Ajker Patrika

ইংল্যান্ডের ‘বাজবলে’ আবারও হার ভারতের

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২৫ জুন ২০২৫, ০০: ৫৩
হেডিংলিতে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়ছেন জো রুট ও জেমি স্মিথ। ছবি: এএফপি
হেডিংলিতে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়ছেন জো রুট ও জেমি স্মিথ। ছবি: এএফপি

রোমাঞ্চের মঞ্চটা তৈরি হয়েছিল আগের দিনই। চতুর্থ ইনিংসে ৩৭১ রানের লক্ষ্য পাওয়ার পর শেষ দিনে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৩৫০ রান। ভারতের ১০ উইকেট। তবে শেষ দিনে কতটা রোমাঞ্চ ছড়াবে, সেটা নির্ভর করছিল ইংল্যান্ড জয়ের জন্য না ড্রয়ের জন্য খেলবে, সেটার ওপর। শেষ দিনে হেডিংলিতে জয়ের জন্যই খেলেছে ইংল্যান্ড।

আর তাতেই উত্তেজনাপূর্ণ সমাপ্তির দিকে এগিয়েছে ইংল্যান্ড-ভারতের প্রথম টেস্ট। রোমাঞ্চের রেণু ছড়িয়ে শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড জিতেছে ৫ উইকেটে। হেডিংলি টেস্টের প্রথম চার দিনই জয়ের সম্ভাবনায় ইংল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে থেকেছে ভারত। কিন্তু শেষ দিনে ইংল্যান্ডের ‘বাজবল’ ক্রিকেটের কাছে আর পেরে ওঠেনি ভারত। কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের মস্তিষ্কপ্রসূত বাজবল ক্রিকেট খেলা শুরুর পর এটি ইংল্যান্ডের স্মরণীয় এক জয়। অবশ্য ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে এটাই জয়ের রেকর্ড নয় ইংল্যান্ডের। এর আগে ২০২২ সালে বার্মিংহামে চতুর্থ ইনিংসে ৩৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল বাজবল ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলা ইংল্যান্ড।

হেডিংলিতেও এটি সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নয়। এর আগে এই ভেন্যুতে ৪০৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ছিল অস্ট্রেলিয়ার। ১৯৮৪ সালে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের হার না মানা ১৭৩ এবং আর্থার মরিসের ১৮২ রানের ইনিংসের সুবাদে ৩ উইকেট খুইয়েই জিতে গিয়েছিল।

ইংল্যান্ডের দুর্দান্ত এই জয়ের ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট। ওপেনিং জুটিতে ১৮৮ রানের জুটি গড়েছিলেন তাঁরা। ফিফটি ছুঁয়ে ক্রলি ৬৫ রান করে আউট হয়ে গেলেও দেখেশুনে খেলতে থাকেন ডাকেট। ভারতীয় বোলারদের হতাশা বাড়িয়ে একসময় রানের তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলেন। দলীয় ২৫৩ রানে তিনি যখন আউট হলেন, তখন তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ১৪৯ রান। ১৭০ বলে খেলা তাঁর এই ইনিংসে আছে ২১টি চার ও ১টি ছয়। ১৫ বছরের বেশি সময় পর টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ইংল্যান্ডের হয়ে এটি প্রথম সেঞ্চুরি।

সেঞ্চুরির ঠিক আগে অবশ্য একবার ‘জীবন’ পেয়েছিলেন ডাকেট। মোহাম্মদ সিরাজকে পুল শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। বাউন্ডারি লাইন থেকে দৌড়ে এসে হাতের নাগালের মধ্যে পেয়েও বল তালুবন্দী করতে পারেননি জয়সওয়াল।

ডাকেটের আউট হওয়ার পররে বলেই রানের খাতা না খুলে আউট হয়ে যান হ্যারি ব্রুকও। পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে বোলার শার্দুল ঠাকুর উজ্জীবিত করেছিলেন ভারত শিবিরকে। কিন্তু অনেক বিপদেই ব্যাট হাতে ইংল্যান্ডের ত্রাতা হয়ে ওঠা জো রুট এক প্রান্ত আগলে রেখে দেখেশুনে খেলতে থাকেন। তাঁকে প্রথম সাহচর্য দেন অধিনায়ক বেন স্টোকস (৩৩) ও পরে জেমি স্মিথ। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে রুট-স্মিথের ৮৮ বলে ৭১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয় সুনিশ্চিত করে ইংল্যান্ড। ফিফটি ছুঁয়ে রুট অপরাজিত থাকেন ৫৩ রানে। জেমি স্মিথ করেন ৪৪*। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই পেসার শার্দুল ঠাকুর ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা। বাকি উইকেটটি বরীন্দ্র জাদেজার।

ইংল্যান্ডের এই জয়ে ভারতীয় দলের সব সদস্যই হতাশ হয়েছেন। তবে একটু বেশিই বোধ হয় জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের পর ইতিহাসের দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে একই টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির কীর্তি গড়া ঋষভ পন্ত। এই কীর্তি গড়ে দলকে তো জেতাতে পারেননি, উল্টো ম্যাচে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে তিরস্কৃত হয়েছেন। পেয়েছেন একটি ডিমেরিট পয়েন্টও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত