই ব্যাটিং ধসের সেই পুরোনো চিত্র। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০০ তো দূরের কথা, টেনেটুনে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৩৬ রানেই থামতে হয় বাংলাদেশকে। রাচিন রবীন্দ্রর সেঞ্চুরির সুবাদে বাংলাদেশের রান ২৩ বল ৫ উইকেট হাতে রেখেই টপকে যায় নিউজিল্যান্ড। ৫ উইকেটের জয়ে ‘এ’ গ্রুপ থেকে ভারতের সঙ্গে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে নিউজিল্যান্ডেরও। আর পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ।

বড় রান না হওয়ায় বাংলাদেশ বোলারদের জন্য কাজ আরও কঠিন হয়ে পড়ে। তবু শুরুতে কিউইদের ভিত ঠিকই নাড়িয়ে দেন তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানা। প্রথম ওভারের শেষ বলে দারুণ এক ডেলিভারিতে উইল ইয়ংয়ের (০) স্টাম্প ছত্রখান করে ফেলেন তাসকিন। আর নিজের দ্বিতীয় ওভারেই কেন উইলিয়ামসনের ফেরান প্রতিশ্রুতিশীল পেসার নাহিদ রানা। অফ স্টাম্পের বাইরে ঘণ্টায় প্রায় ১৪৯ কিলোমিটার গতির বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে পরাস্ত হন উইলিয়ামসন (৫)। তাই উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিম ক্যাচ দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না তাঁর!

শুরুর জোড়া ধাক্কার চাপ কাটিয়ে উঠতে ডেভন কনওয়েকে নিয়ে হাল ধরেন রাচিন রবীন্দ্র। তৃতীয় উইকেটে ৫৭ রানের জুটি গড়েন তাঁরা। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে বোল্ড হয়ে অবশ্য ৩০ রানে ফিরে যান কনওয়ে। কিন্তু টম ল্যাথামকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে ১২৯ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান রাচিন। ৭৬ বলে ৫৫ রান করে অধিনায়ক ল্যাথাম আউট হয়ে গেলেও সেঞ্চুরি করেন রাচিন। ৯৪ বলে রানের তিন অঙ্ক ছুঁয়ে রিশাদ হোসেনের শিকার হওয়ার আগে ১১২ রান করেন তিনি। তাঁর ১০৫ বলের ইনিংসটিতে আছে ১২টি চার ও ১টি ছয়। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরির পথে ওয়ানডেতে এক হাজার রানের মাইলফলকও ছুঁয়েছেন রাচিন। পরে গ্লেন ফিলিপস (২১) ও ব্রেসওয়েল (১১) দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।

এর আগে রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় নিউজিল্যান্ড। ভারতের বিপক্ষে না খেলা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও নাহিদ রানা একাদশে ফেরেন এই ম্যাচে। সে জন্য অবশ্য সরে যেতে হয় সৌম্য সরকার ও তানজিম হাসান সাকিবকে। সৌম্য না থাকায় ওপেনিংয়ে তানজিদ হাসানের জুটি হন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনের শুরুটা ছিল ঠিকঠাক। কিন্তু পাওয়ার প্লেতে বিপদ আসন্ন ছিল, আর সেটাই হলো। নিজের প্রথম ওভারেই তানজিদকে কেন উইলিয়ামসনের ক্যাচ বানান মাইকেল ব্রেসওয়েল। ২৪ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২৪ রানেই সাজঘরে ফেরেন তানজিদ।

ব্রেকথ্রু এনে দেওয়া ব্রেসওয়েলকে আর থামাননি কিউই অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। এক স্পেলেই করিয়েছেন টানা ১০ ওভার। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান ব্রেসওয়েল দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামিয়ে। তানজিদের পর ঘূর্ণিতে একে একে তিনি ফিরিয়েছেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান তাওহীদ হৃদয় (৭), মুশফিকুর রহিম (২) ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে (৪)। ১০ ওভারে ৪ উইকেট নেওয়ার বিপরীতে শুধু ২৬ রান খরচ করেছেন।

ব্যাটিং ব্যর্থতা ঢাকতে খুব চেষ্টা করেছিলেন শান্ত। কিন্তু যোগ্য সঙ্গী হিসেবে কাউকে পাননি তিনি। ক্যারিয়ারের দশম ফিফটি তুলে নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক থামেন ১১০ বলে ৯ চারে ৭৭ রান করে। এরপর জাকের আলীর ৫৫ বলে ৪৫ রানে কোনোমতে ২০০ পেরোয় বাংলাদেশ। রিশাদ হোসেনও খেলেন ২৬ রানের ক্যামিও ইনিংস।

ব্রেসওয়েলের পর কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নেন উইলিয়াম ও’রুর্কি। এ ছাড়া একটি করে শিকার ম্যাট হেনরি ও কাইল জেমিসনের।

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৩৬/৯।

নিউজিল্যান্ড: ৪৬.১ ওভারে ২৪০/৫।

ফল: নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত