Ajker Patrika

তামিমদের রানক্ষুধা আর কবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
তামিমদের রানক্ষুধা আর কবে

ঢাকা: চতুর্থ দিনের খেলা শেষে দিমুথ করুনারত্নের মুখে চওড়া হাসি দেখে তামিম ইকবাল কি ভাবছিলেন? হয়তো আফসোসই করছিলেন। বাংলাদেশকে পেয়ে করুনারত্নে রানের উৎসব করছেন। রান পেয়েছেন তামিমও। কিন্তু চার ইনিংসের তিনটিই তাঁর শেষ হয়েছে বড় আফসোস জাগিয়ে।

সিরিজে তিন ইনিংসে করুনারত্নে ১৪২.৬৭ গড়ে করেছেন ৪২৮ রান। মনের সুখ মিটিয়ে রান করার আদর্শ এক উদাহরণ বটে। সিরিজের দ্বিতীয় সেরা ব্যাটসম্যান অবশ্য তামিম—চার ইনিংসে ৯৩.৩৩ গড়ে করেছেন ২৮০ রান। পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ ওপেনারকে ভালো নম্বরই দিতে হবে। কিন্তু যখন দেখা যাবে তামিম চার ইনিংসের দুটিতেই আউট হয়েছেন নড়বড়ে নব্বইয়ে—একটিও সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারেননি। দলের স্কোরটা বড় করতে যখন তাঁকে আরও বেশি প্রয়োজন ছিল, তখনই ফিরে এসেছেন হতাশ করে। করুনারত্নের সঙ্গে এখানেই পার্থক্যটা হয়েছে তামিমদের।

যত রান পেয়েছেন করুনারত্নের রানক্ষুধা যেন ততই বেড়েছে! ফিফটিকে তিন অঙ্কে রূপ দিয়েছেন। সেঞ্চুরিকে রূপ দিয়েছেন ডাবলে। সেখানে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা থিতু হয়ে উইকেট দিয়ে এসেছেন। একটি সেঞ্চুরি কিংবা ফিফটিতেই ‘সন্তুষ্ট’ থেকেছেন।

পাল্লেকেলেতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসের কথাই ধরা যাক। টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৬তম ফিফটিকে ১১তম সেঞ্চুরিতে পরিণত করেন করুনারত্নে। একই সঙ্গে দলের স্কোরকেও নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। সেখানে প্রথম ইনিংসে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আউট হয়ে ফিরেছেন তামিম। সাবলীল ৯২ রানের ইনিংসটার সমাপ্তি ঘটে দ্বিধাদ্বন্দ্বে এক শট খেলে। তামিমের আউটের পরেই খেই হারিয়েছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে পাওয়া সাত ফিফটির একটিও সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে না পারা যেন তামিমের টেস্ট ক্যারিয়ারের ছবিটাই তুলে ধরছে। এই সিরিজে দুবার, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এ নিয়ে পাঁচবার ফিরলেন নার্ভাস নাইন্টিজে কাটা পড়েছেন। টেস্টে সর্বশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ২০১৯ সালের মার্চে। তিন অঙ্কের আফসোসটা বাড়িয়েই চলেছেন তামিম। প্রায় ১৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৪০টি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংসের মাত্র ৯টি সেঞ্চুরিতে রূপান্তর করতে পেরেছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। একজন ওপেনারের ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে রূপ দেওয়ার ব্যর্থতায় দলও নিয়মিত পাচ্ছে না বড় স্কোর।

তামিম বড় ইনিংস খেলতে না পারার আফসোসে পুড়লেও মুমিনুল হক আর নাজমুল হোসেনের তো সেটি হওয়ার কথা নয়। পাল্লেকেলেতে সিরিজের প্রথম টেস্টে দুজনই পেয়েছেন সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় টেস্টে করুনারত্নেরা যেখানে সেটির ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ‘অনেক হয়েছে’ ভেবে ব্যর্থ মনোরথে ফিরেছেন! নাজমুল প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে ফেরার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬ রানের বেশি করতে পারেননি। মুমিনুল প্রথম ইনিংসে ফিফটি থেকে এক রান দূরে থেকে ফিরেছেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও ফিরেছেন সেট হয়ে (৩৬)। ওপেনার সাইফ হাসানের তো ‘শিক্ষাসফর’ হয়েই কাটল সিরিজটা।

‘প্রিয়’ প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা পেয়ে বড় একটা ইনিংস খেলা হয়নি মুশফিকুর রহিমেরও। লিটন দাসের কাছে একটা দ্যুতিময় ইনিংস পাওনা হয়ে গেছে সেই কবেই।

শ্রীলঙ্কানরা যেখানে সিরিজের প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত খেলার পরও দ্বিতীয় টেস্টে আরও ভালো করার তাগিদে খেলেছেন, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সেখানে রানক্ষুধা যেন অনেকটা মিটে গেছে প্রথম টেস্টে ভালো করেই।

পাল্লেকেলে টেস্ট কোন দিকে যাচ্ছে, কালই হয়তো অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। আজ ম্যাচের ফল যেটাই হোক, বাংলাদেশকে পেয়ে করুনারত্নে যেভাবে ইচ্ছেমতো রান উৎসব করেছেন, এ দেখে ভবিষ্যতে মুমিনুলদের রানক্ষুধাটা যদি বাড়ে!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনে এনসিপির শীর্ষ ৫ নেতা হঠাৎ কক্সবাজারে কেন

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন চাননি সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদ

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে চূড়ান্ত বৈঠক করল শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন সংসদীয় কমিটি

ছাত্র-জনতার মিছিলের মুখে পড়েন এক মন্ত্রী

কক্সবাজারে পিটার হাসের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের বৈঠকের খবর, ‘গুজব’ বললেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত