Ajker Patrika

ভারতের সঙ্গে রেল চলাচল চুক্তি সার্বভৌমত্ববিরোধী চক্রান্ত: এবি পার্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৫ জুন ২০২৪, ১৬: ৫০
Thumbnail image

দেশের জনগণকে না জানিয়ে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের ওপর দিয়ে ভারতের সঙ্গে ট্রেন চলাচলের চুক্তিকে সার্বভৌমত্ববিরোধী চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। 

গতকাল সোমবার রাজধানীর বিজয়নগরস্থ দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস বিফ্রিংয়ে এবি পার্টির নেতারা এসব কথা বলেন। 

এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন। দলটির সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, কেন্দ্রীয় নেতা লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ। 

এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার যে অন্যায় চুক্তি করেছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করি, নিজেদের আত্মমর্যাদা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করি।’ 

এ সময় তিনি পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে টেনে বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের কতিপয় কর্মচারী কীভাবে এত পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছে, তা দেশের মানুষের জানার অধিকার আছে, এই জবাব জনগণকে দিতে হবে। আমি বুঝতে পারি না পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন মতো একটি সংগঠন দুর্নীতিবাজদের পক্ষ নিয়ে কেন বিবৃতি প্রদান করল। যারা ক্ষমতার দাপটে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে তদন্তের কারণে তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কথা, কিন্তু পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন কেন আতঙ্কিত হচ্ছে, আমরা তা জানতে চাই।’ 

প্রেস ব্রিফিংয়ে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে ভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো চুক্তি হলে তা সংসদে তুলে ধরতে হবে। সংসদে কেউ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করছে না। ব্লু ইকোনমির নামে বাংলাদেশের সম্পদ ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণকে অন্ধকারে রেখে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে যে গণবিরোধী চুক্তি সরকার করেছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই।’ 

‘ভারতের সঙ্গে এসব চুক্তির ফলে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়েছে কি না নাগরিক হিসেবে এই দেশের জনগণ তা জানতে চায়। এ ছাড়া স্পর্শকাতর তথ্যবিনিময়ের যে চুক্তি হয়েছে সে সম্পর্ক জনগণকে অবহিত করতে হবে। এই দেশ কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়।’ যোগ করেন এবি পার্টির এই যুগ্ম আহ্বায়ক। 

দলটির সম্প্রতি যোগ দেওয়া কেন্দ্রীয় সদস্য লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম বলেন, ‘ভারতকে ট্রানজিট দেওয়া ও ট্রেন চলাচলের সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের কী লাভ বা স্বার্থ তা পরিষ্কার করতে হবে। নদীর পানি প্রবাহের আন্তর্জাতিক আইন কখনোই ভারত মানেনি। আমাদের নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আমাদের অধিকার। এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে নিয়ে এবি পার্টি আন্দোলন গড়ে তুলবে।’ 

প্রেস বিফ্রিংয়ে বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকামেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, ‘এই সরকার ভারতের সঙ্গে অবৈধ প্রেমে মত্ত। তারা জনগণের সামনে চুক্তি নিয়ে পরিষ্কার করে গলা উঁচিয়ে কথা বলতে পারে না। তারা গোপনে লুকিয়ে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি করেছে। স্বাধীনতা–পরবর্তী সময় থেকে ভারত-বাংলাদেশ যত চুক্তি হয়েছে, কোনোটাই ভারত বাস্তবায়ন করেনি। আমরা বেরুবাড়ি দিয়ে দিলাম, কিন্তু আঙ্গোরপোতা পেতে বছরের পর বছর ঘুরতে হয়েছে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বি এম নাজমুল হক, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী নাসির, উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ কবির, সদস্যসচিব সেলিম খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহীনুর আক্তার শীলা, রুনা হোসাইন, মশিউর রহমান মিলু, শরন চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত