স্পিনে শাণ দিয়ে বাংলাদেশে আসছে নিউজিল্যান্ড

সাত বছর পর বাংলাদেশ সফরে আসছে নিউজিল্যান্ড দল। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে আজ দুপুর ১২টায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় এসে পৌঁছানোর কথা কিউইদের। নিউজিল্যান্ড সর্বশেষ বাংলাদেশে এসেছিল ২০১৪ সালের মার্চে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে। আর বাংলাদেশের মাঠে সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেছে তারা ২০১৩ সালের নভেম্বরে।

নিয়ম অনুযায়ী ঢাকায় এসেই রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের বায়ো-বাবলে ঢুকে যাবে কিউইরা। একই হোটেলে থাকছে বাংলাদেশ দল ও ম্যাচ অফিশিয়ালরা। বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে আগেই ঢাকায় এসেছে নিউজিল্যান্ড দলের তিন সদস্যের পর্যবেক্ষক দল। ম্যানেজার মাইক স্যান্ডল, কোভিড কর্মকতা অ্যান্ড্রু লাভ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক টেরি মিনিশের পর্যবেক্ষণে নেতিবাচক কিছু নেই বলেই খবর। আর নিউজিল্যান্ড দলের দুই ক্রিকেটার কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ও ফিন অ্যালেন গত ২০ আগস্ট বাংলাদেশে এসে টিম হোটেলে কোয়ারেন্টিনে আছেন।

ইংল্যান্ডে দ্য হানড্রেড টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েছিলেন তাঁরা। করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নিউজিল্যান্ড সরকার নতুন করে লকডাউন দেওয়ায় তাঁরা আর দেশে ফিরে যাননি। ইংল্যান্ড থেকে একটু আগেই বাংলাদেশে চলে এসেছেন দুই কিউই ক্রিকেটার।

ডি গ্র্যান্ডহোম-অ্যালেন দ্য হান্ড্রেড খেলে প্রস্তুতি সারলেও পুরো নিউজিল্যান্ড দল নিজেদের তৈরি করেছে ক্রাইস্টচার্চের লিংকনের দুই সপ্তাহের অনুশীলন ক্যাম্পে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা কিউই দলের কেউই বাংলাদেশ সফরে না থাকলেও টম লাথাম, হেনরি নিকোলস, কলিন ডি গ্রান্ডহোম, হামিশ বেনেট নামগুলো বলছে, দ্বিতীয় সারির এই নিউজিল্যান্ড দলকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই বাংলাদেশের।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ কী কন্ডিশন–উইকেটে খেলেছে, ভালোই জানা নিউজিল্যান্ডের। এই সিরিজটাও মিরপুরে মন্থর আর ঘূর্ণি উইকেটে হবে কি না, সেটি জানা যাবে আরও পরে। তবে ঘূর্ণি উইকেটের কথা ভেবেই কি না দলে তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনার রেখেছে নিউজিল্যান্ড। ঢাকায় রওনা দেওয়ার আগে কিউই বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেল বলেছেন, বাংলাদেশের কন্ডিশন নিয়ে ভালোভাবেই হোমওয়ার্ক করে আসছেন তাঁরা, ‘উপমহাদেশের কন্ডিশন নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং। জানি, নিজেদের মাঠে তারা অনেক শক্তিশালী। ভিন্ন একটা কন্ডিশনে খেলতে হবে আমাদের। স্পিনার হিসেবে এমন কন্ডিশনে খেলার জন্য সবাই উন্মুখ হয়ে থাকে। এমন কন্ডিশনে খেলব, যেখানে স্পিনাররা যথেষ্ট সহায়তা পাবে। স্পিনারদের জন্য এটা বড় সুযোগ।’ 
বাংলাদেশের কন্ডিশন ভাবনায় রেখে লিংকনের বিশেষ উইকেটে অনুশীলন করেছে নিউজিল্যান্ড। নিজেদের প্রস্তুতি নিয়ে অফ স্পিনার কোল ম্যাকনকি বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের বেশ কিছু ভিডিও দেখেছি। একটা ধারণা হয়েছে কন্ডিশন কেমন হতে পারে। লিংকনে আমাদের যে কদিন অনুশীলন হয়েছে, সেটা উপকারে আসার কথা। মাঠকর্মীরা আমাদের জন্য যে উইকেট তৈরি করে দিয়েছে, সেটা আমাদের অনেক সহায়তা করবে বলে মনে হয়।’

অস্ট্রেলিয়া সিরিজ শেষে বাংলাদেশ দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড় ছুটিতে ছিলেন। মুশফিক-লিটনের মতো কয়েকজন অবশ্য ব্যক্তিগত অনুশীলন করেছেন কোচদের অধীনে। ছুটি শেষে ক্রিকেটাররা এখন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। আজ দলের সবাই ঢুকে পড়বেন বায়ো-বাবলে। হোটেলে তিন দিনের রুম কোয়ারেন্টিনে শেষে নেমে পড়বেন মাঠে।

গত এপ্রিলে নিউজিল্যান্ডের মাঠে কিউইদের কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছিল বাংলাদেশ। এবারে ঘরের মাঠে সেই জ্বালা জুড়ানোর পালা মাহমুদউল্লাহদের। সেটি করতে জিম্বাবুয়ে-অস্ট্রেলিয়াকে বিধ্বস্ত করার আত্মবিশ্বাস তো আছেই, গত ১১ বছরে দেশের মাঠে কিউইদের বিপক্ষে সাদা বলের ক্রিকেটে ৮ ম্যাচের ৭টিতেই জয়ের রেকর্ডও অনুপ্রাণিত করবে বাংলাদেশকে।