Ajker Patrika

বিসিবিতে আবারও দুদক, কী খুঁজছে তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৭ মে ২০২৫, ১৮: ৩৭
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) দুদকের অনুসন্ধান দল। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) দুদকের অনুসন্ধান দল। ছবি: আজকের পত্রিকা

এক মাসের ব্যবধানে ফের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) হাজির হলো দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি চার সদস্যের অনুসন্ধান দল। এবার তাদের নজরে রয়েছে বিসিবির গঠনতন্ত্র সংশোধন, তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগের দল বাছাই প্রক্রিয়া এবং বোর্ডের ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর) ভেঙে অর্থ স্থানান্তরের স্বচ্ছতা।

দলের নেতৃত্বে থাকা দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ আজ বিকেলে বিসিবি কার্যালয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রমের ফাঁকে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিভিন্ন দপ্তর থেকে রেকর্ড সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করেছি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এখনো পুরো অনুসন্ধান শেষ হয়নি—কয়েকটি বিষয় বাকি রয়েছে।’

বিসিবিতে দুদকের সাম্প্রতিক অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগে দল অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়ায় গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে আনা পরিবর্তন ও সম্ভাব্য অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখা। দুদক কর্মকর্তা রাজু আহমেদ বলেন, ‘আগে যেখানে তুলনামূলক সহজ নিয়মে দল অন্তর্ভুক্তির সুযোগ ছিল, সেখানে ২০২২ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে বাছাই প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলা হয়। এর ফলে কিছু নির্দিষ্ট দল বিশেষ সুবিধা পেলেও অনেক দল বঞ্চিত হয়েছে। এই অনিয়মের প্রভাব পড়েছে জাতীয় দলের সম্ভাব্য ক্রিকেটার তৈরির পাইপলাইনে, যা সংকুচিত হয়ে পড়েছে।’

তার ভাষায়, ‘বর্তমানে এমন কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যা অনেক সম্ভাবনাময় দল ও ক্রিকেটারের পথ রুদ্ধ করছে। বিষয়গুলো আমরা যাচাই করছি। পর্যালোচনা না করে কারও নাম প্রকাশ করা হবে না।’

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর বোর্ডের একাধিক এফডিআর ভেঙে নতুন করে কয়েকটি ব্যাংকে অর্থ পুনঃবিনিয়োগ করা হয়। এই প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তা নিয়ে দুদকের এ সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ বলেন, ‘কীভাবে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে, কারা এতে স্বাক্ষর করেছেন, এসব বিষয়ে বিসিবির গঠনতন্ত্র কী বলে—তা বিশ্লেষণ করা হবে। তারা বলছেন (বিসিবি) নিরাপদ তিন ধরনের ব্যাংকে অর্থ রাখা হয়েছে। এই যুক্তি কতটা গ্রহণযোগ্য, সেটিও আমরা যাচাই করব।’

বিসিবির তালিকাভুক্ত ৬৯টি প্রতিষ্ঠানের বাইরে নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ নিয়েও খোঁজ নিচ্ছে দুদক। যদিও টেন্ডার প্রক্রিয়া এই অনুসন্ধানের মূল অংশ নয়, তবে ভবিষ্যতে তা নিয়েও তদন্ত হতে পারে। দুদক কর্মকর্তা বলেন, ‘টেন্ডার অবশ্যই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত। আজকের অনুসন্ধান অন্য বিষয়ে হলেও পুরোনো অভিযোগগুলোও বিবেচনায় থাকবে।’

দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া সংস্থা বিসিবিকে দুর্নীতিমুক্ত রাখার ব্যাপারে দুদক দৃঢ় অবস্থানে থাকবে বলে জানান দুদক কর্মকর্তা, ‘আমরা চাই বিসিবি আরও স্বচ্ছ, সুগঠিত এবং আন্তর্জাতিক মানের একটি সংগঠন হোক, যেখান থেকে মানসম্পন্ন ক্রিকেটার উঠে আসবে, দেশের সম্মান বাড়বে। যেসব ব্যক্তি অনিয়মে জড়িত, তাদের আমরা আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চাই—যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্বলতা আর না ঘটে।’

দুদকের অনুসন্ধানের মধ্যেই হঠাৎ বিসিবি কার্যালয়ে আসেন বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ, প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ও অর্থ বিভাগের প্রধান আব্দুল মান্নান। তবে তারা কেউই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত